করোনা : নজরদারিতে ৫১ জন, আইসোলেশন ওয়ার্ডে ভর্তি ১, কোন আক্রান্ত নেই

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ১৮ মার্চ৷৷ করোনা ভাইরাস নিয়ে এখনো আতঙ্কিত হওয়ার কোন প্রয়োজনীয়তা নেই৷ কারণ, ত্রিপুরায় এখনো ওই ভাইরাসে আক্রান্তের কোন খবর নেই৷ অভয় দিয়ে পরিবার কল্যাণ ও রোগ প্রতিরোধ দফতরের অধিকর্তা ডাঃ রাধা দেববর্মা বলেন, আপাতত ৫১ জন বাড়িতে নজরদারিতে এবং ১ জন জি বি হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে ভর্তি রয়েছেন৷ এদিকে, আজ সারাদিনে সিপাহীজলা জেলা এবং উত্তর জেলায় করোনা আক্রান্তের খবর প্রচারিত হয়েছিল৷ কিন্তু, প্রাথমিক পরীক্ষায় তাদের শরীরে করোনা ভাইরাসে আক্রান্তের কোন লক্ষণ পাওয়া যায়নি৷


আজ ডাঃ রাধা দেববর্মা বলেন, করোনা ভাইরাস নিয়ে পরিস্থিতির উপর ক্রমাগত নজরদারি চালানো হচ্ছে৷ তাঁর কথায়, এখন পর্যন্ত ৮৫ জনকে বাড়িতে নজরদারিতে রাখা হয়েছিল৷ তাদের মধ্যে ৩৪ জন ইতিমধ্যে ১৪ দিন অতিক্রান্ত করেছেন৷ কিন্তু, তাদের শরীরে করোনা ভাইরাসে আক্রান্তের লক্ষণ পাওয়া যায়নি৷ বাকি ৫১ জন বর্তমানে নজরদারিতে রয়েছেন৷ তিনি বলেন, করোনা আক্রান্ত কোন ব্যক্তির সংস্পর্শে ছিলেন কিংবা করোনা ভাইরাসে প্রভাবিত এলাকা থেকে এসেছেন এমন ব্যক্তিদের সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে কোয়ারেন্টাইনে রাখা হচ্ছে৷ মূলত, তাদের উপর নজরদারির জন্যই কোয়ারেন্টাইনের ব্যবস্থা করা হয়েছে৷


এদিন তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত ৩ জন রোগীকে হাসপাতালের আইসোলেশনে রাখা হয়েছিল৷ তাদের মধ্যে দুই জনকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে৷ ১ জন বর্তমানে জি বি হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে ভর্তি রয়েছেন৷ তিনি আরও জানান, ত্রিপুরায় এখন পর্যন্ত করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত সন্দেহে দুই জনের রক্তের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছিল৷ কিন্তু, তাদের রক্তে ভাইরাস পাওয়া যায় নি৷


মঙ্গলবার বিশ্রামগঞ্জ থানাধীন দক্ষিন চড়িলাম এলাকার কড়ইমুড়া গ্রামের বাসিন্দা রকসান মিয়ার বাড়িতে মালয়েশিয়া থেকে এক যুবক আসেন৷ তার নাম সুজন মিয়া৷ খবর পেয়ে বুধবার দুপুরে করোনা ভাইরাস সতর্কতা মূলক ব্যবস্থা হিসাবে সিপাহীজলা জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ডাঃ রঞ্জন বিশ্বাস একটি মেডিকেল টিম তার বাড়িতে পাঠান৷ মেডিকেল টিমের পরীক্ষা নিরীক্ষার পর ডাঃ রঞ্জন বিশ্বাস জানান, ওই যুবকের শরীরে করোনা ভাইরাসের কোন সংক্রমন পাওয়া যায়নি৷ তার জ্বর, সর্দি, কাশি কিছুই হয়নি৷ জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক আরও জানান, মালয়েশিয়া থেকে আসা এই যুবককে আগামী ১৪ দিন বাড়িতেই থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে৷ বাড়িতে তিনি চিকিৎসকদের নজরদারিতে থাকবেন৷ তিনি বলেন, চিকিৎসকের টিম প্রতিদিন বাড়িতে গিয়ে তার খোঁজ খবর নেবেন৷ এদিকে, সিপাহীজলা জেলাতে আরও ছয়জন রাজ্যের অথবা দেশের বাইরে থেকে ত্রিপুরায় এসেছেন, এমন খবর পেয়েছে স্বাস্থ্য দফতর৷ খোঁজ চলছে বলে জানান ডাঃ রঞ্জন বিশ্বাস৷


এদিকে উত্তর ত্রিপুরা জেলায় কাঞ্চনপুরে জনৈকা বিদেশী সাইক্লিস্ট-কে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত সন্দেহে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছিল কিন্তু, প্রাথমিক পরীক্ষার পর তাঁর দেহে ভাইরাসে আক্রান্তের কোন লক্ষণ পাওয়া যায়নি৷ কাঞ্চনপুর মহকুমা স্বাস্থ্য আধিকারিক বলেন, ওই মহিলা দীর্ঘদিন ধরে ভারতে অবস্থান করছিলেন৷ সাইকেলে তিনি সারা বিশ্ব ভ্রমণ করছেন৷ সম্প্রতি তিনি মেঘালয়ের ডাউকি সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেন এবং সেখানে ছয়দিন থাকার পর আগরতলা ইন্টিগ্রেটেড চেকপোস্ট দিয়ে ত্রিপুরায় প্রবেশ করেন৷ তিনি বলেন, ভাঙমুন যাওয়ার পথে আজ সকাল সাড়ে সাতটা নাগাদ কাঞ্চনপুর নাকা পয়েন্টে পুলিশ ওই বিদেশী নাগরিককে আটকায় এবং হাসপাতালে খবর দেয়৷ পরীক্ষা-নিরীক্ষায় ওই মহিলার দেহে ভাইরাসের সংক্রমণের কোন লক্ষণ পাওয়া যায়নি৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *