সন্দেহভাজন বাংলাদেশী যুবক গ্রেপ্তার কৈলাসহরে

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ১৪ আগস্ট৷৷ গত এক সপ্তাহ থেকে উনকোটি জেলার কৈলাসহর মহকুমায় আরক্ষা দপ্তরের কাছে গোপন খবর ছিল যে, কৈলাসহরের শহর এলাকায় ভিনদেশি অর্থাৎ সন্দেহজনক এক বাংলাদেশি যুবক লুকিয়ে রয়েছে৷ এই খবরের ভিত্তিতে কৈলাসহর এক বাংলাদেশি যুবক লুকিয়ে রয়েছে৷ এই ঘবরের ভিত্তিতে কৈলাসহর থানার ওসি দেবাশিষ সাহার নেতৃত্বে পুলিশ বাহিনী তন্ন তন্ন করে খোঁজছিল এই যুবকটিকে৷


অবেশেষে ওসি দেবাশীষ সাহা ভিনদেশি সন্দেহজনক এই যুবকটির সন্ধান পায় এবং হাতেনাতে ধরে ফেলে শহরের কাচেরঘাট এলাকায় প্রবীর দাশের বাড়ি থেকে৷ ওসি দেবাশীষ সাহা জানান ধৃত যুবকটির নাম সাদিক মোঃ জাভেদ (সেদিক এমডি জাবেদ)৷ সাদিকের বাবার নাম কুতুর উদ্দিন এবং মায়ের নাম রোশনা বেগম৷ সাদিকের বাড়ি বাংলাদেশের সিলেট জেলার টুলটিকর উইনিয়নের সাফরান থানার অন্তর্গত উটর বালুচর গ্রামে৷ সাদিকের পাসপোর্টের নাম্বার হলো বিএফ০০৫৯০৯৯ পাসপোর্ট ইস্যু হয়েছিল ০৫-০৪-২০১৫ এবং পাসপোর্ট এক্সপাইয়ার তারিখ ০৪-০৪ ২০২০৷ ওসি দেবাশিষ সাহা আরোও জানান যে, সাদিক গত সতেরো জুন (১৭ জুন) জানান শিলং-রে ডাউকি বর্ডার হয়ে পাসপোর্ট এন্টি করে বৈধভাবে ভারতে প্রবেশ করেছিল৷


সাদিক গত এক বছরের মধ্যে প্রায় কঁুড়ি বার ভারতে প্রবেশ করেছে শিলং-এর ডাউকি বর্ডার দিয়ে৷ পুলিশের সন্দেহ এনিয়েই৷ সাদিক ইতিমধ্যেই শিলচর, গৌহাটি, শিলং, ইম্ফল, নাগাল্যান্ড, কলকাতা সহ আরোও কিছু শহরে কয়েকবার এসে ঘুরাফেরা করেছে৷ এবং এইসব শহরের বড় বড় বনেদী হোটেলে থাকত সাদিক৷


সাদিক গত এক মাস পূর্বে কৈলাসহর এসে শহরের কালীপুর এলাকার অপু দাশের বাড়িতে প্রায় পঁচিশ দিন ভাড়া থেকেছিল নিজের পরিচয় গোপন রেখে৷ বাড়ির মালিক অপু দাশের কাছে সাদিক মোঃ জাভেদ নিজেকে রিঙ্কু দাশ নামে পরিচয় দিয়ে থাকে৷ এরপর গত আট আগস্ট কালীপুরের অপু দাশের বাড়ি ছেড়ে দিয়ে শহরের কাচরঘাট এলাকার প্রবীন দাশের বাড়িতে ভাড়া নিয়ে থাকা শুরু করে৷ প্রবীন দাশের বাড়িতেও সাদেক নিজেকে রিঙ্কু দাশ পরিচয় দিয়ে থাকতে শুরু করে৷ এবং আসামের শিলচরের সোনাই রোডে ওর বাড়ি বলেছিল অপু দাস এবং প্রবীন দাসের কাছে৷ প্রবীন দাশের বাড়িতে ছয়দিন থাকার পর গোপন সংবাদের ভিত্তিতে স্বাধীনতা দিবসের প্রাক্কালে ওসি দেবাশীষ সাহার নেতৃত্বে পুলিশ বিরাট সাফল্য পেল৷ পুলিশ সূত্রে আরোও জানা যায় যে, সাদিক বাংলাদেশের সিলেট জেলার এম.সি কলেজের ইতিহাস বিভাগের ছাত্র৷

সাদিক প্রথমে পুলিশের কাছেও নিজেকে রিঙ্কু দাশ পরিচয় দিলেও পুলেশের প্রাথমিক জেরায় ভেঙে পড়ে সাদিক নিজের আসল পরিচয় দেয়৷ সাদিক ভারতে এসে উত্তর পূর্বাঞ্চল সহ কলকাতার যত রেড লাইন এরিয়া রয়েছে সেইসব এরিয়াতে প্রায়ই যেত৷ পুলিশ তথা ওসি দেবাশীষ সাহা জানিয়েছেন সাদিক মোঃ জাভেদকে নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে৷ সাদিক আসলেও এত ঘন ঘন কেন ভারতে আসত এবং কি কাজ করত ভারতে এসে এসব বিষয়ে এখনও অন্ধকারে রয়েছে পুলিশ৷ সাদিককে বুধবার দুপুরে কৈলাসহর আদালতে প্রেরণ করে পুলিশ৷ সাদিক রহস্যে কৈলাসহর জনমানসে তীব্র চাঞ্চল্য তৈরী হয়েছে৷ ইতিমধ্যে হিন্দু জাগরন মঞ্চের কৈলাসহর শাখা ওসি দেবাশীষ সাহার নিকট ডেপুটেশন প্রদান করে ধৃত সাদিকের দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি দাবি করেছে এবং প্রকৃত রহস্য উদঘাটনের দাবী করেন৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *