ত্রিপুরা : বাদল চৌধুরীকে রাজনৈতিক হয়রানির অভিযোগে উত্তাল বিধানসভা, রাজ্যপালের ভাষণ বয়কট, ওয়াকআউট

আগরতলা, ১৭ জানুয়ারি (হি.স.) : পূর্ত কেলেংকারির অভিযোগে কারাবন্দি প্রাক্তন বিভাগীয় মন্ত্রী তথা বর্তমান বিধায়ক বাদল চৌধুরীকে নিয়ে আজ শুক্রবার ত্রিপুরা বিধানসভার শীতকালীন অধিবেশনের প্রথম দিন শুরু হয় তুমুল হৈ হট্টগোলের মধ্য দিয়ে। বিরোধীদের বিক্ষোভে বিধানসভা উত্তপ্ত হয়ে উঠে। প্রথা অনুযায়ী ইংরেজি বছরের প্রথম বিধানসভা অধিবেশন রাজ্যপালের ভাষণ দিয়ে শুরু হয়। এদিন রাজ্যপালের ভাষণ শুরু হতেই বিরোধীরা গলায় প্ল্যা-কার্ড ঝুলিয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করতে শুরু করেন। এক ময় তাঁরা ওয়েলে নেমে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। শেষে তাঁরা রাজ্যপালের ভাষণ বয়কট করে সদন থেকে বেরিয়ে যান। অবশ্য প্রচণ্ড হৈ হট্টগোলের মধ্যেও রাজ্যপাল রমেশ বৈস তাঁর ভাষণ জারি রাখেন।

আজ বিরোধী দলনেতা মানিক সরকার বিধানসভায় উপস্থিত ছিলেন না। বিরোধী দলনেতা ছাড়াই বিরোধীরা বিধানসভায় বিক্ষোভ দেখানোর সব রকম প্রস্তুতি নিয়ে এসেছিলেন। বিরোধী দলের প্রত্যেক সদস্য গলায় ঝুলানোর জন্য প্ল্যা-কার্ড নিয়ে আসেন বিধানসভায়। বিরোধী দলের সচেতক তপন চক্রবর্তীর নেতৃত্বে বাদল চৌধুরী ইস্যুতে ট্রেজারি বেঞ্চকে চাপে ফেলার কৌশল নিয়েছিল সিপিএম। কিন্তু পাঁচ মিনিটেই তাঁদের আন্দোলন থেমে যায়।

জাতীয় সংগীত দিয়ে অধিবেশন শুরু হওয়ার পর রাজ্যপাল রমেশ বৈস ভাষণ দিতে শুরু করেন। তখনই বিরোধীরা গলায় প্ল্যা-কার্ড ঝুলিয়ে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। বিধায়ক বাদল চৌধুরীকে রাজনৈতিক হয়রানির অভিযোগ এনে বিরোধী সদস্যরা বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন। এক সময় তাঁরা ওয়েলে নেমে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। এতে মুহূর্তের মধ্যে বিধানসভা উত্তপ্ত হয়ে উঠে। এভাবে বিরোধীরা টানা পাঁচ মিনিট বিক্ষোভ দেখান এবং শেষে রাজ্যপালের ভাষণ বয়কট করে বেরিয়ে যান।

পরে বিধানসভার বাইরে সাংবাদিক সম্মেলন ডেকে বিরোধী দলের সচেতক তপন চক্রবর্তী বলেন, ত্রিপুরা বিধানসভার সদস্য এবং বিরোধী দলের উপনেতা বাদল চৌধুরী ৪০ বছর ধরে সংসদীয় রাজনীতিতে রয়েছেন। দীর্ঘ সময় তিনি রাজ্য সরকারের মন্ত্রী হিসেবে গুরুদায়িত্ব পালন করেছেন। সাংসদ হিসেবেও সুনামের সাথে কাজ করেছেন তিনি। কিন্তু বর্তমান রাজ্য সরকার তাঁর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা সাজিয়ে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করতে চাইছে। তপনবাবুর অভিযোগ, বিধানসভা অধিবেশনের জন্য বাদল চৌধুরীকে কোনও চিঠি বা নোটিশ পাঠানো হয়নি।

তাঁর দাবি, নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি পূরণে ব্যর্থ হয়ে ত্রিপুরাবাসীর দৃষ্টি ঘুরিয়ে দেওয়ার জন্যই বাদল চৌধুরীকে হয়রানি করা হচ্ছে। কারণ, বাদলবাবুকে গ্রেফতারের আড়াই মাসেও এখনও পুলিশ আদালতে চার্জশিট দিতে পারছে না। তাই তিনি চাইছেন বাদল চৌধুরীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করা হোক।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *