নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ১৮ অক্টোবর৷৷ কংগ্রেস এনআরসি-র পক্ষে৷ অকপটে এ-কথা জানালেন এআইসিসি সাধারণ সম্পাদক তথা ত্রিপুরার দায়িত্বপ্রাপ্ত কংগ্রেস নেতা লুইজিনহো ফেলেইরিও৷ তবে এনআরসির বিষয়টি সুপ্রিম কোর্টের তত্ত্বাবধানে বাস্তবায়িত হচ্ছে৷ তাই এ-বিষয়ে সর্বোচ্চ আদালতই সমস্ত সিদ্ধান্ত নেবে৷ কিন্তু কংগ্রেস নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলের পক্ষে নয়৷ সে-কথাও সাফ জানিয়েছেন তিনি৷ তাঁর বক্তব্য, দেশের মানুষের অধিকার হরণের বিলে কংগ্রেস সহমত নয়৷

শুক্রবার রাজ্য সফরে এসেছেন এআইসিসি সাধারণ সম্পাদক লুইজিনহো ফেলেইরিও৷ রাজ্যে এসে তিনি দলের শীর্ষ নেতৃত্ব এবং বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের নেতৃত্বের সাথে বৈঠক করেছেন৷ শুধু তা-ই নয়, জনজাতি নেতাদের সাথেও তিনি পৃথকভাবে আলোচনা করেছেন৷ সামনে এডিসি নির্বাচন, ফলে রাজ্যে কংগ্রেসের জনজাতি মহল্লায় কতটা জনভিত্তি রয়েছে তা তিনি মেপে নিয়েছেন৷
আজ তিনি সাংবাদিক সম্মেলনে বলেন, প্রদেশ কংগ্রেসের নেতৃত্বে একতা দেখে আমি অভিভূত৷ প্রত্যেকে এভাবেই একতা বজায় রাখলে দল আগামী দিনে রাজ্যে অনেক ভালো ফলাফল করবে৷ লুইজিনহো ফেলেইরিও দাবি করেন, বিধানসভা নির্বাচনের তুলনায় গত লোকসভা নির্বাচন এবং উপনির্বাচনে কংগ্রেসের জনভিত্তি বেড়েছে৷ ওই দুটি নির্বাচনে কংগ্রেসের ভোটের হার ক্রমশ বেড়েছে৷ তাঁর মতে, বিজেপি নির্বাচনী প্রতিশ্রুতির খেলাপ করে চলেছে৷ তাই, রাজ্যবাসী কংগ্রেসের প্রতি আকৃষ্ট হচ্ছেন৷
এদিন তিনি বলেন, গোটা দেশ এক ভয়ঙ্কর পরিস্থিতির স্বীকার হয়েছে৷
দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা ভেঙে পড়েছে৷ কিন্তু, সেই অবস্থা থেকে উত্তরণের কোনও লক্ষণ নজরে আসছে না৷ তাঁর কথায়, উত্তর-পূর্বাঞ্চলের জন্য কবর খুড়া হচ্ছে৷ কারণ, ভারত সরকার সংসদের শীতকালীন অধিবেশনে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল পাশ করাতে চাইছে৷ তাঁর মতে, ওই বিল পাশ হলে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের নাগরিকরা ভয়ঙ্কর বিপদের মুখোমুখি হবেন৷ কারণ, তাঁদের অধিকার হরণের চেষ্টা চলছে৷ ফেলেরিওর দাবি, নাগরিকত্ত্ব সংশোধনী বিলের বিরোধিতায় কংগ্রেস বরাবর অবস্থান একই রাখবে৷ কারণ, উত্তর-পূর্বাঞ্চলের বিভিন্ন আঞ্চলিক রাজনৈতিক দল, এনজিও, বিভিন্ন ছাত্র সংগঠন এবং সাধারণ মানুষ প্রত্যেকেই ওই বিলের বিরোধিতা করছেন৷
তবে, এনআরসির পক্ষে কংগ্রেস, এ-কথা অকপটেই জানালেন তিনি৷ তাঁর কথায়, জনগণের অধিকার রক্ষায় নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলের বিরোধিতা করলেও এনআরসি-র পক্ষে কংগ্রেস৷ তিনি জানান, অসমে এনআরসি সমর্থন করেছে কংগ্রেস৷ সে-ক্ষেত্রে অন্যান্য রাজ্যে এর বিরোধিতা করার প্রশ্ণই ওঠে না৷ তবে, রাজ্যস্তরীয় নেতৃত্ব আঞ্চলিক প্রয়োজনীয়তার ভিত্তিতে এনআরসির সমর্থন বা আপত্তি জানাতেই পারেন৷ তাঁর বক্তব্য, এনআরসি সম্পূর্ণই সুপ্রিমকোর্টের নজরদারিতে বাস্তবায়িত হচ্ছে৷ তাই, সুপ্রিমকোর্ট অন্য কোনও রাজ্যে এনআরসি চালু করার নির্দেশ দিলে তাতে কংগ্রেস আপত্তি করবে না৷

