নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ২৭ জুলাই৷৷ ত্রিপুরায় সাঙ্গ হল ত্রিস্তর পঞ্চায়েত নির্বাচন৷ গ্রাম পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতি এবং জিলা পরিষদের নির্বাচনে সম্ভাব্য গড় ৭৬.৬৩ শতাংশ ভোট পড়েছে৷ ত্রিপুরায় ত্রিস্তর পঞ্চায়েত নির্বাচন শান্তিপূর্ণ পরিবেশেই অনুষ্ঠিত হয়েছে৷ তবে, কোথাও কোন অপ্রীতিকর ঘটনার খবর মিলেনি বলে জানিয়েছেন রাজ্য নির্বাচন কমিশনের সচিব প্রসেঞ্জিৎ ভট্টাচার্য্য৷
তিনি জানান, সারা রাজ্যের সমস্ত বুথের এখনো পুরো তথ্য আসেনি৷ বিডিও-রা এখন ভোটের পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট পাঠাননি৷ ফলে, চূড়ান্ত ভোটের হার বলা সম্ভব হচ্ছে না৷ তাই, আগামীকাল ত্রিস্তর পঞ্চায়েত ভোটে চূড়ান্ত হার জানানো হবে, বলেন তিনি৷
প্রসঙ্গত, আজ ত্রিপুরায় ত্রিস্তর পঞ্চায়েতে ৯৯৪টি আসনে নির্বাচনে ২৪৩৮ জন প্রার্থীর ভাগ্য নির্ধারণ হবে৷ ত্রিস্তর পঞ্চায়েত নির্বাচনে গ্রাম পঞ্চায়েতে ৬১১১টি, পঞ্চায়েত সমিতিতে ৪১৯টি এবং জিলা পরিষদে ১১৬টি আসন রয়েছে৷ তার মধ্যে গ্রাম পঞ্চায়েতে ৮৩৩টি, পঞ্চায়েত সমিতিতে ৮২টি এবং জিলা পরিষদের ৭৯টি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে৷ তাতে দেখা যাচ্ছে, বিজেপি ৮৫৪ শতাংশ আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয়েছে৷
রাজ্য নির্বাচন কমিশনার জি কে রাও জানিয়েছেন, ত্রিস্তর পঞ্চায়েতে ১৮৪৮টি বুথে ভোট গ্রহণ করা হবে৷ তিনি বলেন, এই নির্বাচনে বিজেপি প্রার্থীরা সব আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন৷ সে-ক্ষেত্রে গ্রাম পঞ্চায়েতে ৮৩৩টি আসনে সিপিএমের ৩৯৩ জন, কংগ্রেসের ৬১২ জন, আইপিএফটির ৩৭ জন, সিপিআই-র ৪ জন, নির্দল ৯১ জন এবং অন্যান্য ৩৬ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রয়েছেন৷ ফলে, বিজেপি-র ৮৩৩ জন প্রার্থী মিলিয়ে গ্রাম পঞ্চায়েতে মোট প্রার্থী ২০০৯ জন৷ সাথে তিনি বলেন, পঞ্চায়েত সমিতিতে ৮২টি আসনে সিপিএমের ৫৬ জন, কংগ্রেসের ৬০ জন, আইপিএফটির ২ জন, সিপিআই-র ১ জন, নির্দল ১০ জন এবং অন্যান্য ১ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রয়েছেন৷ ফলে, বিজেপি-র ৮২ জন প্রার্থী মিলিয়ে গ্রাম পঞ্চায়েতে মোট প্রার্থী ২১২ জন৷ এছাড়া, জিলা পরিষদে ৭৯টি আসনে সিপিএমের ৬৭ জন, কংগ্রেসের ৬৩ জন, আইপিএফটির ২ জন, ফরোয়ার্ড ব্লকের ৪ জন এবং নির্দল ৫ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রয়েছেন৷ ফলে, বিজেপি-র ৭৯ জন প্রার্থী মিলিয়ে গ্রাম পঞ্চায়েতে মোট প্রার্থী ২১৭ জন৷ সব মিলিয়ে পঞ্চায়েত নির্বাচনে মোট প্রার্থী ২৪৩৮ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন, বলেন তিনি৷
রাজ্য নির্বাচন কমিশনের সচিবের কথায়, সকাল সাতটা থেকে ভোট গ্রহণ শুরু হয়েছে৷ বিকেল চারটা পর্যন্ত সূচী অনুযায়ী চলবে ভোট গ্রহণ প্রক্রিয়া৷ তবে, অনেক বুথেই নির্ধারিত সময় অতিক্রান্ত হওয়ার পরও ভোটারদের লাইন ছিল৷ কিন্তু, তাঁদের সকলের ভোট গ্রহণ করা হয়েছে৷ ভোট গ্রহণে অতিরিক্ত লেগেছে, তাই ভোটের চূড়ান্ত হার জানাতে সমস্যা হচ্ছে৷ তিনি বলেন, অনেক ব্লকের বিডিও এখনো রিপোর্ট তৈরি করেনি৷ ফলে তাঁরা না পাঠালে চূড়ান্তভাবে কিছু বলা যাচ্ছে না৷ তাই, আগামীকাল ভোটের চূড়ান্ত হার জানানো হবে, বলেন তিনি৷ এদিন তিনি জানান, এখনও পর্যন্ত কোথাও কোন গন্ডগোলের খবর পাওয়া যায়নি৷ শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোটাররা ভোটাধিকার প্রয়োগ করছেন৷
এদিকে, ত্রিপুরা বিধানসভার মুখ্য সচেতক কল্যাণী রায় জানিয়েছেন, আজ সকাল থেকেই ভোট গ্রহণ কেন্দ্রে ভোটারদের প্রচন্ড ভিড় লক্ষ্য করা গিয়েছে৷ তবে, বেলা যত গড়িয়েছে ভোটারদের লাইন ততই কমেছে৷ তিনি বলেন, দুপুরের আবারও অনেক বুথে ভোটারদের লাইন বেড়েছে বলে খবর মিলেছে৷ তবে, সর্বত্রই উৎসবের মেজাজে ভোট হচ্ছে৷