
নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ৫ সেপ্ঢেম্বর৷৷ শিক্ষক দিবস উদযাপন উপলক্ষ্যে রাজ্যপাল রমেশ বাইস, মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব, শিক্ষামন্ত্রী রতনলাল নাথ এবং সাংসদ প্রতিমা ভৌমিক শিক্ষার্থীদের অনুপ্রেরণামূলক পাঠ দিয়েছেন৷ ত্রিপুরায় এই প্রথম প্রশাসনিক প্রধানরা শিক্ষার্থীদের পাঠ দেওয়া-নেওয়া করেছেন৷ এই পদক্ষেপকে ঘিরে এদিন শিক্ষার্থীদের মধ্যে প্রচণ্ড উৎসাহ লক্ষ্য করা গিয়েছে৷
এদিন শুরুতে শিক্ষামন্ত্রী রতনলাল নাথ পাঠ দিয়েছেন৷ তিনি আগরতলায় শিশুবিহার দ্বাদশ শ্রেণি বিদ্যালয়ে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের পাঠ দিয়েছেন৷ শিক্ষামন্ত্রী আজ শিক্ষার্থীদের প্রকৃত শিক্ষায় শিক্ষিত হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন৷ পাশাপাশি বিভিন্ন বিষয়ে প্রশ্ণের উত্তর জানতে চেয়েছেন তিনি৷ শিক্ষার্থীদের অনেকেই শিক্ষামন্ত্রীর প্রশ্ণের সঠিক উত্তর দিতে পেরেছে৷ তাতে তিনি ভীষণ আপ্লুত বলে জানিয়েছেন৷ তিনি বলেন, আজকের প্রজন্ম আগামীদিনের ভবিষ্যত৷ তাঁর কথায়, আজকের প্রজন্মকে প্রকৃত শিক্ষা দেওয়া সম্ভব হলে, ভারতবর্ষকে জগৎ সভায় শ্রেষ্ঠ আসনে বসানো যাবে৷
৫৮-তম শিক্ষক দিবস উদযাপন উপলক্ষ্যে মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব আজ আগরতলার শিশুবিহার উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থীদেরকে অনুপ্রেরণামূলক পাঠদান করেন৷ শুরুতেই মুখ্যমন্ত্রী দেব ভারতের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি এবং মহান দার্শনিক ড় সর্বেপল্লী রাধাকৃষ্ণণের প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন৷
মুখ্যমন্ত্রী এদিন একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের শ্রেণিকক্ষে পাঠদান করেন৷ পাঠদানকালে শিক্ষার্থীদের তিনি শিক্ষাক্ষেত্রে উৎকর্ষতা বাড়ানোর জন্য রাজ্য সরকারের গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপ সম্পর্কে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে জানতে চান৷ শিক্ষার্থীরাও মুখ্যমন্ত্রীর বিভিন্ন প্রশ্ণের উত্তর দেন৷ শিক্ষার্থীদের সাথে ইতিহাস, সাধারণজ্ঞান-সহ আরও অন্যান্য বিভিন্ন বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রীর মতবিনিময় হয়েছে৷ মুখ্যমন্ত্রী শিক্ষা সমন্ধীয় শিক্ষার্থীদের লেখা ’শিক্ষাদ্বীপ’ শীর্ষক একটি দেওয়াল পত্রিকা প্রকাশ করেন৷ সেই সময় শিক্ষামন্ত্রী রতনলাল নাথও উপস্থিত ছিলেন৷
পরে উপস্থিত সাংবাদিকদের সাথে কথা বলার সময় মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেব তাঁর অনুভূতি ব্যক্ত করেন৷ তিনি বলেন, জীবনে এই প্রথম তিনি শিক্ষার্থীদের শিক্ষাদান করেছেন এবং এই পর্বটি খুবই আনন্দদায়ক ছিল৷ ত্রিপুরার শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নতিকরণের লক্ষ্যে রাজ্য সরকার যে সমস্ত কর্মসূচি গ্রহণ করেছে তিনি তার উল্লেখ করেন৷ তিনি বলেন, এনসিইআরটি পাঠ্যক্রম চালু, শিক্ষক অভিভাবক বৈঠক, রাজ্যের শেষ প্রান্তে বসবাসকারী শিশুদের কাছেও শিক্ষা ব্যবস্থাকে পোঁছে দেওয়া ইত্যাদি বিভিন্ন কর্মসূচি নিয়েছে শিক্ষা দফতর৷ এর সফলতাও এসেছে৷ গ্রেস মার্ক কমিয়ে দেওয়ার পরও মাধ্যমিক পরীক্ষায় পাশের হার ৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে৷ জনজাতি অঞ্চলেও পাশের হার বৃদ্ধি রাজ্যের শিক্ষাক্ষেত্রকে এক নতুন দিশায় পৌঁছে দেবে৷ ত্রিপুরা থেকেও আগামী দিনে সর্বভারতীয় ইউপিএসসি পরীক্ষায় সফলতার হার বাড়বে বলে তিনি আশা ব্যক্ত করেন৷ পাশাপাশি তিনি বলেন, অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রগুলিকে শক্তিশালী করাও সরকারের দায়িত্ব৷
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, শিক্ষকরা হচ্ছেন জাতির মেরুদণ্ড৷ গুণগত শিক্ষা প্রদানের মাধ্যমে নবীন প্রজন্মকে স্বাবলম্বী করার উদ্দেশ্যে রাজ্য সরকার কাজ করছে৷ ত্রিপুরাকে মডেল এবং সমৃদ্ধশালী রাজ্য বানানোর এটি একটি মাইলফলক৷
এদিকে, আজ ত্রিপুরার রাজ্যপাল রমেশ বাইস আগরতলায় শিশুবিহার দ্বাদশ শ্রেণি বিদ্যালয়ে একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের পাঠ দিয়েছেন৷ তিনি শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন, নিজের ভবিষ্যত নিয়ে ভাবনার পাশাপাশি দেশের জন্যও ভাবতে হবে৷ কারণ, আমরা যে সুস্থ ভারতের কল্পনা করি, তাতে নিজেকে সুস্থ রাখতে হবে৷ এদিন, সাংসদ প্রতিমা ভৌমিকও শিক্ষার্থীদের পাঠ দিয়েছেন৷ আগরতলার উমাকান্ত সুকলে তিনি শিক্ষার্থীদের পাঠ দিয়েছেন৷

