নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ২৪ মার্চ৷৷ রাজ্যে লকডাউনে পুলিশ সম্ভবত বাড়াবাড়িই করল৷ কারণ বহু নিরীহ মানুষ, এমনকি ফল বিক্রেতা থেকে শুরু করে ওষুধ ব্যবসায়ীও পুলিশের রক্তচক্ষুর শিকার হয়েছেন৷ চিকিৎসকদের দেয়া ব্যবস্থাপত্র হাতে নিয়েও মার খেয়েছেন রোগীর আত্মীয়রা৷ লকডাউনে পুলিশ কঠোর হাতে মোকাবিলা করতে গিয়ে কার্য্যত রাজ্যবাসীকে আতঙ্কিত করল৷ করোনা আতঙ্কে জুবুথুবু গোটা রাজ্য, পুলিশের মারমুখী ভূমিকায় ভীষণ অসহায় হয়ে পড়েছেন বলেই মনে করা হচ্ছে৷ তবে, পরিস্থিতি মোকাবেলায় আরও নরম মনোভাব নেওয়ার জন্য নির্দেশ দিলেন মুখ্যসচিব৷
আগরতলায় আজ সকাল থেকেই পুলিশ কঠোর মনোভাব নিয়ে রাস্তায় নামে৷ অপ্রয়োজনে কেউ বাড়ির বাইরে এসেছেন বুঝলেই লাঠি দিয়ে মারধর করেছে৷ বেশ কিছু স্থানে কিছু যুবককে কান ধরে ওঠবোস করানো হয়েছে৷ মহারাজগঞ্জ বাজারে পুলিশের মারমুখি আচরণে ব্যবসায়ীরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন৷ শুধু তা-ই নয়, বিশেষ প্রয়োজনে বাজারে কিংবা ওষুধের দোকানে যেতেও মানুষ ভয় পাচ্ছেন৷ কিছু কিছু স্থানে পুলিশ সাংবাদিকদেরও হয়রানি করেছে৷
এ-বিষয়ে স্বাস্থ্যসচিব বলেন, পুলিশ কিছুটা বাড়াবাড়ি করেছে, তা অস্বীকার করার সুযোগ নেই৷ তাই, ত্রিপুরা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত ডিজিপি রাজীব কুমারকে টাস্ক ফোর্সকে আরও নরম মনোভাব নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যসচিব৷ কারণ, মানুষের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে গিয়ে কাউকে আতঙ্কিত করা ত্রিপুরা সরকারের উদ্দেশ্য নয়৷ স্বাস্থ্য সচিব বলেন, ত্রিপুরায় সমস্ত বাজার, নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রীর দোকান, ওষুধের দোকান খোলা রাখার জন্য বলা হয়েছে৷ সে-ক্ষেত্রে পুলিশ অযথা কঠোর হতে পারবে না৷ তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, আগামীকাল থেকে এমন পরিস্থিতি হবে না৷ শুধু তা-ই নয়, সংবাদ মাধ্যমের ওপর কোনও বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়নি৷ পুলিশকে তা বুঝতে হবে৷
আগামীকাল থেকে জনগণের সাথে কঠোরভাবে বলপ্রয়োগে লাগাম টানার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি৷ মূলত, বুধবার লকডাউনে আগরতলায় অনেক সাধারণ মানুষ পুলিশের হাতে মার খেয়েছেন৷ এতে অনেকক্ষেত্রে নিরীহ মানুষও পুলিশের রোষের শিকার হয়েছেন৷ তাই টাস্ক ফোর্সকে সংযত আচরণের নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যসচিব, জানান স্বাস্থ্যসচিব৷
প্রধানমন্ত্রীর আবেদনকে উপেক্ষা করে রাস্তায় যারা বেরিয়েছিল তাদেরকে কঠোর হস্তে দমন করল উত্তর জেলার কদমতলা ও চুড়াইবাড়ি থানার পুলিশ৷ লকডাউনের দিনে যত্রতত্র আড্ডা, দোকানপাট খুলে বসা , ঘর ছেড়ে বের হওয়ার ফল ভোগ করতে হলো অনেককেই৷ কদমতলা ব্লক এলাকায় সতর্ক পুলিশ৷ চুড়াইবাড়ি ও কদমতলা থানা এলাকার বিভিন্ন স্থানে পুলিশ লাঠিচার্জ করতে বাধ্য হয়৷ বলতে গেলে ২১ দিনের লগআউটের প্রথম দিনে মারমুখী ভঙ্গিমায় পুলিশ৷ ঘর ছেড়ে না বের হওয়ার আবেদন৷ ঘর ছেড়ে বের হলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে৷ যার ফল স্বরূপ খেতে পারেন পুলিশের লাঠিচার্জ৷
অপরদিকে রাজ্যের বিকল্প ২০৮ নং কুকিতল সাব্রুম ও কুকিতল তারকপুর সড়কটি সম্পূর্ণরূপে সিল করে দিয়েছে কদমতলা থানার পুলিশ৷ সিল করে দেওয়া হয়েছে চুড়াইবাড়ি থানাধীন ত্রিপুরা অসাম সংযোগী ছোট রাস্তা গুলি৷ একমাত্র ৮ নং আসাম আগরতলা জাতীয় সড়ক দিয়ে পন্যবাহী লড়ি রাজ্যে প্রবেশ হচ্ছে৷