তপশিলী জাতি ও তপশিলী উপজাতি সংরক্ষণ ১০ বছর বৃদ্ধি, বিধানসভায় বিল পাস

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ১৭ জানুয়ারি৷৷ তপশিলী জাতি ও তপশিলী উপজাতি সংরক্ষণ ১০ বছর বৃদ্ধির জন্য ত্রিপুরা বিধানসভাতেও বিল পাস হয়েছে৷ আজ বিধানসভা অধিবেশনে ‘দি কনস্টিটিউশন (ওয়ান হানড্রেড এণ্ড ট্যুয়ান্টি সিক্সস এমেণ্ডমেন্ট) বিল, ২০১৯’ সর্বসম্মতি ক্রমে পাস হয়েছে৷ উল্লেখ্য, তপশিলী জাতি এবং জনজাতিদের জন্য সংরক্ষণের মেয়াদ আরও দশ বছর বাড়ানোর লক্ষ্যে সংসদের দুই কক্ষেই ইতিমধ্যে এই বিলটি গৃহীত হয়েছে৷ আজ রাজ্য বিধানসভায় এই বিল সর্বসম্মতিক্রমে সমর্থন জ্ঞাপন করা হয়েছে৷ আজ বিধানসভা অধিবেশনের দ্বিতীয়ার্ধে এই বিলটি সমর্থনের জন্য সভায় উত্থাপন করেন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব৷ এ বিষয়ে রাজস্বমন্ত্রী নরেন্দ্র চন্দ্র দেববর্মা, শাসক দলের বিধায়ক ডা. দিলীপ দাস, ডা. অতুল দেববর্মা, রতন চক্রবর্তী, সুুশান্ত চৌধুরী, আশিষ দাস, বিরোধী দলের বিধায়ক রতন ভৌমিক, সুুধন দাস এবং প্রভাত চৌধুরী সবাই বিলটি সমর্থন জানিয়ে বক্তব্য রাখেন৷

দিল্লীর সঙ্গে ত্রিপুরার ভৌগোলিক দূরত্ব একই থাকলেও নরেন্দ্র মোদির প্রধানমন্ত্রীত্বে কেন্দ্রে সরকার গঠিত হওয়ার পর ত্রিপুরার সঙ্গে দিল্লীর আত্মিক দূরত্ব অনেক কমেছে৷ উত্তর পূর্বাঞ্চলের উন্নয়নে কেন্দ্রীয় সরকারের আগ্রহ এবং পরিকল্পনা তাই প্রমাণ করে৷ গত প্রায় ২৩ বছর ধরে চলতে থাকা রিয়াং শরনার্থীদের সমস্যার গতকাল সমাধান হয়েছে৷ তা হয়েছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ-এর উদ্যোগের জন্যই৷ আজ বিধানসভা অধিবেশনে ‘দি কনস্টিটিউশন (ওয়ান হানড্রেড এণ্ড ট্যুয়ান্টি সিক্সস এমেণ্ডমেন্ট) বিল, ২০১৯’ এর উপর আলোচনায় অংশ নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব একথা বলেন৷

আলোচনায় অংশ নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব বলেন, দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে তপশিলী জাতি ও তপশিলী উপজাতি অংশের মানুষেরও বিরাট ভূমিকা রয়েছে৷ কিন্তু এই ভূমিকা সেভাবে মান্যতা পায়নি৷ তিনি বলেন, উত্তর পূর্বাঞ্চলে যারা বসবাস করেন তাদের বড় অংশ জনজাতি অংশের৷ তপশিলী জাতি অংশের মানুষও রয়েছেন৷ ১৯৯৯ সালে অটল বিহারি বাজপেয়ীর সরকারই প্রথম উত্তর-পূর্বাঞ্চলের উন্নয়নে পৃথক মক তৈরী করেন৷ নরেন্দ্র মোদি প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর উত্তর পূর্বাঞ্চলের উন্নয়নে ব্যাপক পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছেন৷ প্রসঙ্গক্রমে মুখ্যমন্ত্রী ইংরেজদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে বিরশা মুণ্ডা, মণিপুরের রাজকুমার টিকেন্দ্র সিং এর অবদানের কথা তুলে ধরেন৷ তিনি বলেন, এক সময় এই অঞ্চলের তপশিলী উপজাতি ও তপশিলী জাতি অংশের মানুষকে ভোটব্যাঙ্ক হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে৷ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিই এই অঞ্চলের মানুষের পেছনে দাঁড়িয়েছেন৷

রাজ্যের তপশিলী উপজাতি ও তপশিলী জাতি অংশের মানুষের উন্নয়নে বনধন যোজনা, অটল জলধারা মিশন প্রভৃতি প্রকল্পের কথা তুলে ধরে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ন্যনতম সহায়ক মূল্যে রাজ্যে যে ধান কেনা হচ্ছে তাতে তপশিলী জাতি, তপশিলী উপজাতির অংশের কৃষকগণই বেশী উপকৃত হয়েছেন৷ সবশেষে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, নরেন্দ্র মোদির নেতত্বে থাকা সরকারই সংবিধান প্রনেতা বাবা সাহেব আম্বেদকরকে সম্মান দিয়েছে৷ তিনি আশা প্রকাশ করেন আগামী দশ বছরের মধ্যে কাজের মাধ্যমেই এই অংশের মানুষের উন্নতি আরও তরান্বিত হবে৷ আলোচনায় অংশ নিয়ে রাজস্বমী নরেন্দ্র চন্দ্র দেববর্মা বলেন, আমাদের দেশে বর্ণবৈষম্য ঐতিহাসিক বিষয়৷ হাজার হাজার বছর ধরে সমাজ জীবন এভাবেই চলে এসেছে৷ এই অংশের মানুষকে সামনের দিকে এগিয়ে নিতে সংবিধানে রক্ষাকবচ রাখা হয়েছে৷ এই অংশের মানুষ সমাজের বৃহত্তর অংশ৷ তারা এগিয়ে না গেলে দেশ এগিয়ে যেতে পারবেনা৷ বিস্তারিত আলোচনায় পর বিলটি সভায় সর্বসম্মতক্রমে সমর্থন করা হয়৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *