নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ২৯ জুলাই৷৷ রাজ্যপাল পদে শপথ নিয়েছেন রমেশ বাইশ৷ সোমবার ত্রিপুরা হাইকোর্টের মুখ্য বিচারপতি সঞ্জয় কারোল তাঁকে শপথবাক্য পাঠ করিয়েছেন৷ রাজ্যের ১৮তম রাজ্যপাল হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণ করেছেন বাইশ৷ প্রথা অনুযায়ী আজ শপথ নেওয়ার পর রাজ্যপালকে গার্ড অব অনার দেওয়া হয়েছে৷

শপথ গ্রহণ শেষে মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব মন্ত্রিসভার সদস্যদের সাথে তাঁর পরিচয় করিয়ে দেন৷ এছাড়াও তিনি ত্রিপুরা প্রশাসনের শীর্ষ আধিকারিকদের সঙ্গেও পরিচিত হয়েছেন৷ আজকের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে বিএসএফ, সিআরপিএফ, অসম রাইফেলস, ত্রিপুরা কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড় ভি এল ধারুরকর, বিজেপি-র বিধায়কগণ উপস্থিত ছিলেন৷ তাঁদের সাথেও রাজ্যপাল পরিচিত হয়েছেন৷
পরে রাজ্যপাল রমেশ বাইশ সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বলেন, অনেক বড় দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে আমাকে৷ তাই, ত্রিপুরার উন্নয়নের চেষ্টার কোনও ত্রুটি রাখব না৷ তাঁর কথায়, শুনেছিলেন ত্রিপুরা খুবই সুন্দর৷ এখানে এসে বুঝতে পেরেছি, যতটা শুনেছিলাম ত্রিপুরা তার থেকেও অনেক বেশি সুন্দর৷ তিনি বলেন, ত্রিপুরা প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর৷ এই মনোরম পরিবেশে ত্রিপুরার উন্নয়নে কাজ করার আনন্দটাই হবে আলাদা, সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন তিনি৷
নতুন রাজ্যপালের দাবি, কেন্দ্রীয় সরকারের সহযোগিতায় ত্রিপুরার উন্নয়নে কখনওই পিছপা হব না৷ মুখ্যমন্ত্রীর সাথে এ-বিষয়ে আলোচনা করব৷ সাথে যোগ করেন, প্রদেশের কী সমস্যা তা মুখ্যমন্ত্রীর কাছ থেকে জানব৷ তাঁর কথায়, ত্রিপুরার উন্নয়নে ঘাটতি মেটাতে শীঘ্রই প্রয়াস নেব৷
রাজ্যপাল সম্পর্কে ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব বলেন, ১৯৯৯ সাল থেকে তাঁর সাথে আমার পরিচয়৷ তাই, তাঁর অভিজ্ঞতা সম্পর্কে সম্পূর্ণ ওয়াকিবহাল আমি৷ মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, রাজ্যপাল রমেশ বাইশের কেন্দ্রীয় মন্ত্রী এবং ৭ বারের সাংসদের অভিজ্ঞতা রয়েছে৷ সেই অভিজ্ঞতার উপকারিতা মিলবে বলে মুখ্যমন্ত্রী আশা প্রকাশ করেন৷ তাছাড়া, তিনি সাংগঠনিক কাজকর্মও দায়িত্ব নিয়ে করেছেন এবং সাফল্যের ছাপ রেখেছেন৷ তাঁর দাবি, রাজ্যপাল রমেশ বাইশের এই অভিজ্ঞতার জন্য কাজ করতে খুবই সহজ হবে৷
এদিকে, রাজ্যপাল রমেশ বাইশ আজ সন্ধ্যায় উদয়পুরে মাতা ত্রিপুরেশ্বরী মন্দির পরিদর্শন করেন এবং মন্দিরে পুজো দেন৷ মাতাবাড়ি পরিদর্শনকালে রাজ্যপাল পত্নী রামবাই বাইশ এবং তাঁর আত্মীয়-পরিজনগণও তাঁর সঙ্গে ছিলেন৷ পরিদর্শনের সময় গোমতী জেলার জেলাশাসক টি কে দেবনাথ এবং প্রশাসনের অন্যান্য পদস্থ আধিকারিকগণ সেখানে উপস্থিত ছিলেন৷ মন্দির পরিদর্শনের পর রাজ্যপাল কল্যাণ সাগরও পরিদর্শন করেন৷ সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপচারিতায় রাজ্যপাল বলেন, ত্রিপুরায় এসেই রাজ্যের কল্যাণের জন্য মা ত্রিপুরেশ্বরীর আশীর্বাদ প্রার্থনা করতে আমি এখানে এসেছি৷
এদিকে, নতুন রাজ্যপাল রমেশ বাইশের সম্মানে আজ সন্ধ্যায় পুরোনো রাজভবনের দরবার হলে রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে এক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়৷ অনুষ্ঠানে রাজ্যপাল রমেশ বাইশ ছাড়াও মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব এবং তাঁর মন্ত্রিসভার সদস্যগণ, ত্রিপুরা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি সঞ্জয় কারোল, মুখ্যসচিব ইউ ভেঙ্কটেশ্বরলু এবং রাজ্য প্রশাসনের উচ্চপদস্থ আধিকারিকগণ উপস্থিত ছিলেন৷

