ভরদুপুরে সোনামুড়ায় সুকলছাত্রীকে তুলে নিয়ে ধর্ষণ

নিজস্ব প্রতিনিধি, চড়িলাম, ২০ ডিসেম্বর৷৷ ভরদুপুরে এক নাবালিকাকে বলপূর্বক তুলে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণের ঘটনায় নারী সুরক্ষা নিয়ে প্রশ্ণ উঠেছে৷ নির্যাতিতা নাবালিকা আশঙ্কাজনক অবস্থায় জিবি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে৷ পুলিশ ধর্ষণের মামলা নিয়েছে৷ কিন্তু, কাউকেই গ্রেপ্তার করতে পারেনি৷ সোনামুড়ার এসডিপিও সৌভিক দে জানিয়েছেন, ওই ঘটনায় ব্যবহৃত গাড়িটির খোঁজ মিলেছে৷
শুক্রবার সোনামুড়া দ্বাদশ শ্রেণী বালিকা বিদ্যালয়ে নবম শ্রেনীর পরীক্ষা ছিল৷ পরীক্ষা শেষে ছাত্রীরা যখন বাড়ি ফিরছিল তখন এক ছাত্রীকে জোর করে গাড়িতে তুলে অপহরণ করে নির্জন এলাকায় নিয়ে যায় কিছু যুবক৷ সেখানে তাকে ধর্ষণ করে ঠাকুরমুড়া এলাকায় এনে চলতি গাড়ী থেকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে চম্পট দেয় অজ্ঞাত পরিচিত যুবকরা৷ স্থানীয় জনগণ রক্তাক্ত অবস্থায় ছাত্রীটিকে উদ্ধার করে সোনামুড়া হাসপাতালে নিয়ে যান৷ কিন্তু, গাড়িটি তারা আটক করতে পারেননি৷ চিকিৎসকরা তার অবস্থা আশঙ্কাজনক দেখে মেলাঘর মহকুমা হাসপাতালে তাকে স্থানান্তর করেন৷


স্থানীয় জনগণের বক্তব্য, একটি কালো রঙের অল্টো গাড়ি থেকে রক্তাক্ত অবস্থায় ওই ছাত্রীকে ফেলে যায় গাড়িতে থাকা যুবকরা৷ ঘটনার খবর পেয়ে হাসপাতালে ছুটে আসে সোনামুড়া থানার পুলিশ এবং ওই ছাত্রীর পরিবারের লোকজন৷ সোনামুড়া হাসপাতালে তার প্রাথমিক চিকিৎসা করা হয়৷ হাসপাতালের চিকিৎসক তিমির চক্রবর্তী জানান, নির্যাতিতার দেহের বিভিন্ন জায়গায় আঘাতের চিহ্ণ রয়েছে৷ গোপনাঙ্গেও রক্তের ছাপ মিলেছে৷ মাথায় আঘাতের চিহ্ণ রয়েছে৷ তবে তাকে ধর্ষণ করা হয়েছে কিনা স্পষ্ট নয়, জানান তিনি৷


ডাঃ চক্রবর্তীর মতে, ওই নাবালিকা শ্লীলতাহানির শিকার হয়েছেন ঠিকই৷ কিন্তু তাকে ধর্ষণের করা হয়েছে কিনা তা নিশ্চিত হওয়ার জন্য নির্যাতিতাকে মেলাঘর হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে৷ এদিকে, মেলাঘর হাসপাতাল থেকে নির্যাতিতাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য জিবি হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে৷
ওই ঘটনায় পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে৷ প্রাথমিক ভাবে পুলিশ জানতে পেরেছে পরীক্ষা দিয়ে বাড়ি ফিরার পথে বিদ্যালয়ের পাশের একটি ষ্টেশনারী দোকানে গিয়েছিল ছাত্রীটি৷ দোকান থেকে বের হওয়া মাত্রই মেয়েটিকে কালো রঙের একটি আল্টো গাড়ীতে তোলে নিয়ে যায় অজ্ঞাত পরিচয় কয়েকজন যুবক৷
সোনামুড়া থানার মহিলা সাব-ইন্সপেক্টর জানিয়েছেন, নির্যাতিতার বয়ান অনুযায়ী গত ১৮ ডিসেম্বর থেকে একটি অজানা ফোন নাম্বারে একটি ছেলের সাথে কথা হত৷ আজ ওই ছেলেটি তাকে বলপূর্বক তুলে নিয়ে গিয়েছিল৷ সোনামুড়া এসডিপিও সৌভিক দে জানিয়েছেন, ওই নাবালিকার শারীরিক অবস্থা ভাল নয়৷ তাই, তাকে বেশি জিজ্ঞাসাবাদ করা যায়নি৷ ফলে, তার সাথে কি ঘটেছে বিস্তারিত জানা সম্ভব হয়নি৷ তিনি বলেন, ওই ঘটনায় ব্যবহৃত গাড়িটি খোঁজ মিলেছে৷ গাড়ির সূত্র ধরে ওই ঘটনার সাথে জড়িতদের গ্রেপ্তার করা সম্ভব হবে বলে দাবি করেন তিনি৷


প্রত্যক্ষদর্শীদের বক্তব্য, সোনামুড়ার ঠাকুরমুড়া এলাকায় চলতি গাড়ী থেকে ওই নাবালিকাকে ফেলে দিয়ে খেদাবাড়ির ওএনজিসি প্রজেক্টের দিকে পালিয়ে যায় গাড়িটি৷ সোনামুড়া থানার তদন্তকারী অফিসার জানিয়েছেন, ওই নাবালিকার বাবা মামলা করেছেন৷ মামলা নম্বর ১৮৫/১৯৷ ভারতীয় ফৌজদারি দণ্ডবিধি ৩৫৬ ও ৩৭৬ এবং পক্সো আইনের ৬ ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে৷ ভরদুপুরে নাবালিকাকে তুলে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণের ঘটনায় নারী সুরক্ষা নিয়ে প্রশ্ণ উঠেছে৷