ফঁড়েদের দাপটেই বাজারে পেঁয়াজের অগ্ণিমূল্য, খোলসা করলেন এসডিএম

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ৪ ডিসেম্বর ৷৷ পেঁয়াজের ঝাঁজে গৃহস্থের নাভিশ্বাস উঠলেও আদৌ দাম নাগালের মধ্যে আসবে কি না তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ দেখা দিয়েছে৷ আজ রাজ্যে বিভিন্ন বাজারে পেঁয়াজ সর্বোচ্চ ১২৫ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে৷ তবে, ফঁড়েদের দাপটেই বাজারে পেঁয়াজের অগ্ণিমূল্য, তার খোলাসা করলেন সদর মহকুমা শাসক অসিম সাহা৷ আজ তিনি বাজার পরিদর্শনে গিয়ে জানিয়েছেন, পাইকারী ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে পেঁয়াজ বিভিন্ন লোকের মারফত ক্রেতাদের কাছে পৌছাচ্ছে৷ তাতে, দামে ফারাক হচ্ছে৷ এই অব্যবস্থার বিরুদ্ধে কোনও দাওয়াই দিলেন না মহকুমা শাসক৷ ফলে, পেঁয়াজের দাম কবে নিয়ন্ত্রণে আসবে তা বলা মুশকিল৷ খাদ্য মন্ত্রী মনোজ কান্তি দেবও নায্য মূল্যের দোকানের মাধ্যমে পেঁয়াজ সরবরাহের পরিকল্পনা বাতিল করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন৷ কারণ, পরিবহণ খরচ মিটিয়ে নায্য মূল্যের দোকানে পেঁয়াজ সরবরাহ করা লাভজনক হচ্ছে না৷


আজ রাজ্যের বিভিন্ন বাজারে পেঁয়াজের অগ্ণিমূল্য নিয়ে মানুষের মধ্যে চরম অসন্তোষ দেখা গেছে৷ মহকুমা প্রশাসন বাজার পরিদর্শন করেছে৷ এদিন সদর মহকুমা শাসক অসিম সাহা সদলবলে মহারাজগঞ্জ বাজারে পরিদর্শন করার পাশাপাশি পেঁয়াজ ব্যবসায়ীদের সাথে বৈঠক করেছেন৷ শুধু পেঁয়াজ নয়, আলু ব্যবসায়ীদের সাথেও তিনি কথা বলেছেন৷ এ বিষয়ে সদর মহকুমা শাসক জানান, পেঁয়াজের খুচরো ও পাইকারী দরে যথেষ্ট ফারাক দেখা যাচ্ছে৷ শুধু তাই নয়, একেক বাজারে পেঁয়াজের বিক্রয়মূল্য ভিন্ন রয়েছে৷ তিনি বলেন, পেঁয়াজের মূল্য আড়ৎগার মহারাজগঞ্জ বাজারে রয়েছে৷ পেঁয়াজ ব্যবসায়ীরা বহিঃরাজ্য থেকে কিনে আনছেন৷ তিনি জানান, আজ পাইকারী ব্যবসায়ীরা ৯২ থেকে ৯৫ কেজি দরে খুচরো ব্যবসায়ীদের কাছে পেঁয়াজ বিক্রি করেছেন৷ কিন্তু, ফঁড়েদের কারণে ক্রেতারা অনেক বেশি দাম দিয়ে পেঁয়াজ কিনছেন৷ তাঁর দাবি, অন্তত চারটি হাত বদল হয়ে পাইকারি বাজার থেকে পেঁয়াজ গৃহস্থের ঘড়ে পৌছাচ্ছে৷ স্বাভাবিক ভাবেই মূল্য বৃদ্ধি সাধারণ মানুষকে দিশেহারা করে ফেলেছে৷


সদর মহকুমা শাসক বলেন, আপাতত রাজ্যের পাইকারী ব্যবসায়ীরা গুয়াহাটি থেকে পেঁয়াজ করছেন৷ ব্যবসায়ীদের দাবি অনুযায়ী, তাঁদের চড়া দামে পেঁয়াজ কিনতে হচ্ছে৷ ফলে, পেঁয়াজের মূল্য নিয়ন্ত্রণে আসছে না৷ সদর মহকুমা শাসক জানান, বাজার গুলিতে নজরদারী জারি রয়েছে৷ বেআইনী মজুতদারদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ আছে৷ তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, আগামী কিছু দিনের মধ্যে পেঁয়াজের মূল্য স্বাভাবিক হতে পারে৷


পেঁয়াজের মূল্য বৃদ্ধি নিয়ে খাদ্যমন্ত্রী মনোজ কান্তি দেব বলেন, রাজ্যে গণবন্টন ব্যবস্থায় পেঁয়াজ সরবরাহের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছিল৷ কিন্তু, নানা জটিলতার কারণে তা সম্ভব হয়নি৷ তিনি বলেন, নাসিক থেকে নাফেডের মাধ্যমে ১৫.৭০ পয়সা কেজি দরে ১৮৫০ মেট্রিকটন পেঁয়াজ রাজ্যের জন্য ব্যবস্থা হয়েছিল৷ কিন্তু, পরিবহন জটিলতার কারণে ওই পেঁয়াজ রাজ্যে আনা সম্ভব হয়নি৷ তিনি বলেন, ওই পেঁয়াজ রেলের মাধ্যমে আনতে চেয়েছিলাম৷ কিন্তু, ৮ ঘন্টায় পেঁয়াজ কনটেইনারে লোড করার রেলওয়ের শর্ত মানেনি নাফেড৷ তাই, বিকল্প ব্যবস্থা হিসেবে সড়ক পথে পেঁয়াজ আনার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছিল৷ কিন্তু, তাতেও গুয়াহাটি দিয়ে রাজ্যে পেঁয়াজ আনার ক্ষেত্রে প্রচুর পরিবহন ব্যয় হচ্ছে৷ তাই, সেই পথেও পেঁয়াজ আনা যায়নি৷ তাঁর দাবি, রাজ্যে ব্যবসায়ীদের সাথে ঘনঘন পেঁয়াজের মূল্য বৃদ্ধি নিয়ে আলোচনা করা হচ্ছে৷ তাছাড়া, বেআইনি মজুতদারদের বিরুদ্ধে প্রশাসন কঠোর পদক্ষেপ নিচ্ছে৷ এই ভাবেই পেঁয়াজের মূল্য স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা চলছে, দাবি করেন খাদ্য মন্ত্রী৷


এদিকে, রাজ্যের দ্রব্যমূল্যের ক্রমাগত উর্দ্ধগতি, নারীনির্যাতন, হত্যা, ইত্যাদির প্রতিবাদ করে নিজ বাসভবনে সাংবাদিক সম্মেলনের আয়োজন করলেন প্রাক্তন পিসিসি সভাপতি গোপাল রায়, রাজ্যে ক্রমাগত দ্রব্যমূল্যের উর্দ্ধগতি নারী নির্যাতন, হত্যা, বিশ্ব দিব্যাঙ্গন দিবসে দিব্যাঙ্গন মেয়েকে পুড়িয়ে হত্যা, এক কথায় এক অস্বাভাবিক পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে দিন অতিবাহিত হচ্ছে সাধারণ মানুষের অথচ মুখ্যমন্ত্রীর সেই দিকে কোন দৃষ্টিপাত নাই৷ জনসভায় শুধু একের পর এক উল্টা পাল্টা মন্তব্য করে চলেছেন৷ রাজ্যে যে সরকারটা চলছে সেটা হচ্ছে জুমলা সরকার৷

জই করেনি ২০ মাসের এই সরকার৷ নির্বাচনের পূর্বে ভিষণ ডকুমেন্ট নিয়ে বলেছিল সরকার আসলে ১০৩২৩ শিক্ষকদের ব্যাপারটি মানবিকতার দৃষ্টিতে দেখে ব্যবস্থা করবে কিন্তু এখন যখন তার চাকরীচ্যুত হতে যাচ্ছে তখন কিন্তু সরকার নীরব দর্শক৷ বুধবার আগরতলায় নিজ বাসভবনে এক সাংবাদিক সম্মেলনে এই তথ্যগুলি তোলে ধরে সরকারে সমালোচনা করেন৷ প্রাক্তন বিধায়ক কংগ্রেস নেতা গোপাল রায়৷ গোপাল বাবু বলেন দেশের সঙ্গে তাল মিলিয়ে রাজ্যেও বেকার বৃদ্ধি পাচ্ছে৷ দ্রব্যমূল্য মানষের হাতের নাগালের বাইরে চলে গেছে এ যেন এক অস্বস্তিকর অবস্থা৷


তিনি বলেন সারা দেশে মোদি সরকার এর আমলে এমন একটা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে দেশের মানুষ কোনদিন ভাবতে পারেনি এমন পরিস্থিতির মুখো মুখি হতে হবে৷
রাজ্যে ক্রমাগত দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে কোন রাজনৈতিক দল মাঠে না নামলেও গোপাল বাবু পেঁয়াজের মালা গলায় পড়ে সাংবাদিক সম্মেলনে প্রতিবাদ জানালেন৷