জনজাতিদের উন্নয়নে ৮৮০২ কোটি ৭৪ লক্ষ টাকার বিশেষ প্রকল্পে মন্ত্রিসভার অনুমোদন

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ৪ ডিসেম্বর৷৷ রাজ্যের শিক্ষা দপ্তরে সুুপার-৩০ নামক একটি নতুন প্রকল্পের অনুমোদন দিয়েছে রাজ্য মন্ত্রিসভা৷ সেই সাথে জনজাতি এলাকায় সঠিক উন্নয়নে রাজ্য সরকার ৮৮০২ কোটি ৭৪ লক্ষ টাকার একটি বিশেষ প্যাকেজ কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে পাঠানোর জন্যও মন্ত্রিসভা অনুমোদন দিয়েছে৷মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে মহাকরণে সাংবাদিক সম্মেলনে শিক্ষামন্ত্রী রতন লাল নাথ এ সংবাদ জানান৷


শিক্ষামন্ত্রী বলেন, শিক্ষাকে রাজ্য সরকার সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়েছে৷ রাজ্যের ছাত্রছাত্রীরা দ্বাদশের পর সর্বভারতীয় বিভিন্ন প্রবেশিকা পরীক্ষায় যোগ্যতা অর্জন করে যেন সর্বভারতীয় বিখ্যাত কলেজগুলিতে পঠনপাঠনের সুুযোগ পেতে পারে তার জন্যই এই প্রকল্পটি নেওয়া হয়েছে৷ এতে ত্রিপুরা মধ্যশিক্ষা পর্ষদ পরিচালিত মাধ্যমিক পরীক্ষায় উর্ত্তীর্ণ প্রতিবছর ৩০ জন করে ছাত্রছাত্রীকে এই প্রকল্পের সুুযোগ দেওয়া হবে৷ ২০২০-২১ বছর থেকে এই প্রকল্পটি কার্যকর হবে৷ মেধার ভিত্তিতে ছাত্রছাত্রীদের নির্বাচন করা হবে৷ রাজ্য সরকারের সংরক্ষণ নীতিও মানা হবে এক্ষেত্রে৷ একাদশ শ্রেণীতে শুধুমাত্র বি’ান বিভাগে পড়য়া ছাত্রছাত্রীরাই এই প্রকল্পের সুুযোগ পাবে৷ নির্বাচনের পর ছাত্রছাত্রীরা তাদের ইচ্ছে অনুযায়ী বহির্রাজ্যে কোচিং নিতে পারবে৷ সাথে সাথে একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণীর পঠনপাঠনও ঐ রাজ্যেই চালিয়ে যেতে পারবে৷ শুধুমাত্র দুই বছর অর্থাৎ একাদশ ও দ্বাদশ পড়ার সময় রাজ্য সরকার তাদের এই সুুযোগ প্রদান করবে৷ এতে প্রতি ছাত্র প্রতি বছর ২ লক্ষ ৪০ হাজার টাকা করে পাবে৷ রাজ্য সরকারের প্রথম বছর ব্যয় হবে ৭২ লক্ষ টাকা এবং পরের বছর থেকে ১ কোটি ৪৪ লক্ষ টাকা করে ব্যয় হবে৷


মন্ত্রী শ্রীনাথ আরও জানান, রাজ্য মন্ত্রিসভা জনজাতিদের আর্থসামাজিক মানোন্নয়ন, ভাষা, কৃষি, সংসৃকতিগত উন্নয়নেও গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়েছে৷ জনজাতি এলাকায় সঠিক উন্নয়নে রাজ্য সরকার ৮৮০২ কোটি ৭৪ লক্ষ টাকার একটি বিশেষ প্যাকেজ কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে পাঠানোর জন্যও মন্ত্রিসভা অনুমোদন দিয়েছে৷ প্রসঙ্গক্রমে তিনি বলেন জনজাতিদের আর্থসামাজিক, ভাষা, ক’ষ্টি-সংস্ক’তির উন্নয়নে রাজ্য মন্ত্রিসভা ১ জানুয়ারী ২০১৯-এ এইরূপ একটি স্পেশাল প্যাকেজ তৈরি করে৷ সেটি ছিল ৮৩৮৯ কোটি টাকার৷ রাজ্য সরকার ১৪ জানুয়ারী ২০১৯ এ কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে যথারীতি এই প্রকল্পটি অনুমোদনের জন্য পাঠায়৷ পরবর্তীতে কেন্দ্রীয় সরকার প্রকল্পটি পরীক্ষা নিরীক্ষা করে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রকে পাঠায়৷ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রকও বিষয়টি পরীক্ষা নিরীক্ষা করে৷ পরে উক্ত প্রকল্পটি খতিয়ে দেখার জন্য কেন্দ্রীয় সরকার একটি হাইপাওয়ার টিম গঠন করে রাজ্য সরকারের কাছে এ সম্পর্কিত বিভিন্ন বিষয় জানতে চায়৷ এই হাইপাওয়ার কমিটি রাজ্যের জনজাতি এলাকা পরিদর্শন করেন এবং রাজ্য সরকারকে বিভিন্ন পরামর্শ দেন৷


জনজাতি এলাকায় সঠিক উন্নয়নে বিভিন্ন ক্ষেত্রগুলিও নির্বাচন করা হয়৷ এই হাইপাওয়ার কমিটিতে রাজ্য সরকারেরও চারজন প্রতিনিধি রয়েছেন৷ রাজ্য সরকার এই হাইপাওয়ার কমিটির সুুপারিশ মেনে পুনরায় ৮৮০২ কোটি ৭৪ লক্ষ টাকার প্রকল্প তৈরী করে যা আজকের মন্ত্রিসভায় অনুমোদিত হয় কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে পাঠানোর জন্য৷ মন্ত্রী শ্রীনাথ কোন কোন ক্ষেত্রে কত টাকার প্রকল্প নেওয়া হয়েছে তাও উল্লেখ করেন৷


তিনি জানান, ফিশারীতে ৬৭ কোটি টাকা, মাধ্যমিক শিক্ষায় ৪০০ কোটি ৬৪ লক্ষ, প্রাণীসম্পদ বিকাশে ৫৭ কোটি ৬২ লক্ষ, স্বাস্থ্যে ৯৪৯ কোটি ৪৮ লক্ষ, জলসম্পদে ৭৫ কোটি, ক’ষিতে ৬০৩ কোটি ১৩ লক্ষ টাকা, হস্ততাত হস্তকারু ও রেশম শিল্পে ১০৭ কোটি ৫০ লক্ষ টাকা, ককবরক ও অন্যান্য সংখ্যালঘু ভাষা উন্নয়নে ৫৫ কোটি, জনজাতি কল্যাণে ৪৮৪৮ কোটি ৭৩ লক্ষ, প’ায়েতে ১০ কোটি ৫১ লক্ষ, শিল্প ও বাণিজ্যে ৩১৭ কোটি ১৬ লক্ষ টাকা, উচ্চশিক্ষায় ১৭০ কোটি টাকা, পূর্ত (প্রধানমন্ত্রী গ্রামীণ সড়ক যোজনা ব্যাতীত) ৯৯৫ কোটি ৬৫ লক্ষ টাকা, যুব বিষয়ক ও ক্রীড়ায় ৬০ কোটি ৩২ লক্ষ টাকা, পর্যটনে ৮৫ কোটি টাকা ধরা হয়েছে৷