গুয়াহাটি, ১৬ মার্চ (হি.স.) : সতৰ্কতা অবলম্বনই করোনা ভাইরাসের হামলা থেকে রক্ষা পাওয়ার একমাত্র উপায়। বলেছেন রাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মা। সোমবার করোনা ভাইরাস সম্পর্কে রাজ্যবাসীকে অভয়বাণী শোনাতে এবং এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিতে জনতা ভবনে এক সাংবাদিক সম্মেলনের আয়োজন করেছিল স্বাস্থ্যমন্ত্রক। আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে মন্ত্রী ড. শর্মা বলেন, অসমের কিছু কিছু জায়গায় অযথা আতঙ্ক ছড়ানো হচ্ছে। সবচেয়ে বড় বিষয় হল, সতর্কতা। সতর্কতা অবলম্বন করলে করোনা ভাইরাস ধারে-কাছেই আসবে না।
প্রাসঙ্গিক বক্তব্যে মন্ত্রী বলেন, ৫০০০ মানুষ যদি এক সঙ্গে করোনায় আক্ৰান্ত হন, তা হলে আমরা বিপদে পড়ে যাব। তিনি জানান, অসমে এখন পর্যন্ত এক জনের শরীরেও করোনা ভাইরাসের উপস্থিতি ধরা পড়েনি। তবে বেঙ্গালুরু, কেরালা ইত্যাদি রাজ্য থেকে এসেছেন এমন বিদ্যাৰ্থী, কৰ্মচারীদের করোনা সম্বন্ধীয় কোনও লক্ষণ দেখা দিলে সঙ্গে সঙ্গে সংশ্লিষ্ট এলাকার সরকারি হাসপাতালে গিয়ে তাঁদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করাতে অনুরোধ জানান মন্ত্রী ড. হিমন্তবিশ্ব। তিনি বলেন, অনেকে করোনা সম্বন্ধীয় পরীক্ষাদি করাতে লজ্জা বা সংকোচ করে পালিয়ে বেড়ান। এ ধরনের কাজ সকলের জন্য বিপদ ডেকে আনতে পারে, বলেছেন তিনি। বলেন, এখন যে পরিস্থিতি, তাতে কোনও সন্দেহজনক রোগের উপসর্গ দেখা দিলে গোপন করার সময় নয়। সামান্য খামখেয়ালির জন্য ফল বিপরীতও হতে পারে। সত্যিই যদি কেউ করোনায় আক্রান্ত হন, এর জন্য সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির পরিবাররের পাশাপাশি গোটা সমাজকে ভুগতে হবে, সকলকে গ্রাস করবে এই মারণ সংক্রমণ, বলেন মন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শৰ্মা।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানান, পরিবারের প্রবীণ তথা বৃদ্ধদের এই ভাইরাস খুব শিগগির আক্রমণ করে। তাই সর্বাগ্রে সচেতনতা অবলম্বনের পাশাপাশি শীঘ্ৰ ডাক্তারের শরণাপন্ন হয়ে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করাতে সকলের প্রতি আহ্বান জানান তিনি। বলেন, ‘অসমের স্বাস্থ্য সুবিধা সীমিত। তাই, এখনই যদি সতৰ্কতা অবলম্বন করতে না পারি, তা হলে এক সঙ্গে পাঁচ হাজার মানুষ করোনা ভাইরাসে আক্ৰান্ত হলে আমরা বিপদে পড়ে যাব।’
স্বাস্থ্যমন্ত্ৰী ড. হিমন্তবিশ্ব শৰ্মা জানান, রাজ্যে ইতিমধ্যে তিনটি করোনা ভাইরাস পরীক্ষা কেন্দ্ৰ স্থাপন করা হয়েছে। আগে কেবল গুয়াহাটি মেডিক্যাল কলেজ হাসাপাতাল এবং ডিব্রুগড়ে আঞ্চলিক চিকিৎসা গবেষণা কেন্দ্ৰে এই ভাইরাসের পরীক্ষার ব্যবস্থা ছিল। কিন্তু আজ যোরহাট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালেও করোনা ভাইরাসের পরীক্ষার জন্য স্বীকৃতি প্ৰদান করা হয়েছে। এছাড়া, রোগীর শরীরের প্রয়োজনীয় নমুনা সংগ্ৰহের জন্য তিনটি কেন্দ্ৰ গড়ে তোলা হয়েছে অসমে। এগুলো বরপেটার ফকরউদ্দিন আলি আহমেদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, তেজপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল এবং শিলচর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল।
এদিকে রাজ্যে মাস্ক, সেনিটাইজার ইত্যাদি অত্যাবশ্যক সামগ্ৰীর মূল্যবৃদ্ধিকারী অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্ৰহণের হুমকি দিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী ড. হিমন্তবিশ্ব শৰ্মা।