নয়াদিল্লি, ৯ নভেম্বর (হি.স.) : অযোধ্যা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের সিদ্ধান্ত ভারতের ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে বলে শনিবার জাতির উদ্দেশ্যে দেওয়া ভাষণে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। পাশাপাশি এই রায়দানকে ভারতের নতুন অধ্যায়ের সূচনা বলে অভিহিত করেছেন তিনি।
![](https://jagarantripura.com/wp-content/uploads/2019/11/IMG-20191109-WA0094.jpg)
এদিন সন্ধ্যা জাতীর উদ্দেশ্যে দেওয়া ভাষণে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী জানিয়েছেন যে ৯ নভেম্বর দিনটি ইতিহাসের পাতায় ঐতিহাসিক উপলবদ্ধি হয়ে থেকে যাবে। এদিন তিন দশক আগের বার্লিন দেওয়ালের পতনের উল্লেখ করে তিনি বলেন, ১৯৯১ সালের ৯ নভেম্বর পূর্ব জার্মানি ও পশ্চিম জার্মানির মধ্যে থাকা বার্লিনের দেওয়ালের পতন হয়। এর ফলে দেওয়ালের দুই দিককার মধ্যে থাকা মানুষের মধ্যে পুনরায় মিলন ঘটে। সেই ৯ নভেম্বরে অযোধ্যা মামলার রায় ঘোষণা করা হল। কর্তারপুর সাহেব করিডোরের উদ্বোধনও হল। এর শিক্ষণীয় বিষয় হল পারস্পরিক সম্মতি এবং মিলে মিশেই যে কোনও বড় লক্ষ্য পূরণ করা যায়। ভারত এবং পাকিস্তানের যৌথ উদ্যোগে কর্তারপুর করিডোর খোলা সম্ভব হয়েছে।
তিনি আরও জানিয়েছেন, বহু দশক ধরে চলে আসা অযোধ্যার সমস্যা বহু প্রজন্মের উপর প্রভাব ফেলেছে। কারো মনে মামলার রায় নিয়ে কোনও রকমের ন্যূনতম দ্বন্দ্ব থাকলেও তা ত্যাগ করা উচিত। শান্তি ও সম্প্রীতির পরিবেশেই নবীন প্রজন্মকে নতুন ভারতের নির্মাণ করতে হবে। নতুন ভারতে সবাইকে সঙ্গে নিয়ে সবার জন্য উন্নয়ন করতে হবে। আর সবার বিশ্বাস অর্জনের জন্য সঙ্কল্পবদ্ধ হওয়াটা জরুরি হয়ে পড়েছে। নতুন ভারতে ভয়, কটূতা এবং নেতিবাচক চিন্তা ভাবনার কোনও জায়গা নেই। সুপ্রিম কোর্টের সাংবিধানিক বেঞ্চের বিচারকদের প্রশংসা করে প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন, বিচারকের দীর্ঘ সময় ধরে সব পক্ষের বক্তব্য ধৈর্য্য ধরে শুনেছে। ভারত যে বিশ্বের সব থেকে বড় গণতন্ত্র, তা গোটা বিশ্ববাসী জানে। পাশাপাশি তারা এটাও জানল যে ভারতের গণতন্ত্র জীবন্ত এবং মজবুত। সুপ্রিম কোর্টের সিদ্ধান্ত সমাজের সকলস্তরের মানুষ খোলা মনে মেনে নিয়েছে। তা ভারতের পুরাতম সংস্কৃতি ও সৌহার্দ্যের জীবন্ত উদাহরণ বহন করে চলেছে। বৈচিত্রের মধ্যে একতা কয়েক হাজার বছর ধরে ভারতের পরিচয় হয়ে এসেছে। সেটাই যে ভারতের প্রাণ, তা ফের প্রমাণিত হল। ইতিহাসের স্বর্ণাক্ষরে ১৩০ কোটি ভারতবাসী চিরদিনের মতো ঠাই পেয়ে গেল। সুপ্রিম কোর্টের রায়দান থেকে এটা স্পষ্ট যে কঠিন থেকে কঠিনতম সমস্যা সংবিধানের আঙিনার মধ্যে থেকেই করা সম্ভব। সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে দেরি হলেও সংবিধান এবং বিচারব্যবস্থার প্রতি আস্থাশীল থাকা উচিত। এখন রাষ্ট্র নির্মাণের জন্য সবার এগিয়ে আসা উচিত বলে জানিয়েছেন তিনি।