গুয়াহাটি, ২৭ জানুয়ারি (হি.স.) : অসম মাধ্যমিক শিক্ষা পর্ষদ (সেবা) এই প্রথম নয়া কিছু কড়া নিয়মাবলি সংযোজন করছে। এবার থেকে পরীক্ষা হল-এ নকল করতে ধরা পড়লে সংশ্লিষ্ট ছাত্র বা ছাত্রীকে তিন বছরের জন্য এক্সপেলড করা হবে। তাছাড়া কিছু নির্দিষ্ট বিধি ভঙ্গ করলে বাতিল করা হবে সংশ্লিষ্ট পরীক্ষা কেন্দ্রের বৈধতা। এছাড়া মেট্ৰিক পরীক্ষার পর ‘দিশা’ শীর্ষক সাইকোমেট্রিক টেস্টের প্রচলন করবে সেবা। কেবল মাধ্যমিক নয়, নবম, দশম, একাদশ এবং দ্বাদশ শ্ৰেণির ছাত্ৰছাত্ৰীরাও বসতে পারবে এই টেস্টে।
সোমবার সেবা দফতরে মাধ্যমিক শিক্ষা পর্ষদের অধ্যক্ষ রমেশচাঁদ জৈন এবারের হাইস্কুল শিক্ষান্ত পরীক্ষায় গৃহীত বেশ কিছু কড়া সিদ্ধান্তের তথ্য দিয়েছেন। তিনি জানান, এবার প্ৰথমবারের মতো সেবা মেট্ৰিকের পর অনুষ্ঠিত করবে সাইকোমেট্রিক টেস্ট। মেট্ৰিক পাশ করার পর ছাত্ৰছাত্ৰীরা কোন স্ট্রিমে পড়বে তা জানতে অনুষ্ঠিত হবে এই পরীক্ষা। এই পরীক্ষায় বসতে সেবা-র অধীনস্থ ৬,৯৯২টি বিদ্যালয়ের ছাত্ৰছাত্ৰী অনলাইনে করতে পারবে আবেদন। তবে কেবল মাধ্যমিক পরীক্ষাৰ্থীরাই নয়, নবম, দশম, একাদশ এবং দ্বাদশ শ্ৰেণির ছাত্ৰছাত্ৰীরাও সাইকোমেট্রিক টেস্টে বসতে পারবে। ১ মাৰ্চ অনুষ্ঠেয় এই পরীক্ষার নাম দেওয়া হয়েছে ‘দিশা’।
অধ্যক্ষ রমেশচাঁদ জৈন জানান, আজ থেকে ৬ ফেব্ৰুয়ারি পর্যন্ত ছাত্ৰছাত্ৰীদের সংশ্লিষ্ট টেস্টের ফর্ম পূরণ করতে হবে। ২ ঘণ্টার পরীক্ষায় থাকবে ১৮২টি প্ৰশ্ন। পরীক্ষার শেষে সেবা কর্তৃপক্ষ থেকে পরীক্ষাৰ্থীদের দেওয়া হবে ২ পৃষ্ঠার রিপোর্ট। এই টেস্টের দ্বারা ছাত্ৰছাত্ৰীরা তাদের নিজের মধ্যে বিদ্যমান সম্ভাবনার আভাস পাবে। পরীক্ষার প্ৰশ্নমালা অতি সাধারণ হবে জানিয়ে বলেন, প্ৰশ্নগুলোর উত্তর দিতে আলাদা কোনও ধরনের অধ্যয়নের প্ৰয়োজন পড়বে না। ফর্ম পূরণের মাশুল মাত্ৰ ১০০ টাকা ধার্য করা হয়েছে বলে জানান অধ্যক্ষ জৈন।
তিনি আরও জানান, আসন্ন মাধ্যমিক পরীক্ষা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে সেবা বিশেষ কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। এর মধ্যে রয়েছে নকলের বিষয়টি। নকলকারীদের বিরুদ্ধে আগেকার নিয়ম থেকে এবার বেশি কঠোর হবে সেবা। জানান, পরীক্ষার সময় নকল করা বা মোবাইল ব্যবহার করা হচ্ছে বলে ধরা পড়লে সটান ৩ বছরের জন্য এক্সপেলড করা হবে সংশ্লিষ্ট ছাত্র বা ছাত্রীকে। কেবল পরীক্ষার্থীই নয়, কোনও পরীক্ষা কেন্দ্ৰ যদি বেঁধে দেওয়া বিধি না মেনে খামখেয়ালিপনা করছে বলে ধরা পড়ে, তা হলে সেই কেন্দ্রের বৈধতা বাতিল করা হবে বলে স্পষ্ট ঘোষণা করেছেন সেবা-র অধ্যক্ষ রমেশচাঁদ। তিনি আরও জানান, এবারই প্ৰথম পরীক্ষার হল-এ পরীক্ষাৰ্থীদের সামনে দুই পরীক্ষার্থীকে সাক্ষী রেখে এবং তাদের কাছ থেকে সার্টিফিকেট নিয়ে ইনভিজিলেটরকে প্রশ্নপত্রের প্যাকেট খুলতে হবে।
অধ্যক্ষ জানান, এবার ৮৬০টি কেন্দ্ৰে সেবা সংলগ্ন করবে ইন্টারনেট জ্যামার। এছাড়া মাধ্যমিক পরীক্ষার সময়কালে কোনও দল বা সংগঠনকে হরতাল তথা বনধ-এর আহ্বান না জানানোর আহ্বান জানিয়েছেন সেবা কৰ্তৃপক্ষ। হাইস্কুল শিক্ষান্ত পরীক্ষা সম্পৰ্কে রমেশচাঁদ জৈন জানান, ইতিমধ্যে পরীক্ষার জন্য যাবতীয় সামগ্ৰী কেন্দ্ৰগুলোতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। এবার পরীক্ষাকেন্দ্ৰগুলির দেওয়ালে লেখা থাকবে ‘নকল থেকে সাবধান’। তাছাড়া, প্ৰত্যক সেন্টারে সিসিটিভি ক্যামেরা সংস্থাপনও বাধ্যতামূলক করা হয়েছে, জানান অধ্যক্ষ।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, আগামী ১০ ফেব্ৰুয়ারি থেকে শুরু হবে মাধ্যমিক পরীক্ষা। চলবে ২৯ ফেব্ৰুয়ারি পর্যন্ত। এবার ৩,৫৮,৪৪৬ জন পরীক্ষাৰ্থী মাধ্যমিকে অবতীর্ণ হবে।