বিজেপিমুক্ত ভারতের দিকে এগোচ্ছে দেশ, অসমে সিএএ-র বিরুদ্ধে আন্দোলনকে সমর্থন গোলামনবি আজাদের

গুয়াহাটি, ২৪ ডিসেম্বর (হি.স.) : এ মুহূর্তে দেশের মেজাজ বিজেপিমুক্ত ভারতের দিকে। ঝাড়খণ্ডে বিজেপি-র পরাজয় এর উদাহরণ। দাবি সর্বভারতীয় কংগ্রেস কমিটির সাধারণ সম্পাদক তথা সাংসদ গোলামনবি আজাদের। মঙ্গলবার কংগ্ৰেসের বরিষ্ঠ নেতা আজাদ দিশপুরে অবস্থিত হোটেল রিভিয়েরায় এক সাংবাদিক সম্মেলনে বক্তব্য পেশ করছিলেন।

দুপাশে অসম প্রদেশ কংগ্রেসের নেতা তথা বিধায়ক রকিবুল হুসেন, সাংসদ আব্দুল খালেক, বিধায়ক দেবব্রত শইকিয়াদের বসিয়ে সাংসদ গোলামনবি বলেন, ‘বিতৰ্কিত নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল পাশ করার জন্যই ঝাড়খণ্ডে পরাজিত হয়েছে বিজেপি। মহারাষ্ট্ৰ, হরিয়ানায়ও বিজেপিকে উৎখাত করেছেন জনতা। দেশ এখন বিজেপিমুক্ত হওয়ার পথে অগ্রসর হচ্ছে।’

অসমে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন-এর বিরুদ্ধে যে তীব্র আন্দোলন গড়ে উঠেছে তাকে সমর্থন করে গোলাম অসমিয়াদের ধৰ্মনিরপেক্ষতা প্রদর্শনের প্ৰশংসা ও তার জন্য ধন্যবাদ জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘অসমের মানুষ হাজার বছর ধরে ধৰ্মনিরপেক্ষতা অবলম্বন করে আসছেন। তার জন্য অসমবাসীকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করতেই হবে।’ বলেন, ‘ধৰ্ম নিয়ে অসমের মানুষ কখনও কথা বলেন না। হিন্দু-মুসলমান-খ্ৰিষ্টান, সকলের মধ্যে এখানে একতা ও সম্প্ৰীতি বিরাজমান।’

সাংবাদিক সম্মেলনের শুরুতে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন-এর বিরুদ্ধে সংগঠিত আন্দোলনে পাঁচ শহিদের প্রতি শ্ৰদ্ধাঞ্জলি জ্ঞাপন করার পাশাপাশি আহতদের আশু আরোগ্য কামনা করেছেন কংগ্রেসের কেন্দ্রীয় নেতা আজাদ। এর পরই অভিযোগ তুলে বলেন, ‘বিজেপি নেতৃত্বাধীন সরকার সমগ্র দেশে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন-এর বিরুদ্ধে আন্দোলনে জড়িত ছাত্ৰছাত্ৰীদের পেটাচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে পুলিশের দল প্ৰবেশ করে ছাত্ৰছাত্ৰীদের বেধড়ক মারপিট করেছে। ছাত্ৰদের ওপর এ-ধরনের অত্যাচার এর আগে কখনও হয়নি।’

অসমে এনআরসি প্রসঙ্গে গোলানবি আজাদ বলেন, ‘জাতীষ় নাগরিকপঞ্জি নবাষ়নের কাজ সঠিকভাবে রূপায়িত করতে পারেনি সরকার।’ তিনি মনে করেন, এনআরসি-ছুট ১৯ লক্ষের মধ্যে লক্ষ লক্ষ প্ৰকৃত ভারতীয় অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন। বলেন, ‘কিছুসংখ্যক নাগরিকের মায়ের নাম আসলেও ছেলে ও মেয়ের নাম আসেনি। এমন উদাহরণও রয়েছে, বাবার নাম বাদ পড়েছে, অথচ সেই ব্যক্তির ছেলের নাম এসেছে। এ কেমন ভূতুড়ে কাণ্ড!’ গোবামনবির বক্তব্য, ‘অসমের মতো এক রাজ্যে এনআরসি-র কাজ ঠিকমতো করতে পারেনি। অথচ প্রধানমন্ত্রী মোদী এবং কেন্দ্ৰীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্ৰী সমগ্ৰ ভারতে এনআরসি-র নবায়নের কাজ করতে চাইছেন। এটা কখনও সম্ভব হবে না।’

মোদীর সেই পুরনো প্ৰতিশ্ৰুতিগুলোর পুনর্চর্বন করে আজাদ বলেন, ‘বিদেশ থেকে কালো টাকা আনবেন বলে দেশের জনতাকে ভুয়ো প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন নরেন্দ্র মোদী। কোথায় এসেছে কালোটাকা?’ এছাড়া অভিযোগ তুলে বলেন, গত পাঁচ বছরে ২ লক্ষ বেকারকে চাকরি দিতে পারলেন না প্রতিশ্রুতি ও বিজ্ঞাপন-সর্বস্ব মোদী! মূল্যবৃদ্ধি রোধ করতে পারছেন না। কৃষকদের আমদানি দুগুণ করবেন বলেছিলেন, তা-ও পারেননি। হাজার হাজার কৃষক আত্মহত্যা করছেন।’ মোদীর বিমুদ্ৰায়ণের পদক্ষেপকে এক বিরাট বিফলতা বলে দাবি করে কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক গোলামনবি বলেন, বিমুদ্ৰায়ণের ফলে বহু শিল্পোদ্যোগ বন্ধ হয়ে গেছে, যার ফলে কোটি কোটি মানুষ চাকরি হারিয়েছেন।