স্বাস্থ্য পরিষেবায় ফি বৃদ্ধির বিষয়টি পূনর্বিবেচনার জন্য মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আবেদন রাখবে আইএমএ

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ১০ সেপ্ঢেম্বর ৷৷ রাজ্যের সরকারি হাসপাতাল গুলিতে স্বাস্থ্য পরিষেবায় ফি বৃদ্ধির বিষয়টি পূনবিবেচনার জন্য মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আবেদন রাখবে ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল এসো’র ত্রিপুরা শাখা৷ সংস্থার সভাপতি ডাঃ শংকর রায় জানিয়েছেন, সরকারি হাসপাতালে ফি বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত পূনবিবেচনার জন্য মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আর্জি জানানোর বিষয়ে আজ বৈঠক হয়েছে৷ বৈঠকে রাজ্য সরকারকে নির্দিষ্ট গাইডলাইন তুলে দেওয়ার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে৷ পাশাপাশি, সরকারি হাসপাতালে ফি নির্ধারণ সংক্রান্ত বিষয়ে একটি কমিটি গঠন করার জন্যও মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আবেদন জানানো হবে৷ তাঁর কথায়, ওই কমিটি সরকারি হাসপাতাালে ফি সংক্রান্ত যাবতীয় খঁুটিনাটি সমস্ত বিষয় পর্যালোচনার ভিত্তিতে রাজ্য সরকারকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে রিপোর্ট জমা দেবে৷


প্রসঙ্গত, সম্প্রতি রাজ্য সরকার সমস্ত সরকারি হাসপাতালে স্বাস্থ্য পরিষেবায় ফি বৃদ্ধি এবং সংশোধনের বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে৷ রাজ্য সরকারের এই সিদ্ধান্তকে ঘিরে সাড়া রাজ্যব্যাপী ব্যাপক প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে৷ রাজ্যবাসীর এক বড় অংশই এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে মত দিচ্ছেন৷ ফলে, বিষয়টি জটিলতা অনুভব করে ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল এসো’র ত্রিপুরা শাখা আজ জরুরি ভিত্তিতে বৈঠক করেছেন৷
এদিন বৈঠকে নির্যাস তুলে ধরে সংগঠনের সভাপতি ডাঃ শংকর রায় বলেন, যে কোনও গণতান্ত্রিক সরকারের কর্তব্য বিনামূল্যে শিক্ষা ও স্বাস্থ্য পরিষেবা প্রদান করা৷ জাতির গঠনে তা সহায়ক বলে দাবি করেন তিনি৷ কিন্তু, রাজ্য সরকার স্বাস্থ্য পরিষেবায় ফি বৃদ্ধি ও সংশোধনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তা পূনর্বিবেচনা করা উচিত বলে মনে করেন আইএমএ ত্রিপুরা শাখা৷ তাই, মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আবেদন জানানো হবে ওই সিদ্ধান্তটি পূনর্বিবেচনা করা হোক৷


ডাঃ রায়ের যুক্তি, হাসপাতালে শয্যার জন্য রোগীদের কাছ থেকে ফি সংগ্রহ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে৷ অথচ, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই অত্যাধিক রোগীর ভিড়ের কারণে জিবি হাসপাতাল সহ বিভিন্ন হাসপাতালে রোগীদের শয্যা দেওয়া সম্ভব হয়না৷ এক্ষেত্রে যারা শয্যা পাবেন না তাদের কাছ থেকেও ফি সংগ্রহ করা হলে তীব্র অসন্তোষ জন্মাবে রোগীর পরিবারে৷ তাছাড়া, অপিডি রেজিস্ট্রেশনের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ১০ টাকা ফি গ্রহণযোগ্য বলে মনে করছে আইএমএ ত্রিপুরা শাখা৷ এক্ষেত্রে, প্রয়োজনের ভিত্তিতে পিএইচএইচ গ্রুপের তালিকাভুক্ত রোগীদের ছাড় দেওয়ার বিষয়টি রাজ্য সরকার বিবেচনা করতে পারে৷
এদিন তিনি বলেন, অক্সিজেন প্রদানের ক্ষেত্রে ফি নির্ধারণ কোনও ভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়৷ মানবিকতার খাতিরে মুমুর্ষ রোগীদের অক্সিজেন প্রদান চিকিৎসা পরিষেবার অন্যতম প্রধান কর্তব্যের মধ্যেই পড়ে৷ কারণ, অযথা কোনও রোগীকেই অক্সিজেন প্রদান করা হয়না৷ ফলে, মুমুর্ষ রোগীদের কাছ থেকে অক্সিজেনের জন্য ফি সংগ্রহ করা উচিত হবে বলে মনে করেনা আইএমএ ত্রিপুরা শাখা৷


ডাঃ রায়ের কথায়, রাজ্য সরকারের এই সিদ্ধান্তে সমাজে ভুল বার্তা যাচ্ছে৷ ফলে, রাজ্য সরকারকে এই সিদ্ধান্তটি পূনর্বিবেচনার আবেদন জানানো উচিত বলে করছে আইএমএ ত্রিপুরা শাখা৷ তিনি বলেন, স্বাস্থ্য পরিষেবা নিয়ে একটি গাইড লাইন তৈরি করে দেওয়া হবে রাজ্য সরকারকে৷ তাঁর দাবি, আগামীকাল মুখ্যমন্ত্রী কাছে ওই সিদ্ধান্ত পূনর্বিবেচনার আর্জি জানানো হবে৷ পাশাপাশি, স্বাস্থ্য পরিষেবায় ফি সংক্রান্ত বিষয়ে একটি কমিটি গঠন করার জন্যও রাজ্য সরকারের দৃষ্টি আকর্ষন করবে আইএমএ ত্রিপুরা শাখা৷ ডাঃ শংকর রায়ের বক্তব্য, ওই কমিটির রাজ্যে স্বাস্থ্য পরিষেবায় ফি সংক্রান্ত বিষয়ে পর্যালোচনা করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে সুপারিশ করবে৷