নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ২০ নভেম্বর৷৷ দিল্লি গিয়েও কোন ফায়দা হয়নি৷ তাই, মিজোরামে ব্রূ শরণার্থী প্রত্যাবর্তনে এবার নতুন শর্ত তুলে ধরেছেন তাঁদের নেতৃবৃন্দ৷ ডাম্পা ব্যাঘ্র সংরক্ষিত অঞ্চল ফিরিয়ে দিলে এবং তিনটি কেন্দ্রীয় মন্ত্রকের অধীন বিশেষ প্যাকেজ ঘোষণা হলে তবেই তারা মিজোরামে ফিরে যেতে রাজি, জানালেন ব্রূ শরণার্থী সংগঠন এমবিডিপিএফ সাধারণ সম্পাদক ব্রোনো মসাহ৷ তাঁর সাফ কথা, মিজোরাম সরকার তাঁদের কোন আবেদনে সম্মত হয়নি৷ শুধু তাই নয়, কেন্দ্রীয় সরকারও তাদের বোঝাতে ব্যর্থ হয়েছে৷ তাই, ওই দুইটি দাবি পূরণের আশ্বাস মিললে তবেই ব্রূ শরণার্থীরা মিজোরামে ফিরে যাবেন৷ সাথে তিনি যোগ করেন, মিজোরাম কিংবা ত্রিপুরা হোক, তাঁদের জীবনজীবিকা সুনিশ্চিত করা কেন্দ্রীয় সরকারের দায়িত্ব৷ ফলে, এ-বিষয়ে কেন্দ্রীয় সরকারই সিদ্ধান্ত নিক৷ তাঁরা কোন আপত্তি করবেন না, সাফ জানিয়েছেন তিনি৷
![](https://jagarantripura.com/wp-content/uploads/2019/11/DSC_0499-1024x678.jpg)
আজ আগরতলা প্রেস ক্লাবে সাংবাদিক সম্মেলনে এমবিডিপিএফ সাধারণ সম্পাদক ব্রোনো মসাহ কেন্দ্র ও মিজোরাম সরকারের বিরুদ্ধে এক ডজন অভিযোগ তুলে ধরেন৷ বিশেষ করে মিজোরাম সরকারের অনীহার কারণেই ত্রিপুরায় আশ্রিত ব্রূ শরণার্থীরা স্বভূমে ফিরে যেতে পারছেন না বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি৷ তাঁর কথায়, ১৯৯৭ সালের পর থেকে ত্রিপুরায় আশ্রিত ব্রূ শরণার্থীদের মিজোরামে প্রত্যাবর্তনে একাধিক চেষ্টা হয়েছে৷ কিন্তু, প্রতিবারই মিজোরাম সরকার তাঁদের কোন দাবি মানতে প্রস্তুত ছিল না৷ তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত আমাদের অনেক দাবি আমরা ছেড়ে দিয়েছি৷ মিজোরাম সরকার মানবে তাতেও আমরা আপত্তি করিনি৷ তিনি বলেন, আমাদের অনেক দাবি বাদ দিয়েই দিল্লিতে ব্রূ শরণার্থী প্রত্যাবর্তনে চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছি৷ কিন্তু, প্রত্যাবর্তনে যে পরিস্থিতি নজরে এসেছে তাতে মিজোরামে ফিরে যাওয়া সম্ভব নয়৷
তিনি বলেন, ডাম্পা ব্যাঘ্র সংরক্ষিত এলাকায় কোন বাঘের অস্তিত্ব নেই৷ অথচ, ওই এলাকা আমাদের ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে না৷ তাঁর দাবি, ওই এলাকায় এক সময় রিয়াং জনজাতিদের বসবাস ছিল৷ আজ তিনি বলেন, ওই ডাম্পা ব্যাঘ্র সংরক্ষিত এলাকা ব্রূ শরণার্থীদের ফিরিয়ে দিতে হবে৷ পাশাপাশি, ডোনার, উপজাতি কল্যাণ এবং সংখ্যালঘু মন্ত্রকের অধীনে স্থায়ী উন্নয়ন প্রকল্প ঘোষণা করতে হবে৷ তবেই, ত্রিপুরায় আশ্রিত ব্রূ শরণার্থীরা মিজোরামে ফিরে যাবেন৷ সাথে তিনি যোগ করেন, বর্তমানে ব্রূ শরণার্থীদের যে প্যাকেজ দেওয়া হয়েছে তার অতিরিক্ত ওই দুইটি দাবি মানতে হবে৷
এদিন তিনি বলেন, আমরা শিবিরের জীবন যাপন করতে চাই না৷ তাই, ব্রূ শরণার্থীদের স্থায়ী সমাধানের অনুরোধ জানাচ্ছি৷ তাঁর কথায়, আমরা মিজোরামে ফিরে যেতে চাই৷ কিন্তু, সবকিছু কেন্দ্রীয় সরকারের উপর নির্ভর করছে৷ তাঁর বক্তব্য, মিজোরাম কিংবা ত্রিপুরা হোক, স্থায়ীভাবে বসবাসের ব্যবস্থা যেখানেই করবে কেন্দ্রীয় সরকার তাতে কোন আপত্তি থাকবে না আমাদের৷
তাতে স্পষ্ট, ব্রূ শরণার্থীদের ত্রিপুরায় স্থায়ী বসবাসের ব্যবস্থা হলে তাঁরা এখানেই থেকে যাবেন৷ কিন্তু, ত্রিপুরা সরকার ৪০০-৫০০ পরিবারকে এই রাজ্যে স্থায়ী বসবাসের ব্যবস্থা দিতে চাইছে৷ এমনই চিঠি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর কাছে পাঠিয়েছেন ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী৷ সেক্ষেত্রে ব্রূ শরণার্থীদের নিয়ে সমস্যার সহসা সমাধান হবে বলে মনে হচ্ছে না৷