কদমতলায় সাতসকালে উঠানে অগ্ণিদগ্দ হয়ে মৃত্যু গৃহবধূর

নিজস্ব প্রতিনিধি, চুড়াইবাড়ি, ২৪ নভেম্বর৷৷ সাতসকালে রহস্যজনকভাবে নিজ বাড়ির উঠানে অগ্ণিদগ্দ গৃহবধূর মৃতদেহ উদ্ধারে তীব্র চাঞ্চল্য বিরাজ করছে৷ মৃতার নাম উত্তমা নাথ(৪৫) স্বামী বিমল কুমার নাথ৷ কদমতলা গ্রাম পঞ্চায়েতের ৭ নং ওয়ার্ডের বেলতলা রোডের বাসিন্দা৷ কদমতলা থানার পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে অগ্ণিদগ্দ মৃতদেহটি উদ্ধার করে কদমতলা হাসপাতালের মর্গে ময়নাতদন্তের জন্য নিয়ে এসেছে৷ পাশাপাশি পুলিশ একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা হাতে নিয়ে তদন্ত শুরু করে দিয়েছে৷


ঘটনার বিবরণে প্রকাশ, উত্তর জেলার কদমতলা থানাধীন কদমতলা গ্রাম পঞ্চায়েতের ৭ নং ওয়ার্ডের বেলতলা এলাকার বাসিন্দা বিমল কুমার নাথের স্ত্রী উত্তমা নাথের অগ্ণিদগ্দ মৃতদেহ নিজ উঠানে পড়ে থাকতে দেখতে পায় উনার একমাত্র ছেলে বিক্রম নাথ৷ সাত সকালে মায়ের অগ্ণিদগ্দ মৃতদেহ বাড়ির উঠানে পড়ে থাকতে দেখে ছেলে বিক্রম চিৎকার চেচামেচি করলে মৃতার স্বামী অসুস্থ প্যারালাইজড বিমল কুমার নাথ ঘর থেকে বের হয়ে নিজের স্ত্রীর মৃতদেহ দেখতে পান৷তড়িঘড়ি খবর দেওয়া হয় কদমতলা থানায়৷ কদমতলা থানার এসআই অপু দাস বিশাল পুলিশবাহিনী নিয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন৷ পুলিশি প্রাথমিক তদন্তে ঘটনাস্থল থেকে কেরোসিনের একটি ড্রাম এবং দুটি ড্রামের মুখা উদ্ধার করেছে পুলিশ৷ আর তাতে স্পষ্ট কেরোসিন দিয়ে আগুন লেগে মৃত্যু হয়েছে উত্তমার৷কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় হলো মৃতার আত্মীয়স্বজনসহ বেলতলা গ্রামের আশপাশে কোন জনগণ ঘটনাস্থলে আসেননি৷কদমতলা গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধানসহ মৃতার আত্মীয়-স্বজন ও এলাকাবাসী বাড়ির বাইরে থেকে ঘটনাটি প্রত্যক্ষ করেন৷অবশেষে মৃতা উত্তমা নাথের অগ্ণিদগ্দ নিথর দেহটি স্বামী ও পুত্র সহযোগে কদমতলা থানার পুলিশ মিলে গাড়িতে তুলে ময়নাতদন্তের জন্য কদমতলা গ্রামীণ হাসপাতালের মর্গে নিয়ে আসে৷পাশাপাশি কদমতলা থানার পুলিশ একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা হাতে নিয়ে তদন্ত শুরু করে দিয়েছে৷ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে আসলে পুলিশি তদন্তে অনেকটা সহজ হবে৷


এদিকে জানা গেছে মৃতা উত্তমা নাথ মানসিকভাবে কিছুটা ভারসাম্যহীন ছিলেন৷স্বামী বিমল কুমার নাথ মাস দুয়েক পূর্বে প্যারালাইজড হয়ে নিজ ঘরে বন্দি৷ এক ছেলে বিক্রম নাথ মা-বাবাকে দেখাশোনা করত৷ তবে গতকাল রাতে একমাত্র পুত্র বিক্রম নাথ নিজ বাড়িতে না থেকে পাশের বাড়িতে রাত্রি যাপন করেছিল৷আর সকালবেলা নিজ বাড়িতে এসে মায়ের অগ্ণিদগ্দ মৃতদেহ উঠানে পড়ে থাকা অবস্থায় দেখতে পায়৷এমনকি মৃতার দেবর-ভাসুর সহ আত্মীয় পরিজনরাও এ বিষয়ে মুখ খুলতে নারাজ৷শুধু মুখ খুলতে নারাজ তা নয়,কিভাবে কোথায় আগুন লেগে উত্তমা নাথের মৃত্যু হল সে ব্যাপারেও তারা কিছুই জানেননা৷ আত্মীয় পরিজনদের মুখ না খোলাতে জনমনে প্রশ্ণ দেখা দিয়েছে৷ কিন্তু প্রাথমিকভাবে পরিলক্ষিত হলো মৃতার মুখের জিববাটি অনেকটা বাইরে বের করা অবস্থায়৷শরীরের অধিকাংশই পুড়ে গিয়েছে৷ মৃতার আত্নীয় স্বজন ও এলাকাবাসীর নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করাতে পুলিশ এই ঘটনার কোনো কূলকিনারা খুঁজে পাচ্ছে না৷তবে এই মৃত্যুটি স্বাভাবিক মৃত্যু নয় বলেও পুলিশের প্রাথমিক ধারণা৷ পাশাপাশি মৃতা উত্তমা নাথের দেওর অমল কুমার নাথ জানান, উনারাও সকালবেলা বাড়ির উঠানে পড়ে থাকা অবস্থায় মৃতদেহটি দেখতে পান৷

কিভাবে আগুন লেগেছে বা কিভাবে মৃত্যু হয়েছে সে ব্যাপারে উনারা কিছুই জানেন না বলেও জানান৷এমনকি কদমতলা গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধানেরও একি বক্তব্য৷
অপরদিকে কদমতলা থানার ওসি কৃষ্ণধন সরকার জানান, ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে অগ্ণিদগ্দ অবস্থায় এক গৃহবধূর মৃতদেহ উদ্ধার করে কদমতলা হাসপাতালের মর্গে নিয়ে এসেছেন৷ পাশাপাশি ওসি আরো জানান, উনারা একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা হাতে নিয়ে তদন্ত শুরু করে দিয়েছেন৷বর্তমানে গোটা ঘটনাটি রহস্যে মোড়া৷ তবে এটি হত্যা না আত্মহত্যা তা পুলিশি তদন্তে বেরিয়ে আসবে৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *