BRAKING NEWS

দুই জঙ্গি ধরাশায়ীর ১২ ঘণ্টার মধ্যে ডিমা হাসাও জেলায় অপহৃত ঠিকাদার, চিরুনি তালাশি যৌথবাহিনীর

হাফলং (অসম), ২৫ এপ্রিল (হি.স.) : শুক্রবার ভোরে কারবি আংলং জেলার অন্তর্গত ধনশিরির মুগুলাবডিসা রিজার্ভ ফরেস্টে সেনা ও পুলিশের যৌথ বাহিনীর গুলির লড়াইয়ে ডিমাসা ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মি (ডিএনএলএ) নামের এক জঙ্গি সংগঠনের দুই শীর্ষ নেতা রূপসন থাওসেন ওরফে গেডেন ও এলভিন জিডুং ওরফে কিমজুং নিহত হওয়ার ১২ ঘণ্টার মধ্যেই ডিমা হাসাও জেলায় অপহরণের এক ঘটনা সংগঠিত হয়েছে। অপহৃত ব্যক্তি ঠিকাদার সন্তোষ হোজাই (৩৮)। ঘটনার পিছনে ডিমাসা ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মির হাত থাকতে পারে বলে ধারণা করছে পুলিশ। তাঁকে অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করতে যৌথবাহিনী চিরুনি তালাশি চালিয়েছে বলে জানা গেছে।

প্রাপ্ত খবরে প্রকাশ, ডিমা হাসাও জেলার হারাঙ্গাজাও থানার অন্তর্গত গামাডি হাওর থেকে সন্তোষ হোজাই নামের ঠিকাদারকে অপহরণ করে নিয়ে যায় পাঁচ জনের সন্দেহভাজন অজ্ঞাত পরিচয় দুষ্কৃতী দলে। জানা গিয়েছে, হারাঙ্গাজাও থানার অন্তর্গত গামাডি হাওরের বাসিন্দা ঠিকাদার সন্তোষ হোজাই শুক্রবার সন্ধ্যায় তাঁর নিজের বাড়ি থেকে অপহৃত হয়েছেন।

সমগ্র দেশ যখন করোনা ভাইরাস নিয়ে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে এবং করোনা ভাইরাসের হামলা থেকে দেশবাসীকে রক্ষা করতে সমগ্র দেশ জুড়ে লকডাউন জারি  করা হয়েছে, সে সময় এ ধরনের অপহরনের ঘটনায় চাঞ্চল্য ও আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছে পাহাড়ি জেলায়। দুষ্কৃতকারীরা ঠিকাদার সন্তোষ হোজাইকে অপহরণ করে নিয়ে যাওয়ার ২৪ ঘণ্টা অতিক্রম হয়ে গিয়েছে। এখন পর্যন্ত কোনও খোঁজ মেলেনি সন্তোষবাবুর।

এদিকে শুক্রবার সন্ধ্যায় সন্তোষ হোজাইয়ের অপহরণ সংক্রান্ত এক এজাহার হারাঙ্গাজাও থানায় দাখিল করেন তাঁর স্ত্রী জয়তী হোজাই। এজাহারের ভিত্তিতে এক মামলা নিয়ে হারাঙ্গাজাও পুলিশ আধাসেনা নিয়ে অপহৃত সন্তোষ হোজাইকে অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করতে তালাশি অভিযান চালিয়ছে বলে থানা সূত্রে জানা গিয়েছে।

ঘটনা প্রসঙ্গে সন্তোষ হোজাইয়ের স্ত্রী জয়তী হোজাই জানিয়েছেন, শুক্রবার সন্ধ্যা ৬ টা নাগাদ একটি সাদা রঙের বলেরো গাড়ি নিয়ে পাঁচ জনের অজ্ঞাতপরিচয় এক দুষ্কৃতী দল তাঁদের বাড়িতে আসে। এসে তারা সন্তোষ হোজাইয়ের খোঁজ করে। সে সময় সন্তোষ বাড়িতে ছিলেন না। জয়তী জানতে চান, কী কারণে তারা সন্তোষ হোজইয়ের খোঁজ করছেন। এই জিজ্ঞাসার উত্তরে দুষ্কৃতকারীরা তাঁকে নাকি জানায়, ডিটেকছড়ার কাছে তাঁদের একটি অল্টো গাড়ি আটকে পড়েছে। তাই সন্তোষবাবুর জেসিবি নিতে তারা এসেছে। বাড়িতে নে পেয়ে স্ত্রী জয়তীর কাছে সন্তোষ হোজাইয়ের মোবাইল নম্বর দিতে বলে। কিন্তু মোবাইল নম্বর তাঁর মনে না থাকায় তিনি তা দিতে পারেননি। এর মধ্যেই সন্তোষ বাড়িতে এসে হাজির হলে দুষ্কৃতকারীর দল তাঁকে জোর করে বলেরো গাড়িতে তুলে নিয়ে যায়। স্বামীকে যখন নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল, তখন তিনি তাদের পিছনে যেতে চাইলে তাঁকে না আসার কথা নির্দেশ দেয় দষ্কৃতীরা।

জয়তী হোজাই জানান, অপহরণকারীদের সঙ্গে অত্যাধুনিক আগ্নেয়াস্ত্র ছিল। তিনি বলেন, দুষ্কৃতকারীরা তার সঙ্গে অসমিয়া ভাষায় কথা বলছিল। তবে কে বা কারা সন্তোষ হোজাইকে অপহরণ করে নিয়ে গেছে এ নিয়ে এখনও কিছু জানা যায়নি। তাছাড়া অপহরণের দায় এখনও কেউ স্বীকার করেনি বলে জানান তিনি। এই অবস্থায় জয়তী হোজাই তাঁর স্বামীকে অবিলম্বে মুক্ত করে দেওয়ার জন্য অজ্ঞাতপরিচয় অপহরণকারীদের প্রতি আর্জি জানিয়েছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *