বোর্ড পরীক্ষায় বসতে দশম ও দ্বাদশের কাউকেই আটকানো হবে না : মুখ্যমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ১৫ অক্টোবর৷৷ মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য দশম এবং দ্বাদশের পরীক্ষায় একজনকেও আটকানো হবে না৷ সেই দিশাতেই এগিয়ে চলেছে রাজ্য সরকার৷ বললেন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব৷ তাঁর মতে, বিদ্যালয় স্তরে পরীক্ষায় আটকে দিয়ে বোর্ড পরীক্ষায় বসার সুযোগ না দেওয়া দুর্ভাগ্যজনক৷ এভাবে ছাত্রছাত্রীদের সাথে দীর্ঘকাল ধরে অন্যায় করা হচ্ছে৷ সাথে তিনি যোগ করেন, বোর্ড পরীক্ষায় কেউ ফেল করলে বাড়িতে বসিয়ে রাখার বদলে বিদ্যালয়ে পুনরায় ভর্তির সুযোগ দেওয়া হবে৷ এতে ওই ছাত্র পড়াশোনার সাথে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে না এবং একবছর বাদে বোর্ড পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে পারবে৷


আগরতলায় জনজাতিদের এক অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, সংশ্লিষ্টদের উন্নয়নের মাধ্যমেই রাজ্যের সার্বিক উন্নয়ন সম্ভব৷ পাশাপাশি তিনি রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থায় বর্তমান রাজ্য সরকারের আমূল পরিবর্তনের কথাও উল্লেখ করেছেন৷ তাঁর দাবি, জনজাতিদের শিক্ষার গুণগত মান উন্নয়নে রাজ্য সরকার ১৮টি একলব্য বিদ্যালয় গড়ার উদ্যোগ নিয়েছে৷ এছাড়া সম্প্রতি কেন্দ্রীয় সরকার রাজ্যে দুটি নবোদয় বিদ্যালয় গড়ে তোলার অনুমোদন দিয়েছে৷


মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন হয়েছে বলে দাবি করেছেন৷ তাঁর কথায়, এই প্রথম রাজ্যে সরকারি বিদ্যালয়গুলিতে শিক্ষক-অভিভাবক সম্মেলন হয়েছে৷ এতে অভিভাবকরাও জানতে পেরেছেন তাঁদের সন্তানদের পড়াশোনার মান কোন স্তরে পৌঁছেছে৷ সাথে তিনি যোগ করেন, এই প্রথম কেন্দ্রীয়ভাবে প্রশ্ণপত্র তৈরি করে তৃতীয় থেকে নবম শ্রেণির ষাণ্মাসিক পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে৷ এতেও দু-ধরনের প্রশ্ণপত্র বিলি করা হয়েছিল৷ ফলে, পরীক্ষায় নকল করার কোনও সুযোগ পায়নি ছাত্রছাত্রীরা৷ তিনি জানান, আগামীতে তিন ধরনের প্রশ্ণপত্র তৈরি করা হবে৷


মুখ্যমন্ত্রী এদিন রাজ্যে শিক্ষা ব্যবস্থার খোলনলচে বদলানোর বিষয়ে ভবিষ্যত পরিকল্পনাও তুলে ধরেছেন৷ তাঁর কথায়, বোর্ড পরীক্ষায় বসার জন্য দশম এবং দ্বাদশ শ্রেণির ফাইনাল পরীক্ষায় কোনও ছাত্রছাত্রীকে আটকানো হবে না৷ এতে তাদের ভবিষত নষ্ট হবে না৷ তাঁর মতে, নবম শ্রেণি পর্যন্ত যে ছাত্রছাত্রী পাশ করতে পেরেছে তাকে দশম শ্রেণিতে পরীক্ষায় আটকানো উচিত হবে না৷ তাকে বোর্ড পরীক্ষায় বসার সুযোগ দেওয়া উচিত৷ তাই, আগামীতে দশম এবং দ্বাদশে পরীক্ষায় কোনও ছাত্রছাত্রীকে আটকানো হবে না, সেই দিশাতেই এগিয়ে চলেছে রাজ্য সরকার, জানান মুখ্যমন্ত্রী৷


সাথে তিনি যোগ করেন, বোর্ড পরীক্ষায় ফেল করার পর ছাত্রছাত্রীদের পুনরায় বিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ দেওয়া হবে৷ তাঁর মতে, বোর্ড পরীক্ষায় ফেল করার একবছর বাড়িতে বসে থাকলে ছেলেমেয়েরা বিপথগামী হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে৷ তখনই তারা নেশা, জুয়া ইত্যাদির অভ্যাস ধরে ফেলে৷ তাই, তারা পুনরায় বিদ্যালয়ে যাওয়ার সুযোগ পেলে পড়াশুনার পাশাপাশি বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের সহায়তায় পাবে৷ তখন, তারা কুপথে যাওয়ার চেষ্টা করবে না, দাবি করেন মুখ্যমন্ত্রী৷ তাঁর কথায়, খুব শীঘ্রই এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নে উদ্যোগ নেওয়া হবে৷