নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ১৯ সেপ্ঢেম্বর৷৷ রাজ্যের পৃথক স্থানে দুটি নারী সংক্রান্ত অপরাধের ঘটনা রীতিমতো আঁতকে উঠার মতো৷ ধর্মনগরে এক কিশোরীর ঝুলন্ত মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে৷ এক্ষেত্রে ধর্ষণের পর খুনের আশঙ্কা করা হচ্ছে৷ অন্যদিকে, আমতলীতে এক নাবালিকা ধর্ষিতা হয়েছে বলে খবর৷

বৃহস্পতিবার সাতসকালে এক নাবালিকার ঝুলন্ত মৃতদেহ উদ্ধারের ঘটনায় আতঙ্কিত ধর্মনগরবাসী৷ এটি খুন নাকি আত্মহত্যা তা জানতে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ৷ মৃতার পরিবার এবং স্থানীয় এলাকাবাসী ওই নাবালিকা খুন হয়েছেন বলে দাবি করেছেন৷ এদিকে, সন্দেহভাজন এক যুবককে পুলিশ আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছে৷
আজ সকালে উত্তর ত্রিপুরা জেলার ধর্মনগর থানাধীন দেওয়ানপাশা গ্রাম পঞ্চায়েতের ২ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা গোপাল ধরের নবনির্মিত বাড়ির বারান্দায় ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার হয়েছে অনামিকা শর্মার (১৬) মৃতদেহ৷ খবর পেয়ে মহকুমা পুলিশ আধিকারিক রাজীব সূত্রধরের নেতৃত্বে পুলিশ বাহিনী ঘটনাস্থলে ছুটে যায়৷ ছুটে আসে ফরেন্সিক টিম এবং ডগ স্কোয়াডও৷ মহকুমা পুলিশ আধিকারিক জানিয়েছেন, ওই নাবালিকার মৃতদেহ ময়না তদন্তের জন্য ধর্মনগর হসপিটালের মর্গে পাঠানো হয়েছে৷ তাঁর বক্তব্য, আপাতদৃষ্টিতে এটি একটি আত্মহত্যার ঘটনা বলে মনে হচ্ছে৷ কিন্তু, পারিপাশর্িক লক্ষণ ওই মৃত্যুর ঘটনায় সন্দেহের সৃষ্টি করেছে৷ ফলে, ময়না তদন্তের রিপোর্ট হাতে আসার পরই এ-বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া যাবে৷ তিনি আরও জানান, ওই ঘটনায় সন্দেহভাজন এক যুবককে আটক করা হয়েছে৷ মৃতার পরিবার এবং স্থানীয়দের অভিযোগের ভিত্তিতে শুভ্রজিৎ পাল-কে আটক করা হয়েছে৷ তিনি জানান, শুভ্রজিতের সাথে অনামিকার যোগাযোগ ছিল, এমনটাই জানা গিয়েছে৷
এদিকে, মৃতার বড় বোন জানিয়েছেন, গতকাল রাত ১২টা নাগাদ আমরা সকলেই খাওয়া সেরে ঘুমিয়ে পড়ি৷ অনামিকা গতকাল ঠাকুমার সাথে ঘুমিয়েছিল৷ কিন্তু, সকালে ওঠে তাকে কোথাও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না৷ মৃতার বোনের বক্তব্য, ঠাকুমার ঘরের জানালা খোলা ছিল৷ তাই, ধারণা করা হচ্ছে ওই জানালা দিয়েই বাড়ি থেকে বেরিয়ে গিয়েছিল অনামিকা৷ কিন্তু, ঘটনাটি আত্মহত্যা বলে মৃতার পরিবার এবং স্থানীয় এলাকাবাসী মানতে চাইছেন না৷ পুলিশ সূত্রের খবর, মৃতার দেহে আঁচড়ের দাগ পাওয়া গিয়েছে৷ সূত্রের দাবি, তাকে ধর্ষণের পর তার দেহ ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে৷
ফের ত্রিপুরায় নাবালিকা ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে৷ তবে, অভিযুক্তকে আড়াল করার ঘটনায় পুলিশের সন্দেহ বেড়েছে৷ তাই, তদন্তে অভিযোগ মিথ্যা প্রমাণিত হলে ওই নাবালিকার বাবার বিরুদ্ধেও পুলিশ ব্যবস্থা নেবে বলে জানিয়েছেন আমতলি থানার ওসি সুব্রত চক্রবর্তী৷
আজ আমতলি থানার ওসি জানান, গত পরশু গোপন সূত্রের খবরের ভিত্তিতে চারপাড়া ওই নাবালিকার বাড়িতে পুলিশ গিয়ে ধর্ষণের ঘটনা সম্পর্কে খোঁজ নেন৷ কিন্তু, ওইদিন নাবালিকার বাবা ওই বিষয়টি পুলিশের কাছে গোপন করেন৷ তবে, আজ তিনি এসে থানায় ধর্ষণের মামলা দায়ের করেছেন৷ ওসি সুব্রত চক্রবর্তী বলেন, প্রকৃত ঘটনা নিয়ে সন্দেহ জন্মেছে৷ তাই, তদন্তে অভিযোগ মিথ্যা প্রমাণিত হলে ওই নাবালিকার বাবার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে৷
এদিকে, ওই নাবালিকার বাবা জানান, তার ১১ বছরের কন্যা ধর্ষণের শিকার হয়েছে৷ তার অভিযোগ, বাড়ির পাশে দোকানের মালিক তার মেয়েকে ধর্ষণ করেছে৷ তার দাবি, বেশ কয়েকদিন ধরে ওই দোকানের মালিক তার মেয়ের সাথে কুকর্ম করেছেন৷ কিন্তু তার মেয়ে এ-বিষয়ে বাড়িতে কিছুই জানায় নি৷ কিন্তু, কয়েকদিন ধরে তার শরীরে অস্থিরতা অনুভব করায় তাকে চাপ দিয়ে ধর্ষণের বিষয়ে জানতে পেরেছি৷ তিনি বলেন, নিশ্চিত না হয়ে পুলিশ অভিযোগ জানানো ঠিক হবে না, তাই ওই দিন পুলিশ গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করলেও তাদের কিছুই বলিনি৷ তার দাবি, গতকাল মেয়েকে ধমক দেওয়ায় সমস্ত সত্যি ঘটনা জানতে পেরেছি৷ তাই আজ ধর্ষণের মামলা করেছি৷
এই ঘটনাকে ঘিরে এলাকায় চাঞ্চল্য দেখা দিয়েছে৷ তবে, পুলিশ প্রকৃত সত্য বের করে তবেই ব্যবস্থা নেবে বলে জানিয়েছে৷

