ব্রু শরণার্থীরা ত্রিপুরার নাগরিক, ডম্বুর বাঁধ নির্মাণে তাঁরা বাস্তুচ্যুত হয়ে মিজোরামে আশ্রয় নিয়েছিলেন : মেবার কুমার

আগরতলা, ১৮ জানুয়ারি (হি.স.) : ব্রু শরণার্থীরা ত্রিপুরারই নাগরিক৷ ডম্বুর বাঁধ নির্মাণের সময় তাঁরা বাস্তুচ্যুত হয়েছিলেন৷ বাধ্য হয়ে মিজোরামে আশ্রয় নিয়েছিলেন তাঁরা৷ তাই তাঁদের পুনর্বাসন আমাদের দায়িত্ব৷ শনিবার এই কথা জোর গলায় দাবি করেন ত্রিপুরা সরকারের উপজাতি কল্যাণ দফতরের মন্ত্রী তথা আইপিএফটি-র সাধারণ সম্পাদক মেবারকুমার জমাতিয়া৷ তবে নাগরিকত্ব (সংশোধনী) আইনের বিরোধিতায় আন্দোলন থেকে আইপিএফটি সরে আসছে না বলেও সাফ জানিয়েছেন তিনি৷

আজ খুমুলুঙে গণ-অবস্থান মঞ্চে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে মেবারকুমার জমাতিয়া বলেন, ২০১৬ সাল থেকে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলের বিরোধিতায় আন্দোলন জারি রেখেছে আইপিএফটি৷ তাঁর দাবি, ত্রিপুরায় আমরাই নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলের বিরুদ্ধে সর্ববৃহৎ আন্দোলন গড়ে তুলেছি৷ সাথে তিনি যোগ করেন, ত্রিপুরার স্বার্থেই এই আইনের বিরোধিতা করছি৷

মেবারকুমার বলেন, স্বাধীনতা-পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন পরিস্থিতিতে ত্রিপুরায় জনবিস্ফোরণ ঘটেছে৷ আয়তনের তুলনায় ত্রিপুরায় জনসংখ্যা অধিক৷ ফলে নতুন করে বোঝা বহন করার ক্ষমতা নেই আমাদের৷ তিনি বলেন, অতীতে একাধিকবার ত্রিপুরা বোঝা কাঁধে নিয়েছে৷ কিন্তু নাগরিকত্ব (সংশোধনী) আইনের মাধ্যমে নতুন করে বোঝা কাঁধে নেব না৷ ত্রিপুরার স্বার্থে ওই আইন চালু হতে দেব না আমরা৷

তিনি বলেন, আগামী ২২ জানুয়ারি সুপ্রিমকোর্টে নাগরিকত্ব (সংশোধনী) আইনের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত আবেদনের শুনানি হবে৷ তাই সুপ্রিমকোর্টের রায় ঘোষণা হওয়ার আগে এই আইনের বিরোধিতায় নতুন করে আন্দোলনে যাচ্ছি না৷ তবে আপাতত আইনটির বিরোধিতায় গণ-অবস্থান কর্মসূচিও প্রত্যাহার করব না, বলেন মেবারকুমার জমাতিয়া৷

এদিন তিনি বলেন, কাঞ্চনপুরের বিভিন্ন শিবিরে আশ্রিত ব্রু শরণার্থীরা বাস্তবে ত্রিপুরার নাগরিক৷ তাঁর দাবি, ডম্বুর বাঁধ নির্মাণের সময় রিয়াং জনজাতির বাসিন্দারা বাস্তুচ্যুত হয়েছিলেন৷ ফলে জীবন-জীবিকার প্রশ্নে তাঁরা মিজোরামে আশ্রয় নিয়েছিলেন৷ কিন্তু মিজোরামে সামাজিক ও রাজনৈতিক প্রতিবন্ধকতার কারণে তাঁরা সেখানে বসবাস করতে পারেননি৷ প্রাণরক্ষার তাগিদে তাঁরা ত্রিপুরায় আশ্রয় নিয়েছিলেন৷ তাই তাঁদের ত্রিপুরায় পুনর্বাসন দেওয়া আমাদের দায়িত্ব, বলেন মন্ত্রী জমাতিয়া৷

এদিকে ত্রিপুরায় ব্রু শরণার্থীদের পুনর্বাসনের সিদ্ধান্তে কেন্দ্রীয় সরকার, মিজোরাম সরকার এবং ত্রিপুরা সরকারকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন মেবারকুমার৷ তাঁর কথায়, দীর্ঘ ২৩ বছরের যাতনার অবসান হতে চলেছে৷ ব্রু’রা মূলস্রোতে ফিরে আসছেন৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *