নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ২৬ এপ্রিল৷৷ সংকট কিংবা দুর্যোগ চিরস্থায়ী নয়৷ তাই লকডাউন পরবর্তী সময়ে ত্রিপুরার আর্থিক স্থিতিকে চাঙ্গা করার জন্য সবার সহযোগিতা চেয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব৷ প্রাথমিক ক্ষেত্রের উপর গুরুত্ব দিয়ে রাজ্যের লোকসানকে পূরণ করার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি৷
রবিবার এক ভিডিও বার্তায় মুখ্যমন্ত্রী বলেন, যাবতীয় বাধা অতিক্রম করে ত্রিপুরাকে সফলতার মুখ দেখতেই হবে৷ মূলত, করোনা-র প্রকোপে সর্বক্ষেত্রে যে অচলাবস্থা দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে তা থেকে উত্তরণে দিশা দেখাতে চাইছেন তিনি৷ এদিন ত্রিপুরার অর্থনৈতিক স্থিতিকে উন্নীত করার লক্ষ্যে মুখ্যমন্ত্রী প্রাথমিক ক্ষেত্রগুলিতে উৎপাদন বৃদ্ধির উপর জোর দেন৷ তিনি বলেন, লক্ষ্যমাত্রাকে এগিয়ে আনলেই রাজ্যের অর্থনীতি দ্রুত চাঙ্গা হয়ে উঠবে৷ এক্ষেত্রে মুখ্যমন্ত্রী পোল্ট্রি, পশুপালন, দুগ্দ উৎপাদন, উদ্যান চাষ, ফুল চাষ, কৃষি ক্ষেত্র এবং মৎস্য উৎপাদনের মাধ্যমে প্রাথমিক অর্থনৈতিক অবস্থানকে শক্ত করার পরামর্শ দেন৷ এক্ষেত্রে সরকার সবার সাহায্যে যাবতীয় ব্যাবস্থা রেখেছে৷ রয়েছে ঋণের ব্যবস্থাও, আশ্বস্ত করেন তিনি৷
মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেব বলেন, লকডাউনের ফলে রাজ্যের বড় আয়ের উৎসে আঘাত লেগেছে৷ তা হল রবার উৎপাদন৷ কারণ বাইরের রবার শিল্প বন্ধ হয়ে রয়েছে৷ এর ফলে শুধুমাত্র এই সময়ের মধ্যেই রাজ্যের প্রায় আড়াইশো কোটি টাকা লোকসান হয়েছে৷ তাঁর দাবি, এই রবার থেকে রাজ্যের বাৎসরিক আয় দেড় হাজার কোটি টাকা৷ তিনি বলেন, এই লোকসানকে কাটিয়ে ওঠার জন্য প্রাথমিক ক্ষেত্রগুলিতে উৎপাদনে জোর দিতে হবে৷ মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, এক্ষেত্রে কিছু বাধা আসতে পারে৷ সেগুলো অতিক্রম করে সফলতার মুখ দেখতে হবে৷
তিনি বলেন, সংকট ব াদুর্যোগে, কোনও কিছুই চিরস্থায়ী হয় না৷ স্থায়ীভাবে স্বাভাবিক স্থিতিতে নিয়ে আসার জন্য সবাইকে জোটবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে৷ সবাইকে মুষ্টিবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী৷ এদিন তাঁর প্রকাশিত ভিডিও বার্তায় মুখ্যমন্ত্রী আরও উল্লেখ করেন, শহরাঞ্চলে শুধুমাত্র সিঙ্গল দোকান এবং গ্রামাঞ্চলে বাজার খোলার জন্য অনুমতি দেওয়া হয়েছে৷ এক্ষেত্রে যাতে সামাজিক দূরত্ব বজায় থাকে সেদিকে নজর রাখার জন্য বাজার কমিটির প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী৷ তাতে স্থায়ী সমাধানের লক্ষ্যে স্বেচ্ছাসেবক রাখার পরামর্শ দেন তিনি৷ কারণ, করোনা পরবর্তী সময়ে বাজারগুলিতে স্বাস্থ্যকর ব্যবস্থা জারি থাকে, তা সুনিশ্চিত করতে হবে৷
এদিন মুখ্যমন্ত্রী স্লোগান দেন, ’’আমাদের বাড়ি, আমাদের বাজার৷ আমাদের বাজার, আমার পরিবার৷’’ সামাজিক জীবনে এই স্লোগান লাগু করার আহ্বান রাখেন মুখ্যমন্ত্রী৷ পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে আগামী দিনে ত্রিপুরা স্থায়ীভাবে লাভবান হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি৷ তিনি বলেন, গত জানুয়ারি মাস থেকে এয়ারপোর্টে স্ক্যানিং এবং ১৩ মার্চ থেকে ১৪৪ ধারা জারি করে পরবর্তী সময়ে রাজ্যকে লকডাউনে নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্তে লাভবান হয়েছে ত্রিপুরা৷ এদিন মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যবাসীকে অক্ষয় তৃতীয়া এবং রমজান মাসের অভিনন্দন জানান৷