দেবীপক্ষের সূচনা, আগমনীর অপেক্ষা…

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ২৮ সেপ্টেম্বর ৷৷ শনিবার মহালয়াকে কেন্দ্র করে সকাল থেকেই মানুষের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দিপনা পরিলক্ষিত হয়৷ ভোর রাতেই ঘর ছেড়ে রাস্তায় বেরিয়ে পড়েন আবাল-বৃদ্ধ বনিতারা৷ ডট কমের যুগে বাড়িঘরে রেডিওর প্রচলন নেই বললেই চলে৷ কিন্তু বীরেন্দ্র কিশোরের মহিষাশূর মর্দিনীর সঙ্গীত এখনও প্রাণ কেড়ে নেয় বাঙালি প্রাণ মানুষের৷ মহালয়ার সকালে সেই চিত্র পরিলক্ষিত হয়েছে শহর থেকে গ্রাম সর্বত্রই৷

মহালয়ার আগমনীর সুরেই শারদোৎসবের সূচনা হয়েছে৷ মহালয়ার পূন্য প্রভাতে বিভিন্ন দেবমন্দিরের পুকুরে কিংবা নদীতে পিতৃতর্পন করতে ভীড় লক্ষ করা গেছে ধর্মপ্রাণ মানুষজনকে৷ কথিত আছে, পূণ্য তিথিতে তর্পন করলে পিতা-পিতামহ সহ পূর্ব পুরুষেরা জল পেয়ে থাকেন৷ সেই ধর্ম বিশ্বাসকে পাথেয় করেই পিতৃতর্পনের রীতিনীতি আজও পরিলক্ষিত হয়৷

পিতৃপক্ষের অবসানে দেবী পক্ষের সূচনা হয় অমবস্যা ছাড়ার পরই৷ এই পিতৃপক্ষের শেষ লগ্ণে তাই পিতৃপুরুষদের উদ্দেশ্যে তিন জল দানের জন্য সকাল থেকেই রাজধানীর লক্ষ্মীনারায়ণ বাড়ি সহ বিভিন্ন পুকুরের দেখা গেল শত শত লোকের ভীড়৷ মহালয়া নয় যেন মায়ের পদধবনি৷ প্রতিটি বঙালীর হৃদয় ছঁুয়ে যায় পূজোর হাওয়ায়৷ উষাকাল থেকেই বীরেন্দ্র কৃষ্ণ ভদ্রের মন্ত্র উচ্চারন ও চন্ডী পাঠের মধ্যে দিয়ে সূচনা হয় মহালয়ার৷ মহালয়া মানেই পিতৃপক্ষের অবসান৷ দেবী পক্ষের শুরু৷ পিতৃপক্ষের অবসানের দিন পিতৃপুরুষের উদ্দেশ্যে তর্পন প্রাচীন প্রথা৷ ইহলোক ত্যাগ করা পিতৃপুরুষদের মঙ্গল কামনায় যব, তিল, জল দান করা হয়৷ একেই তর্পন বলে৷ রাজধানী আগরতলায় ও সকাল থেকেই বিভিন্ন জলাশয়ে তর্পনের উদ্দেশ্যে মানুষের ঢল নামে৷ নদীতে উঠা নামা করার মত সুবন্দোবস্ত না থাকায় দেবঘাট লক্ষ্মীনারায়ণ বাড়ির পুকুরেই অধিক সংখ্যক লোক তর্পন করতে জমায়েত হয় বলে জানালেন পুরোহিত প্রশস্ত গঙ্গোপাধ্যায়৷ তিনি বলেন বিগত প্রতিপদ থেকে শুরু করে মহালয়া পর্যন্ত এই ১৫ দিন পিতৃপক্ষ একে প্রেতপক্ষও বলা হয়৷ এই সময় পিতৃপুরুষের উদ্দেশ্যে জল তিল উৎসর্গ করে তর্পন করা হয়৷ অম্যাবশ্য শেষ হতেই শুরু দেবী পক্ষের৷ প্রকৃত পক্ষে এদিন থেকেই পড়ে গেল পূজোর ঢাকে কাটি৷ রাজ্য বাসীও মেতে উঠল তাদের সর্বশ্রেষ্ঠ উৎসবে৷