![](https://jagarantripura.com/wp-content/uploads/2019/08/5666666666666666666666666.jpg)
নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ২১ আগস্ট ৷৷ বুধবার রবীন্দ্রশতবার্ষিকী ভবনে রাজ্যের অন্যতম গর্বের কলেজ এমবিবি কলেজে নবীন বরণ উৎসব অনুষ্টিত হয়৷ জমকালো অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে নবীন বরণ উৎসবে আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন উপমুখ্যমন্ত্রী যীষ্ণু দেববর্মণ এবং শিক্ষামন্ত্রী রতনলাল নাথ৷
এমবিবি কলেজের নবীন বরণ উৎসবে আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করে শিক্ষামন্ত্রী রতনলাল নাথ বলেন, রাজ্য সরকার তৃণমৃল স্তর থেকেই সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে শিক্ষাক্ষেত্রে৷ কেননা সকল সমস্যা সমাধান করতে পারে একমাত্র শিক্ষাই৷ আমাদের ছেলে-মেয়েদের যথেষ্ট মেধা রয়েছে৷ সেই মেধা বিকাশ ঘটাতে হবে৷ সেই জন্য প্রয়োজন শিক্ষাব্যবস্থাকে সময়উপযোগি করে তোলা৷ প্রসঙ্গক্রমে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, জাতীয় গড়ের চেয়ে আমাদের রাজ্যে উচ্চ শিক্ষার হার অনেকটা কম৷ এজন্য শিক্ষক ছাত্র সহ সকলকেই আরও দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে৷ রাজ্য সরকার ইতিমধ্যেই আরও ৭টি কলেজকে পিপিপি মডেলে পরিচালনা করার উদ্যোগ নিয়েছে বলে জানান শিক্ষামন্ত্রী৷ রাজ্যে উচ্চশিক্ষার গড় বাড়ানোর জন্য প্রয়োজনীয় সব ধরনের ব্যবস্থাও গ্রহণ করা হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন৷
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আমাদের রাজ্যে প্রতিবছর প্রতিটি কলেজ ছাত্রের জন্য সরকারের খরচ হচ্ছে ৭৬ হাজার টাকা৷ বিষয়টির অবতরনা করতে গিয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ছাত্ররা যাতে সঠিক শিক্ষায় শিক্ষিত হতে পারে সেই দিশাতে কাজ করতে হবে৷ এমবিবি কলেজের নবীনবরণ উৎসবে জাকজমকতার প্রশংসা করার পাশাপাশি শৃঙ্খলাপরায়ণতা নিয়ে প্রশ্ণ তুলেছেন শিক্ষামন্ত্রী৷ তিনি বলেন কলেজগুলিতে উপস্থিতির হার তুলনামূলকভাবে অনেকটাই কম৷ কেন ছাত্রদের উপস্থিতির হার কমছে তা খুজে বের করতে হবে৷ এপ্রসঙ্গে বেসরকারী কলেজগুলি উল্লেখ করে শিক্ষামন্ত্রী বলেন সেখানেতো ছাত্ররা অনুপস্থিত থাকে না৷ তাহলে সরকারী কলেজে অনুপস্থিতির হার বাড়বে কেন৷ এর দায় নিজেদেরকেই নিতে হবে বলে রীতিমতো অধ্যাপক অধ্যাপিকা সহ অন্যান্যদের দিকে তির নিক্ষেপ করেন শিক্ষামন্ত্রী৷ এমবিবি কলেজে ৪৬০০ ছাত্র ছাত্রী রয়েছে৷ এবছর নতুন ভর্তি হয়েছে ১৫৬০ জন ছাত্রছাত্রী৷ অধ্যাপক ও সহকারী অধ্যাপক রয়েছেন ৬৯ জন৷ পিজিটি ২১ জন এবং গেস্ট লেকচারার রয়েছেন ৩১ জন৷ এখানে শিক্ষাপরিকাঠামো যথেষ্ট উন্নত তা সত্ত্বেও কেন কলেজটি ঐতিহ্য বজায় রাখতে পারছে না, সেই প্রশ্ণ তুলেছেন শিক্ষামন্ত্রী৷
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি উপমুখ্যমন্ত্রী যীষ্ণু দেববর্মন বলেন তিনি নিজেও এমবিবি কলেজে পড়াশুনা করেছেন এই কলেজের যথেষ্ট ঐতিহ্য রয়েছে৷ এই কলেজ নিয়ে আমরা গর্ববোধ করতাম সেই ঐতিহ্য বজায় রাখতে হবে৷ ঐতিহ্যকে আরও সম্প্রসারিত করতে হবে৷ নবীনবরণ উৎসবে নবীনদের জানতে হবে কলেজের ঐতিহ্য সম্পর্কে৷ উপমুখ্যমন্ত্রী বলেন, শৃঙ্খলা ও অনুশাসন দিয়েই শিক্ষার শুরু হয়৷ সমাজের উন্নতি রাষ্ট্রের উন্নতি এবং মানুষের জীবনের উন্নতি হয় অনুশাসন দিয়েই৷ ছাত্রদের সেলফ ডিসিপ্লেন থাকা খুবই জরুরী বলে উল্লেখ করেন তিনি৷ কেননা, ডিসিপ্রেনের অপর নাম সাধনা৷ শিক্ষাহল মানুষের জীবনে প্রদীপ জ্বালানো৷ অনুশাসন ও সাধনা ছারা ছাত্রজীবন বিফল বলে উল্লেখ করেন তিনি৷
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, সবকিছু ক্লাশরুমে শেখা যায় না৷ বহির্জগতের বিভিন্ন বিষয় শিক্ষতে হয়৷ কলেজ ছাত্রদের তিনি গর্বের সঙ্গে বলেন ১৯৭৯ সালে এই কলেজ থেকে ইংরেজী অনার্স নিয়ে স্নাতকোত্তর পাশ করেন তিনি৷ ঐ বছর এমবিবি কলেজের ফলাফল প্রেসিডেন্সি কলেজের ফলাফলের চেয়েও ভালো ছিল৷ এটা অত্যন্ত গর্বের বিষয়৷ এই ঐতিহ্য নবীন প্রজন্মকে জানতে হবে৷ কেন আমরা সেই জায়গায় ফিরে যেতে পারব না সেই প্রশ্ণ তুলেছেন উপমুখ্যমন্ত্রীও৷ এজন্য উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে৷
নবীনবরণ উৎসবে নবাগত ছাত্রছাত্রীদের বড় ক্লাসের ছাত্ররা রীতিনীতি অনুযায়ী বরণ করে নেন৷ এ উপলক্ষ্যে রবীন্দ্র শতবার্ষিকী ভবনে এক মনোজ্ঞ সাংসৃকতিক অনুষ্ঠানও অনুষ্ঠিত হয়৷