হায়দরাবাদে গণধর্ষণ করে পুড়িয়ে খুনের ঘটনায় উত্তাল তেলেঙ্গানা, আঁচ দিল্লিতেও

হায়দরাবাদ, ৩০ নভেম্বর (হি.স.) : হায়দরাবাদের শামশাবাদে মহিলা পশুচিকিত্সককে গণধর্ষণ করে পুড়িয়ে খুনের ঘটনায় উত্তাল তেলেঙ্গানা | ঘটনার আঁচ পরেছে রাজধানী দিল্লিতেও | চিকিৎসকের গণধর্ষণ ও খুনের প্রতিবাদে শনিবার পথে নেমেছে হায়দরাবাদ। বিক্ষোভকারীদের দাবি, অপরাধীদের যত দ্রুত সম্ভব ফাঁসিতে ঝোলাতে হবে। প্রতিবাদীদের ওপর লাঠিও চালিয়েছে পুলিশ। তবে আন্দোলন থামার নয় | এই ঘটনার প্রতিবাদে দিল্লির সংসদ ভবনের বাইরের রাস্তায় ধরনায় বসেন এক তরুণী ।

মহিলা পশুচিকিত্সককে গণধর্ষণ ও নির্মম খুনের জেরে স্তব্ধ গোটা দেশ। সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রতিবাদ চলছে, অপরাধীদের কঠোরতম শাস্তি চাইছেন মানুষ। হায়দরাবাদের মানুষ পথে নেমেছেন, এঁদের মধ্যে রয়েছেন মৃতার আপনজন ও প্রতিবেশীরা। বেশ কয়েকটি মহিলা সংগঠন শাদনগর এলাকায় মোমবাতি মিছিলের ডাক দিয়েছে, তাদের দাবি, অপরাধীদের আদালতে নিয়ে যাওয়া চলবে না। আইনি পথে না গিয়ে প্রথমেই ফাঁসি দিতে হবে তাদের। ভিড় নিয়ন্ত্রণে আনতে বিক্ষোভকারীদের ওপর পুলিশ লাঠিচার্জ করেছে।কিন্তু তাতে বিক্ষোভ কমেনি |

এদিকে, এই ঘটনার প্রতিবাদে দিল্লির সংসদ ভবনের বাইরের রাস্তায় ধরনায় বসেন এক তরুণী । তাঁর নাম অনু দুবে, তাঁকে আটক করেছে দিল্লি পুলিশ । থানায় নিয়ে গিয়ে জেরা করা হয়েছে ৪-৫ ঘণ্টা। আর বিক্ষোভ না দেখানোর শর্তে তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হলেও অনু থানার বাইরে এসে বলেছেন, মহিলা পুলিশকর্মীরা তাঁর গায়ে নখ ফুটিয়েছেন, মারধর করেছেন। হাতের তালুতে আঘাতের দাগও দেখিয়েছেন তিনি।

 অনুর বক্তব্য, তিনি ধরনায় বসেছেন, কারণ তিনি হায়দরাবাদের তরুণীর মত আগুনে পুড়ে মরতে চান না। প্রতি ২০ মিনিটে কোনও না কোনও মেয়ের ধর্ষণ হচ্ছে। এভাবে বারবার ধর্ষণের ঘটনা আর সহ্য করতে পারছেন না তিনি, রাতের পর রাত ঘুমোতে পারেন না। দিল্লি পুলিশ তাঁকে যন্তর মন্তরে ধর্নায় বসার জন্য বলেছে।

উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার তেলঙ্গানার ৪৪ নম্বর জাতীয় সড়কের একটি কালভার্টের নীচ থেকে ওই তরুণী চিকিত্সকের আধপোড়া দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। কল্লরু গ্রামের একটি পশু হাসপাতালে কাজ করতেন তিনি। বুধবার সন্ধ্যা ৬টা নাগাদ শামশাবাদ টোল প্লাজার কাছে নিজের স্কুটারটি পার্ক করে একটি ভাড়ার ট্যাক্সি নিয়ে গোচিবাওলিতে এক চর্ম চিকিত্সকের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন। ফিরে এসে দেখেন স্কুটারের পিছনের চাকা পাংচার হয়ে গিয়েছে। রাত তখন ৯টা বেজে গিয়েছিল। তরুণী তাঁর বোনকে জানিয়েছিলেন দুই ট্রাকচালক স্কুটারটি সারাতে তাঁকে সাহায্য করবে বলছে। তখনই তাঁর বোন তরুণীকে ট্যাক্সি ধরে বাড়ি ফিরে আসার কথা বলেন। পুলিশকে তরুণীর বোন জানিয়েছেন, ওটাই ছিল তাঁদের দু’জনের মধ্যে শেষ কথা। দিদি না ফেরায় বোন ফের রাত ১০টা নাগাদ ফোন করেন। কিন্তু মোবাইল বন্ধ ছিল। পর দিন সকালে শামশাদের আউটার রিং রোডের আন্ডারপাসের নীচে তরুণী চিকিত্সকের পোড়া দেহ উদ্ধার হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *