![](https://jagarantripura.com/wp-content/uploads/2019/11/ISRO.jpg)
কলকাতা, ৮ নভেম্বর (হি.স.) : পণ্ডিত জওহরলাল নেহরু প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন ১৯৬২ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় ‘ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল কমিটি ফর স্পেস রিসার্চ’। ১৯৬৯ সালে তার নাম হয় ইন্ডিয়ান স্পেস রিসার্চ অর্গানাইজেশন ( ইসরো )। এ বছর ৫০ বছর পূর্ণ করল ভারতের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা। এই ৫০ বছরে পৃথিবীর প্রথম সারির মহাকাশ গবেষণা সংস্থা হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্টিত করেছে ইসরো। আমেরিকা, চিন, রাশিয়ার সঙ্গে মহাকাশ গবেষণায় পাল্লা দিচ্ছে ভারত। গত পাঁচ দশকে একের পর এক সাফল্য পেয়েছে ইসরো। তার পিছনে অবশ্য রয়েছে হাজার হাজার বিজ্ঞানীর কঠিন পরিশ্রম ও নিরলস অধ্যবসায়। এক নজরে দেখে নেওয়া যাক এই পাঁচ দশকে ইসরোর সাফল্যের খতিয়ান।
১৯৬৩ সালের ২১ নভেম্বর ভারতের মিসাইল ম্যান ভারতরত্ন প্রাপক তথা প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি ডক্টর এ পি জে আবদুল কালাম কেরলের এক গির্জার বাইরে থেকে ভারতের প্রথম স্যাটেলাইট পাঠান আকাশে। সেই শুরু। তারপর এখনও পর্যন্ত ৭৫টি লঞ্চ মিশন করেছে ইসরো। ১০৬টি স্পেসক্রাফট মিশন কনডাক্ট করা হয়েছে ভারতের মহাকাশ গবেষণা সংস্থার তরফে। এ ছাড়াও এখনও পর্যন্ত মোট ২৯৭টি বিদেশি স্যাটেলাইটও মহাকাশে পাঠিয়েছে এই সংস্থা। ৩৩টি দেশ থেকে এই সব স্যাটেলাইট পাঠিয়েছে ইসরো। এর মধ্যে ২০১৭ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি একটি মাত্র মহাকাশযান পিএসএলভি সি৩৭ এর মাধ্যমে ১০৪টি স্যাটেলাইট একসঙ্গে মহাকাশে পাঠানো হয়েছিল। তারমধ্যে ভারতের একটি কার্টোস্যাট স্যাটেলাইট ছাড়া আমেরিকা, নেদারল্যান্ডস, সুইৎজারল্যান্ড, কাজাখস্থান, ইজরায়েল ও সংযুক্ত আরব আমিরশাহির ১০৩টি স্যাটেলাইট মহাকাশে পাঠানো হয়।
যে সব মহাকাশযানের মাধ্যমে বিভিন্ন স্যাটেলাইট পাঠানো হয়েছে সেগুলি হল, এসএলভি-৩, এএসএলভি, পিএসএলভি, জিএসএলভি, জিএসএলভি এমকে-৩, আরএলভি টিডি, এসআরই-১, স্ক্র্যামজেট, মার্স অরবিটর মিশন, চন্দ্রযান ১, কেয়ার, অ্যাস্ট্রোস্যাট ও চন্দ্রযান ২। ভারতের পাঠানো মঙ্গলযান ইতিমধ্যেই মঙ্গলের কক্ষপথে পাঁচ বছর কাটিয়ে ফেলেছে। এখনও সফলভাবে কাজ করে যাচ্ছে মঙ্গলযান।
এখনও পর্যন্ত মহাকাশে মোট ৫৪টি স্যাটেলাইট পাঠিয়েছে ভারতের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা। সেগুলি হল, আর্যভট্ট, ইনস্যাট ৩সি, কল্পনা ১, ইনস্যাট ৩এ, ইনস্যাট ৪এ, ইনস্যাট ৪বি, ইনস্যাট ৪সিআর, জিস্যাট ৮, জিস্যাট ১২, জিস্যাট ১০, আইআরএনএসএস ১এ, ইনস্যাট ৩ডি, জিস্যাট ৭, জিস্যাট ১৪, আইআরএনএসএস ১বি, আইআরএনএসএস ১সি, জিস্যাট ১৬, আইআরএনএসএস ১ডি, জিস্যাট ৬, জিস্যাট ১৫, জিস্যাট ১৮, জিস্যাট ৯, জিস্যাট ১৯, জিস্যাট ১৭, জিস্যাট ২৯, জিস্যাট ১১, জিস্যাট ৭এ, জিস্যাট ৩১, আইআরএনএসএস ১ই, আইআরএনএসএস ১এফ, আইআরএনএসএস ১জি, আইআরএনএসএস ৩ডিআর, আইআরএনএসএস ১আই, কার্টোস্যাট ১, কার্টোস্যাট ২, কার্টোস্যাট ২এ, রিস্যাট ২, ওসেনস্যাট ২, কার্টোস্যাট ২বি, রিসোর্সস্যাট ২, মেগাট্রপিকিউস, রিস্যাট ১, সরল, কার্টোস্যাট ২ ( সিরিজ স্যাটেলাইটস ), স্ক্যাটস্যাট, রিসোর্সস্যাট ২এ, কার্টোস্যাট ২ ( সিরিজ স্যাটেলাইটস ), কার্টোস্যাট ২ ( সিরিজ স্যাটেলাইটস ), কার্টোস্যাট ২ ( সিরিজ স্যাটেলাইটস ), এইচওয়াইএস আইএস, রিস্যাট ২বি, আইএনএস ১এ, আইএনএস ১বি, আইএনএস ১সি, ও মাইক্রোস্যাট।
এইসব স্যাটেলাইটগুলি মহাকাশে মূলত কয়েকটি কারণে পাঠানো হয়। এই স্যাটেলাইটগুলি থেকে দেশের পরিবেশ, জলের স্তরের প্রকৃতি, নগরায়নের প্রকৃতি, জঙ্গলের পরিমাণ, সমুদ্রের তলদেশের প্রকৃতি, মাটির প্রকৃতি, ভূ-বিপর্যয় সংক্রান্ত বিষয়, কৃষি, নক্ষত্রের হাল হকিকত ও যোগাযোগ ব্যবস্থার উপর নজর রাখা হয়ে থাকে। ভারতের সম্পদের সঠিক ব্যবহার ও কোনও সমস্যা হচ্ছে কিনা সেদিকে নজর রাখা হচ্ছে এই সব স্যাটেলাইটের কাজ।
ভারতের পরবর্তী স্পেস প্রোগ্রামগুলি হল মঙ্গলযান ২, গগনযান, আদিত্য প্রমুখ। এই কাজেই নিরলস প্রচেষ্টা করে যাচ্ছেন ইসরোর বিজ্ঞানীর দল। ভারতের মহাকাশ গবেষণা সংস্থার এই সাফল্য স্বীকার করে নিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নাসা-র মতো মহাকাশ গবেষণা সংস্থাও। ভবিষ্যতের সাফল্যের দিকেই এগিয়ে চলেছে ইন্ডিয়ান স্পেস রিসার্চ অর্গানাইজেশন।