নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ১৮ এপ্রিল৷৷ লকডাউন-এ ছেলের জন্ম৷ তাই বাবা চাইছেন ছেলের নাম রাখা হোক ‘লকডাউন’৷ অবশ্য সদ্যজাত শিশুর মা এখনও ঠিক করেননি ছেলেকে কী নামে ডাকবেন৷ শুধু চাইছেন, এই দুযর্োগের মুহূর্তে ছেলে সুস্থভাবে বেঁচে থাকুক৷ রাজস্থান নিবাসী পরিযায়ী শ্রমিকের এক পরিবারকে আজ জিআরপি-র তরফে খোঁজখবর নিয়ে তাদের হাতে খাদ্য সামগ্রী, ওষুধ, শিশুদের আহার তুলে দেওয়া হয়েছে৷ শনিবার চিকিৎসকরা মা ও ছেলের পুনরায় পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেছেন৷ অবশ্য, লকডাউন ঘোষণা হওয়ার পর তাদের থাকার ব্যবস্থা করেছিল জিআরপি-ই৷
সদ্যজাত পুত্রসন্তানের বাবা সঞ্জয় বাউরি বলেন, রাজস্থান থেকে কাজের সন্ধানে ত্রিপুরায় এসেছিলাম৷ কিন্তু করোনা-র প্রকোপে লকডাউন শুরু হয়ে যাওয়ায় তাদের বাড়ি ফেরা হয়নি৷ তিনি বলেন, আমরা আগরতলা রেল স্টেশনে গিয়ে জানতে পেরেছিলাম সমস্ত ট্রেন বাতিল হয়ে গেছে৷ তাই তখন স্টেশনের পাশেই অস্থায়ী তাবু টাঙিয়ে বসবাস শুরু করি৷ এর পর জিআরপি-র সহায়তায় থাকার জন্য আশ্রয় পান এবং সেই সাথে তাদের খাবারেরও ব্যবস্থা হয়ে যায়৷ তিনি বলেন, ত্রিপুরা সরকারের তরফে আমাদের সমস্ত রকম সহায়তা করা হচ্ছে৷ কারণ, আমার স্ত্রী গর্ভবতী ছিলেন৷ প্রসব যন্ত্রণা শুরু হলে জিআরপি কর্মীরাই তাকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে সহায়তা করেছেন৷ তিনি বলেন, তিন দিন আগে আমার স্ত্রী পুত্রসন্তানের জন্ম দিয়েছেন৷ লকডাউনে ছেলের জন্ম হয়েছে৷ তাই ছেলের নাম লকডাউন রাখতে চাইছেন তিনি৷
এ-বিষয়ে সঞ্জয়ের স্ত্রী মঞ্জু বাউরি বলেন, ত্রিপুরায় আমার সন্তানের জন্ম হয়েছে৷ প্রশাসনের কাছ থেকে ভীষণ সহায়তা মিলেছে৷ তিনি বলেন, খাবার থেকে শুরু করে ওষুধ সহ প্রয়োজনীয় সমস্ত ব্যবস্থা করেছে জিআরপি৷ তাঁর কথায়, এখন বাড়ি ফিরে যেতে ভীষণ ইচ্ছা হচ্ছে৷ কিন্তু, লকডাউনে তা সম্ভব নয় বুঝতে পারছি৷ তাই, প্রার্থনা করছি করোনা-র প্রকোপ কমে গিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে উঠুক৷ তবে, ছেলে ও স্বামী-কে নিয়ে বাড়ি ফিরতে পারবেন তিনি৷ ছেলের নামাকরণ নিয়ে এখনও কিছু ভাবেননি বলে জানিয়েছেন তিনি৷ তবে ছেলে সুস্থ ভাবে বেঁচে থাকুক, চাইছেন মা মঞ্জু৷
এসপি জিআরপি আধিকারিক পিনাকী সামন্ত বলেন, লকডাউনের কারণে আটকে পড়া ওই পরিযায়ী শ্রমিকদের বাধাঘাট সুকলে আশ্রয় দেওয়া হয়েছিল৷ তারা ১৮ জন রয়েছেন সেখানে৷ তিনদিন আগে তাদের মধ্যে এক মহিলার প্রসব যন্ত্রণা শুরু হয়৷ তখন তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করি আমরা৷ তিনি বলেন, আজ আমরা তাদের বিভিন্ন খাদ্য সামগ্রী, ওষুধ, শিশুর আহার তুলে দেওয়া হয়েছে৷ শুধু তা-ই নয়, হাসপাতালের দুই চিকিৎসক আজ মা ও ছেলের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করেছেন৷ তারা দুজনই সুস্থ বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন৷