রাজ্যে প্রথম করোনা আক্রান্ত মহিলার সংস্পর্শে আগত ৮৭ জন কোয়ারেন্টাইনে

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ৭ এপ্রিল৷৷ ত্রিপুরায় প্রথম করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত মহিলার সংস্পর্শে আগত অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ ১৭ জনের নমুনা পরীক্ষার জন্য নেওয়া হয়েছে৷ তাঁদের রিপোর্ট আসলে ত্রিপুরায় আরও কেউ করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন কিনা নিশ্চিত হওয়া যাবে৷ তাছাড়া, মহিলার সংস্পর্শে আসা পরিবারের সদস্য, আত্মীয় পরিজন, প্রতিবেশী, চিকিৎসক ও স্বাস্থ্য কর্মী সহ মোট ৮৭ জনকে কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে৷ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সাংবাদিক সম্মেলনে এই খবর দিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী রতনলাল নাথ৷ চিকিৎসকদের উদ্ধৃতি দিয়ে তাঁর দাবি, ওই মহিলা ট্রেনে গুয়াহাটি থেকে আগরতলায় আসার পথে করোনা ভাইরাসে সংক্রমিত হয়েছেন৷


এদিন তিনি বলেন, উদয়পুর গকুলপুরের বাসিন্দা ওই মহিলা গত ১৪ মার্চ আগরতলা থেকে গুয়াহাটির উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেন৷ ১৫ মার্চ তিনি গুয়াহাটি পৌঁছান এবং কামাখ্যা মন্দিরের কাছে একটি হোটেল থাকেন৷ সেখান থেকে তিনি ১৬ মার্চ কামাখ্যা মন্দিরে যান৷ ১৬ এবং ১৭ মার্চ দুদিন পল্টনবাজারে সুখমণি হোটেলে থাকেন৷ এর পর তিনি ১৮ মার্চ ত্রিপুরাসুন্দরী এক্সপ্রেসে আগরতলার উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেন৷ শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ওই মহিলার ট্রেনের টিকিট ছিল এস-৫ বগিতে৷ কিন্তু তিনি এস-৪ বগিতে সফর করেছেন৷ তিনি জানান, ১৯ মার্চ ভোররাত ৩-টা নাগাদ আগরতলায় পৌঁছে লোকাল ট্রেনে তিনি উদয়পুরে যান৷


এদিকে, গত ৩ এপ্রিল সর্দি, কাশি, জ্বর নিয়ে গোমতি জেলা হাসপাতালে চিকিৎসক দেখান তিনি৷ কিন্তু তাতে রোগ ভাল না হওয়ায় তিনি ৫ এপ্রিল প্রথমে আইএলএস হাসপাতালে যান৷ সেখানে দেখামাত্রই চিকিৎসকরা তাকে জিবি হাসপাতালে স্থানান্তর করেন৷ শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ওই মহিলাকে ফ্লু ক্লিনিক থেকে ইমার্জেন্সি ওয়ার্ডে পাঠিয়ে দেন চিকিৎসকরা৷ তার পর তাঁকে মহিলা মেডিসিন ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়৷ কিন্তু রাতে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা দেখামাত্রই তাকে আইসোলেশন ওয়ার্ডে ভর্তি করেন এবং গতকাল তার নমুনা পরীক্ষা করা হয়৷ তাতে তার রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে৷


শিক্ষামন্ত্রীর কথায়, ত্রিপুরায় করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর সন্ধান মিলতেই সঙ্গে সঙ্গে তাঁর সংস্পর্শে কারা ছিলেন তা খুঁজে বের করা হয়েছে৷ তিনি বলেন, ওই মহিলার স্বামী, মেয়ে এবং নাতিন-সহ অ্যাম্বুলেন্সের চালককে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে নেওয়া হয়েছে৷ পাশাপাশি তারা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ, তাই তাঁদের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে৷ তিনি বলেন, মহিলার পরিবারের সদস্য, প্রতিবেশী সহ ৩৯ জনকে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে নেওয়া হয়েছে৷ এছাড়া, তাঁর সংস্পর্শে আসা ৭ জন চিকিৎসাককেও কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে৷ সাথে জিরানিয়ায় মহিলার বাপের বাড়ির সদস্য ১২ এবং ১৮ জন স্বাস্থ্যকর্মীকেও কোয়ারেন্টাইনে নেওয়া হয়েছে৷ মহিলার বাপের বাড়ির সদস্যদের প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের বাড়িতে কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে৷ শিক্ষামন্ত্রীর দাবি, আইএলএস এবং গোমতি জেলা হাসপাতালের দুই চিকিৎসক ছাড়া ৮৭ জনকে কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে৷ তাদের মধ্যে ১৭ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *