নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ১৫ নভেম্বর৷৷ ফের রাজ্যে সাইবার ক্রাইম৷ এবারে এক রাতে এসবিআই’র আটজন গ্রাহকের একাউন্টে থাবা বসাল দুসৃকতিরা৷ নূ্যনতম ১১ হাজার থেকে শুরু করে ৮০ হাজার টাকা পর্যন্ত হাতিয়ে নিয়েছে সাইবার ক্রিমিনালরা৷ এই ব্যাপারে আগরতলা পশ্চিম থানায় একটি এফআইআর দায়ের করা হয়েছে৷ পুলিশ অবশ্য তদন্ত শুরু করেছে৷ এক্ষেত্রে এসবিআই’র মেলারমাঠস্থিত রাজ্য প্রধান কার্য্যালয়ের সাথে যোগাযোগ করে গ্রাহকরা কোন সদুত্তর না পেয়ে রীতিমতো হতাশ হয়ে পড়েছেন৷ পুলিশ অবশ্য জানিয়েছে তদন্ত শুরু করা হয়েছে৷
![](https://jagarantripura.com/wp-content/uploads/2019/11/Grahic-Debu-copy-1024x793.jpg)
সংবাদে প্রকাশ, আগরতলা শহরের কৃষ্ণনগরের বাসিন্দা রজত কান্তি দেব অভিযোগ করেছেন তাঁর একাউন্ট থেকে ১১ হাজার টাকা হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে৷ শহরের মেলারমাঠস্থিত এসবিআইয়ে একটি একাউন্ট রয়েছে৷ তিনি বৃহস্পতিবার রাতে দেখতে পান তাঁর মোবাইল নম্বরে একটি ম্যাসেজ এসেছে ১১ হাজার টাকা তুলে নেওয়ার৷ যদিও তিনি কোন টাকাই তুলেননি৷ শুক্রবার সকালে তিনি বিষয়টি ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করে জানান৷ তখন ব্যাঙ্কে আরও কয়েকজন গ্রাহক একই বিষয় নিয়ে আলোচনার জন্য পৌঁছেন৷ পরষ্পর আলোচনার মাধ্যমে আন্দাজ করতে পারেন তারা প্রত্যেকেই সাইবার ক্রাইমের শিকার হয়েছেন৷
এদিকে, এই বিষয়ে এসবিআই’র স্থানীয় আধিকারীকদের কাছ থেকে কোন সদুত্তর না পেয়ে তাঁরা বাধ্য হয়ে আগরতলা পশ্চিম থানায় ছুটে যান৷ সেখানে গিয়ে তাঁরা একজোট হয়ে একটি এফআইআর করেন৷ এফআইআরের কপি নিয়ে তাঁরা পুণরায় ব্যাঙ্কে যান এবং এই বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য অনুরোধ করেন৷ শেষ পর্যন্ত দেখা গিয়েছে, মোট বার জন গ্রাহক প্রতারিত হয়েছেন৷ তারা প্রত্যেকেই পশ্চিম আগরতলা থানার পুলিশের কাছে আর্জি জানিয়েছেন যাতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করেন৷ সেই মোতাবেক পুলিশ ব্যাঙ্কে ছুটে যায়৷ গোটা বিষয়ে ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের বক্তব্য শোনেছে পুলিশ৷
যেসমস্ত প্রতারিত গ্রাহকরা পশ্চিম আগরতলা থানায় এফআইআর দায়ের করেছেন, তাদের মধ্যে কয়েকজন হলেন, কৃষ্ণনগরের রজত কান্তি দেবের ১১ হাজার টাকা, কৃষ্ণনগরের দীপক দেববর্মার ২১ হাজার ৫০০ টাকা, টাকারজলার মানেষ দেববর্মার ১১ হাজার ৫০০ টাকা, ইন্দ্রনগরের চন্দন ভৌমিকের ৩৯ হাজার টাকা, ডাঃ পিয়ালী দেববর্মার ৪০ হাজার টাকা, বিক্রমণি দেববর্মার ২৯ হাজার টাকা, বি. বি. দেবনাথের ২০ হাজার টাকা এবং পার্থ প্রতিম চক্রবর্তীর ৩০ হাজার টাকা৷ এছাড়াও আরও তিনজন গ্রাহক প্রতারিত হয়েছেন৷ তাদের একাউন্ট থেকে নেওয়া হয়েছে, ২৬ হাজার, ২০ হাজার এবং ১২ হাজার টাকা৷ তারাও পৃথক ভাবে এফআইআর করেছেন বলে জানা গিয়েছে৷ তাছাড়া ঝাড়খন্ডের এক বিএসএফ জওয়ান যিনি আগরতলায় কর্মরত তাঁর একাউন্ট থেকে ৮০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে৷
প্রতারিত গ্রাহকদের অনেকেই জানিয়েছেন তারা আগরতলা মেলারমাঠ এসবিআই ব্রাঞ্চের গ্রাহক, এবং তারা গত ১২ নভেম্বর কদমতলাস্থিত এসবিআই’র এটিএম কাউন্টারে গিয়েছিলেন টাকা তোলার জন্য৷ তারা পুলিশকে এই বিষয়ে স্পষ্টিকরণ করেছেন যে, সাইবার ক্রিমিনালরা কলকাতা থেকে কাজটি করেছে৷ তাও আবার কোন ধরনের ওটিপি ছাড়াই৷ এদিকে, আগরতলা পশ্চিম থানার ওসি সুব্রত চক্রবর্তী জানিয়েছেন, প্রতিটি এফআইআর গ্রহণ করা হয়েছে এবং তা তদন্ত করে দেখার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে৷ প্রসঙ্গত, অনুরূপভাবে হাইকোর্টের এক বিচারপতির ব্যাঙ্ক একাউন্ট থেকেও ১ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছিল সাইবার ক্রিমিনালরা৷