শিল্প স্থাপনে ইউনিয়নবাজ বন্ধ করতে হবে শান্তিই উন্নয়নের মূল চাবিকাঠি : মুখ্যমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ১১ আগস্ট৷৷ গাছ আমাদের পরম বন্ধ৷ গাছ শুধুমাত্র অক্সিজেনের জোগান দেয় না, সেই সঙ্গে পরিবেশও রক্ষা করে আমাদের বাণিজ্যিকভাবে স্বনির্ভর হতে সাহায্য করে৷ গাছ বিভিন্নভাবে রোজগারের সুুযোগও স’ষ্টি করে থাকে৷ তাই প্রত্যেককে কমপক্ষে দু’টো করে গাছ লাগানোর জন্য আহ্বান জানান মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব৷ আজ রাজ্য সচিবালয়ে বন দপ্তর আয়োজিত বনমহোৎসব উদযাপনের অঙ্গ হিসেবে একটি নাগেশ্বর গাছের চারা রোপন করে উপস্থিত সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় মুখ্যমন্ত্রী শ্রীদেব এই অভিমত ব্যক্ত করেন৷


তিনি বলেন, ত্রিপুরায় ৬২ শতাংশেরও বেশী বনভূমি রয়েছে৷ বাঁশজাত শিল্পের সম্ভাবনা বিবেচনা করে বাঁশকে ঘাস হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার৷ অন্যান্য গাছের তুলনায় বাঁশ দ্রত বৃদ্ধি পায়৷ দেশের মধ্যে প্রায় ৫০ শতাংশ বাঁশ উত্তর পূর্বাঞ্চলে উৎপন্ন হয়৷ এর মধ্যে ত্রিপুরা, আসাম এবং মিজোরামে অধিকাংশ বাঁশের সম্ভার রয়েছে৷ মুখ্যমন্ত্রী বলেন, সারা ভারতব্যাপী জন-জলাই মাসে ব’ক্ষরোপন কর্মসূচি পালন করা হয়৷ ত্রিপুরাতেও এই কর্মসূচি রূপায়ণ করা অব্যাহত আছে৷ সম্পতি রাজ্যে এই কর্মসূচির অঙ্গ হিসেবে এক মিনিটে ছয় হাজারের বেশী গাছ লাগানো হয়েছে৷ এটি একটি মাইলফলক৷ রাজ্যবাসীকে ব’ক্ষ রোপনে উৎসাহিত করতে এ পদক্ষেপ বলে মুখ্যমন্ত্রী অভিমত ব্যক্ত করেন৷ তিনি আরও জানান, ভারতীয় সভ্যতায় প্রাচীনকাল থেকেই গাছের পূজার্চ্চনা করার রীতি রয়েছে৷ তাই শুধু জন-জলাই এই দু’মাস নয়, তিনি ব’ষ্টির মরশুমে ব’ক্ষরোপনের উপর বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করেন৷ সেই সঙ্গে গাছের রক্ষনাবেক্ষন করারও আহ্বান জানান মুখ্যমন্ত্রী শ্রীদেব৷


সাংবাদিকদের এন এল এফ টি’র সঙ্গে চুক্তি প্রসঙ্গে এক প্রশের জবাবে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, অনেক বছর পর জনতার সরকার রাজ্যে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে৷ জাতি কিংবা জনজাতি প্রত্যেকই রাজ্যের উন্নয়ন চায়৷ সবাই যেন স্বাভাবিক জীবনে ফিরে এসে নিজের পরিবারের পাশাপাশি রাজ্যের উন্নয়নের মূল স্ত্রোতের সাথে যুক্ত হতে পারেন সেই লক্ষ্যেই কেন্দ্র এবং রাজ্য সরকার মিলিতভাবে এই পদক্ষেপ নিয়েছে৷ মুখ্যমন্ত্রী বলেন, কোন রাজ্যের উন্নতি সাধনে সেই রাজ্যের শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখা আব্যশক৷ তিনি আশা ব্যক্ত করেন এই চুক্তি ত্রিপুরায় একটি সুুন্দর পরিবেশ তৈরী করবে৷ রাজ্যে শান্তি শৃঙ্খলা বজায় থাকবে৷ মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ত্রিপুরার এই শান্তিপূর্ণ পরিবেশের বার্তা দেশের অন্যান্য রাজ্যে পৌঁছে দিতে হবে৷ তখনই বিভিন্ন রাজ্য থেকে বাণিজ্যিক সংস্থাগুলো আমাদের রাজ্যে ব্যবসা করার প্রতি আগ্রহ প্রকাশ করবে৷ ত্রিপুরা সেই দিশাতেই অগ্রসর হচ্ছে৷


সম্পতি দুবাইতে পাঠানো রাজ্যের বিখ্যাত কিউ প্রজাতির আনারস এবং লেবু সতেজভাবে দুবাইয়ে পৌঁছানোর বার্তার বিষয়েও সাংবাদিকদের অবহিত করেন মুখ্যমন্ত্রী৷ রপ্তানীক’ত এই আনারস এবং লেবু সতেজভাবে কম সময়ে গন্তব্যস্থানে পৌঁছানোর জন্য তিনি সন্তোষ ব্যক্ত করেন৷ আগামীদিনে আনারস এবং লেবু এই ভাবে পৌঁছে দিলে দুবাইয়ের বাজার সহজভাবে ধরা যাবে বলে মুখ্যমন্ত্রী আশা ব্যক্ত করেন৷ এর ফলে রাজ্যের আনারস এবং লেবু চাষীরাও আর্থিকভাবে উপক’ত হবেন বলে তিনি অভিমত ব্যক্ত করেন৷


রাজ্য সচিবালয়ে এদিনের বনমহোৎসব কর্মসূচিতে মুখ্যসচিব ইউ ভেঙ্কটেশ্বরলু, অতিরিক্ত মুখ্যসচিব মনোজ কুমার, প্রধান মুখ্য বন সংরক্ষক ড. অলিন্দ রস্তোগী একটি করে ব’ক্ষ রোপন করনে৷ উল্লেখ্য, অনুষ্ঠানে মূলত নাগেশ্বর, আগর, আমলকি, বয়ড়া, হরতকি গাছের চারা লাগানো হয়৷ অনুষ্ঠানে বন দপ্তর এবং সচিবালয়ের পদস্থ আধিকারিকগণও উপস্থিত ছিলেন৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *