কলকাতা, ১৪ ফেব্রুয়ারি (হি. স.) : ধর্মের নামে বিভাজন করতে দেবো না। শুক্রবার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে এই হুঁশিয়ারি দিলেন জেএন ইউ ছাত্রসংগঠনের নেত্রী ঐশি ঘোষ।
ঐশি এদিন অভিযোগ করেন, সংবিধান লঙ্ঘন করা হচ্ছে। আমরা আরএসএস, বিজেপি কে ভয় পাই না। ঐক্যবদ্ধভাবে আমাদের লড়তে হবে। দিল্লিতে বিজেপি গুন্ডারা আতঙ্ক তৈরি করছে। আক্রমণ করছে আমাদের। ২০১৭ সালে জেএনইউ-তে বামপন্থীদের বক্তৃতা দিতে দেওয়া হয়নি। ২৪ ঘন্টা তাঁদের আটকে রাখা হয়েছিল। কিন্তু আমাদের লাগাতার লড়াইয়ের পর অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদ (এবিভিপি) বুঝতে পারে বামেদের হারানো সহজ নয়।
‘বুকে বুক রেখে, চোখে চোখ রেখে, লড়াইয়ের আবেদন করে পড়ুয়াদের উদ্দেশে ঐশি বলেন, আমাদের হারানো যায়নি। আমরা হারবো না। আক্রমণ করে রোধ করে দেব। আমাদের শেষ করতে পারেনি। পারবেও না। তার কারণ বিজেপির ইতিহাস সবাই জানে। আমাদের ইতিহাস অন্যরকম। এর আগে শুক্রবার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে জেএনইউ-এর ছাত্র সংগঠনের নেত্রী ঐষি ঘোষের সভা নিয়ে বিতর্ক দেখা দেয়। প্রতিষ্ঠানের ভিতরে বহিরাগত কাউকে এনে সভা করার ব্যাপারে জোরালো আপত্তি জানায় এবিভিপি।
প্রতিষ্ঠানের ছাত্র-নির্বাচনের মুখে এই সভার একটি বিশেষ গুরুত্ব আছে বলে মনে করছেন ওয়াকিবহাল মহল। তিন বছর বাদে যাদবপুরের ছাত্র নির্বাচন হচ্ছে। দিন ধার্য হয়েছে আগামী ১৯ ফেব্রুয়ারি। এবার এখানকার ভোটে প্রথম প্রার্থী দিয়েছে এবিভিপি। বেশ কিছুদিন ধরেই সেখানে কেন্দ্র বিরোধী আন্দোলন চলছে। মূলত বামপন্থী পড়ুয়াদের চাপে বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন অনুষ্ঠান থেকে ফিরে আসতে হয়েছে প্রতিষ্ঠানের আচার্য তথা রাজ্যপাল জগদীপ ধনকরকে।
শুক্রবার যাদবপুরের বাম-পড়ুয়ারা ঐশীকে নিয়ে সমাবেশের ডাক দেয়। প্রতিষ্ঠানের এবিভিপি-র শাখা-সম্পাদক সুমন চন্দ্র দাস ‘হিন্দুস্থান সমাচার’-কে বলেন, “ওরা (বাম-পড়ুয়া) গত ১৭ই প্রতিষ্ঠানে যে সমাবেশের ডাক দিয়েছিল, তার পর ছাত্রভোট ঘোষণা হয়। কিন্তু ভোট ঘোষণার পর বহিরাগতদের এনে এভাবে প্রতিষ্ঠানে প্রচার চালানো যায় না। আমরা কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে সেটা জানিয়েছি।“ শুক্রবার ঐশিকে নিয়ে বাম পড়ুয়াদের মিছিল যাদবপুরের ৪ নম্বর গেট থেকে ৩ নম্বর গেট ছুঁয়ে যাদবপুর মোড় পর্যন্ত এসে ফের ৪ নম্বর গেটে যায়। এর পর এর বিপরীতে এক মঞ্চে ভাষণ দেন ঐশি।
উল্লেখ্য, এর আগে ১৭ জানুয়ারি যাদবপুরে এসএফআইয়ের তাকে এক সমাবেশে অংশ নিয়েছিলেন জাতীয় স্তরের বেশ কিছু পরিচিত মুখ। তাতে আমন্ত্রিত ছিলেন জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক প্রভাত পট্টনায়েক, প্রেসিডেন্সি ছাত্র সংসদের সভাপতি মিমোসা ঘরুই, হায়দরাবাদ সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি এবং আলিগড় মুস্লিম বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শীর্ষনেতা যথাক্রমে অভিষেক কুমার ও ইস্তাক আহমেদ প্রমুখ।