আগরতলা, ২ মে (হিঃসঃ)৷৷ করোনা মহামারির প্রকোপেও ভারত-বাংলাদেশ দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্যিক সম্পর্কের সম্প্রীতি বজায় রাখা হয়েছে৷ একই সাথে সংক্রমণ ছড়ানো আটকাতে দক্ষিণ অসমের করিমগঞ্জ জেলার সুতারকান্দি স্থলবন্দর দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে৷ জিরো পয়েন্টে দুই দেশের পণ্যবাহী গাড়ি দাঁড় করিয়ে পণ্য নামানো হচ্ছে৷ সুতারকান্দির অনুকরণেই পেট্রাপোল স্থলবন্দরে দীর্ঘদিনের জট খুলেছে৷ সেখানেও একইভাবে বাংলাদেশে পণ্য আমদানি-রফতানি সম্প্রতি শুরু হয়েছেঊ পিছিয়ে নেই ত্রিপুরাও৷ শ্রীমন্তপুর স্থলবন্দর দিয়ে এখন এভাবেই পণ্য রফতানি করা হচ্ছে৷ তাতে দেখা যাচ্ছে, সুতারকান্দি স্থলবন্দরের সারা দেশেই অনুকরণ হচ্ছে৷
এ-বিষয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের জনৈক পদস্থ আধিকারিক বলেন, করোনা প্রকোপের মধ্যেও বাংলাদেশের সাথে বাণিজ্যিক আদান-প্রদানে কোনও প্রভাব পড়তে দেওয়া হয়নি৷ তাঁর কথায়, লকডাউন ঘোষণার পর থেকে সুতারকান্দি স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশে পণ্য আমদানি-রফতানি করার জনা বিশেষ পদ্ধতি অনুসরণ করা হয়েছে৷ তিনি বলেন, জিরো পয়েন্টে দুই দেশের গাড়ি দাঁড় করানো হয়৷ তার পর দুই গাড়ির চালকরা বেরিয়ে যান৷ যে দেশ পণ্য আমদানি করবে সেই দেশের শ্রমিকরা গাড়ি থেকে পণ্য নামিয়ে আনেন৷ তার পর দুটি গাড়িই স্যানিটাইজ করা হয়ঊ তাঁর দাবি, লকডাউনের সমস্ত নিয়ম এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে স্থলবন্দর দিয়ে আমদানি-রফতানি চালু রাখা হয়েছে৷ তাঁর কথায়, তিনদিন আগে করিমগঞ্জের সুতারকান্দি স্থলবন্দর দিয়ে আদা রফতানি হয়েছে৷ তেমনি বিসুকট সহ দুই গাড়ি বিভিন্ন প্রয়োজনীয় সামগ্রী বাংলাদেশ থেকে ভারতে এসেছে৷
সুতারকান্দি স্থলবন্দরের ওই ফর্মুলা ত্রিপুরায়ও প্রয়োগ করা হয়েছে৷ সিপাহিজলার জেলাশাসক চন্দন কুমার জমাতিয়া বলেন, সম্প্রতি ত্রিপুরা সরকারের শিল্প ও বাণিজ্য দফতরের নির্দেশিকায় বাংলাদেশে পণ্য রফতানির ক্ষেত্রে জিরো পয়েন্টে গাড়ি দাঁড় করাতে হবে৷ তার পর দুই দেশের গাড়ি থেকে পণ্য ওঠা-নামা করতে পারবে৷ তাই, গতকাল বিএসএফের পদস্থ আধিকারিক এবং মহকুমাশাসকের সাথে আলোচনার মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে রফতনির পদ্ধতি স্থির করা হয়েছে৷ তিনি বলেন, এখন থেকে শ্রীমন্তপুর স্থলবন্দর দিয়ে পণ্য রফতানিতে জিরো পয়েন্টে গাড়ি দাঁড়াবে৷ তবে আমদানির ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট স্থানেই গাড়ি ঢুকবে৷ কিন্তু গাড়ির চালক নামতে পারবেন নাঊ তাছাড়া, বাংলাদেশের পণ্যবাহী গাড়ি স্যানিটাইজ করার পর ত্রিপুরায় ঢুকতে দেওয়া হবে, বলেন তিনি৷
প্রসঙ্গত, সুতারকান্দি স্থলবন্দরের ওই পদ্ধতি পেট্রাপোল স্থলবন্দরও অনুসরণ করেছে৷ পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নির্দেশ দিয়েছিলেন, বাংলাদেশে কোনও ট্রাক পণ্য নিয়ে গেলে ওই গাড়ির চালক ও সহ-চালককে ১৪ দিন কোয়ারেন্টাইন থাকতে হবে৷ ফলে প্রচুর গাড়ি পেট্রাপোল স্থলবন্দরে আটকে পড়েছিল৷ সম্প্রতি জিরো পয়েন্টে দুই দেশের গাড়ি দাঁড় করে পণ্য আমদানি-রফতানির কাজ চলছে৷ তাতে দীর্ঘদিনের ওই জট খুলে গেছে৷