শিক্ষাকে রোজগারের সাথে সমন্বিত করাই হল রাজ্য সরকারের মূল লক্ষ্য : মুখ্যমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ২৮ সেপ্টেম্বর ৷৷ শিক্ষাক্ষেত্রে ত্রিপুরাকে দেশের প্রথম সারিতে নিয়ে যাওয়া এবং শিক্ষাকে রোজগারের সাথে সমন্বিত করাই হল রাজ্য সরকারের মূল লক্ষ্য৷ আজ রবীন্দ্র শতবার্ষিকী ভবনের ১ নং হলে ত্রিপুরা সরকারের তপশিলী জাতি কল্যাণ, উপজাতি কল্যাণ, অন্যান্য পশ্চাদপদ শ্রেণী এবং সংখ্যালঘু কল্যাণ দপ্তরের যৌথ উদ্যোগে রাজ্য ও বহিঃরাজ্যে ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষে বিভিন্ন পেশাগত পাঠ্যক্রমে ভর্তির জন্য নির্বাচিত ছাত্র-ছাত্রীদের শুভেচ্ছা জ্ঞাপন অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করে একথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব৷

তাঁর কথায়, রাজ্যের উন্নয়নের অন্যতম মাপকাঠি হচ্ছে শিক্ষা ও স্বাস্থ্য ব্যবস্থা৷ যে কোন উন্নত রাজ্যের পরিচয় বহন করে তার সামগ্রিক শিক্ষা পরিকাঠামো৷ বর্তমান রাজ্য সরকারও ত্রিপুরায় গুণগত শিক্ষার প্রসারে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে একাধিক পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে, দাবি করেন তিনি৷ মুখ্যমন্ত্রী বলেন, বর্তমানে রাজ্য সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে রাজ্যের শিক্ষার মানোন্নয়নের লক্ষ্যে একাধিক পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে৷ শিক্ষাক্ষেত্রে ত্রিপুরাকে দেশের প্রথম সারিতে নিয়ে যাওয়া এবং শিক্ষাকে রোজগারের সাথে সমন্বিত করাই হল রাজ্য সরকারের মূল লক্ষ্য৷ তিনি শিক্ষা দপ্তরকে বিভিন্ন ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত এবং সাহসী পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য ধন্যবাদ জানান৷

তিনি বলেন, রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন এসেছে৷ প্রযুক্তিকে যুক্ত করে আগামীদিনে ত্রিপুরার বিদ্যালয়গুলিতে ছাত্র-ছাত্রীদের সমস্ত তথ্য অনলাইন প্রদান করার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে৷ সমগ্র দেশের মধ্যে ত্রিপুরাই প্রথম রাজ্য হবে যেখানে এ ধরণের ব্যবস্থা হতে চলেছে৷ এই ব্যবস্থার ফলে অভিভাবকরাও ঘরে বসে তাদের সন্তানদের খোঁজখবর নিতে পারবেন৷ তিনি বলেন, এই ব্যবস্থায় নিরাপত্তার বিষয় যেমন সুুনিশ্চিত থাকবে তেমনি গুণগত শিক্ষাও প্রসারিত হবে৷

মুখ্যমন্ত্রী বলেন, এমাসে বিদ্যালয়গুলিতে কেন্দ্রীয়ভাবে সংকলিত প্রশপত্রে তৃতীয় থেকে নবম শ্রেণী পর্যন্ত ষান্মাসিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হচ্ছে৷ এই পরীক্ষায় ৯৯ শতাংশ পরীক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন৷ তিনি বলেন, ত্রিপুরায় এন সি ই আর টি সিলেবাস চালু করার বিষয়টি কঠিন ছিল৷ কিন্তু শিক্ষা দপ্তর সেই সাহসী উদ্যোগ গ্রহণ করেছে৷ এই সিলেবাস চালু হওয়ার ফলে রাজ্যে গুণগত শিক্ষার প্রসার যেমন ঘটবে তেমনি জাতীয়স্তরের বিভিন্ন প্রতিযোগিতামূলক প্রবেশিকা পরীক্ষায় ছাত্র-ছাত্রীরাও সফল হতে পারবে বলে তিনি আশা ব্যক্ত করেন৷

মুখ্যমন্ত্রী বলেন, সম্প্রতি অগ্রগতি মিটিং-এ মাধ্যমিক এবং উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার ফলাফল যাতে দ্রত প্রকাশ করা হয় সে বিষয়ে গুরুত্বারোপ করা হয়েছিল, যাতে রাজ্যের ছাত্র-ছাত্রীরা সর্বভারতীয় পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য যথাযথ সময় পায়৷ এছাড়া শিক্ষা দপ্তরের উদ্যোগে সরকারি বিদ্যালয়গুলিতে ৩ মার্চ শিক্ষক অভিভাবক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয় যা ত্রিপুরার বুকে এক ঐতিহাসিক দিন বলে মুখ্যমন্ত্রী উল্লেখ করেন৷ তিনি বলেন, এখন গ্রীষ্মের ছুটিতে শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ করানো হয়৷ শিক্ষা দপ্তরের এসব ব্যবস্থার ফলে রাজ্যে মাধ্যমিকে পাশের হার ৫ শতাংশ বেড়েছে৷ জনজাতি অঞ্চলে ড্রপ আউট ছাত্র-ছাত্রীর হার কমেছে বলে মুখ্যমন্ত্রী অভিমত ব্যক্ত করেন৷ তিনি বলেন, শিক্ষার উন্নয়নে এই সব ব্যবস্থাগুলি আগেও করা যেত৷ কিন্তু পূর্বতন সরকার এক্ষেত্রে বিশেষ কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি৷ মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রাজ্যের সার্বিক পরিকাঠামোগত উন্নয়নে রাজ্য সরকার বিভিন্ন পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছে৷