নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ১৪ জুলাই ৷৷ ত্রিপুরায় জনজাতিদের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে গঠিত মডালিটি কমিটির রিপোর্ট চাইতে এবং ষষ্ঠ তফশিলি সংশোধনী বিল সংসদে আনার দাবি জানাতে দিল্লি গেলেন আইপিএফটি-র শীর্ষ নেতারা৷ পাশাপাশি, পৃথক রাজ্যের হাওয়া তুলে রাজনৈতিক চাপ তৈরির কৌশলও নেবেন তাঁরা৷ দিল্লি সফরকালে তাঁরা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ-এর সাথে দেখা করতে চাইছেন৷
এ-বিষয়ে আইপিএফটি-র সহ-সাধারণ সম্পাদক মঙ্গল দেববর্মা জানিয়েছেন, তিনভাগে দলের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ দিল্লি রওয়ানা দিয়েছেন৷ তাঁর কথায়, আইপিএফটি-র শীর্ষ নেতৃত্বের ১০ জনের প্রতিনিধি দল দিল্লি সফরে যাচ্ছেন৷ আজ দুপুর দেড়টায় এবং সাড়ে তিনটায় দলের সাত শীর্ষ নেতৃত্ব দিল্লি পৌঁছেছেন৷ তিনি জানান, আইপিএফটি সভাপতি তথা রাজস্ব মন্ত্রী এনসি দেববর্মা, সাধারণ সম্পাদক তথা উপজাতি কল্যাণমন্ত্রী মেবারকুমার জমাতিয়া, সহ-সভাপতি কেকে জমাতিয়া, বিধায়ক প্রশান্ত দেববর্মা, বিধায়ক সিন্ধুচন্দ্র দেববর্মা, বিধায়ক প্রেমকুমার রিয়াং ইতিমধ্যে দিল্লি পৌঁছে গিয়েছেন৷ বাকিরা আজ রাতেই দিল্লি পৌঁছবেন৷
মঙ্গল দেববর্মা জানান, ত্রিপুরায় জনজাতিদের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন মডালিটি কমিটি গঠন করেছিল কেন্দ্রীয় সরকার৷ প্রাকনির্বাচনী প্রতিশ্রুতির অঙ্গ হিসেবেই ওই কমিটি গঠন করা হয়েছিল৷ সে-মোতাবেক কমিটির সদস্যরা ত্রিপুরা সফর করে গিয়েছেন৷ তিনি বলেন, কমিটি গঠনের তিনমাসের মধ্যে রিপোর্ট প্রকাশ করা হবে বলে বিজ্ঞপ্তি জারি হয়েছিল৷ কিন্তু, এখন পর্যন্ত ওই কমিটির রিপোর্ট পাওয়া যায়নি৷ তাই, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথে এ-বিষয়ে কথা বলার জন্যই আমরা দিল্লি যাচ্ছি, বলেন তিনি৷
তাঁর বক্তব্য, জনজাতিদের আর্থিক, সামাজিক, ভাষাগত, কৃষ্টি এবং সাংসৃকতিক উন্নয়নের লক্ষ্যে গঠিত মডালিটি কমিটি আদৌ কোনও রিপোর্ট তৈরি করেছে কিনা, তা জানা খুবই জরুরি হয়ে উঠেছে৷ কারণ, ত্রিপুরায় গোড়া থেকেই পৃথক রাজ্যের আন্দোলন করছে আইপিএফটি৷ সে-ক্ষেত্রে মডালিটি কমিটির রিপোর্টের বিশেষ ভূমিকা রয়েছে৷ তাঁর দাবি, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথে পৃথক রাজ্য ইস্যুতে আলোচনা হবে৷ তাছাড়া ষষ্ঠ তফশিলি সংশোধনী বিল সংসদে পেশ করার জন্যও কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে আবেদন জানানো হবে৷ তাঁর বক্তব্য, এডিসি-র অধিক ক্ষমতায়নে ষষ্ঠ তফশিলি সংশোধন খুবই জরুরি৷ সে-ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় সরকার সংসদে সংশোধনী বিল আনলে তবেই তা সম্ভব হবে৷
এদিকে, ত্রিপুরার বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়েও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তথা বিজেপি-র সর্বভারতীয় সভাপতির সাথে আলোচনা করবেন আইপিএফটি নেতৃবৃন্দ৷ মঙ্গলের কথায়, ত্রিপুরায় জোট বেঁধে সরকার গঠন হয়েছে৷ তাই, জোটধর্ম মেনে চলা উভয় দলের দায়িত্ব৷ তবুও, মাঝে-মধ্যেই দুই শরিক দলের মধ্যে মতানৈক্য দেখা দিচ্ছে৷ উদ্ভূত এই পরিস্থিতির স্থায়ী সমাধানের প্রশ্ণে তাঁরা বিজেপি-র সর্বভারতীয় সভাপতির সাথে আলোচনা করবেন, জানান তিনি৷ তিনি বলেছেন, দুদিনের সফরে আমরা দিল্লি যাচ্ছি৷ আগামী ১৭ জুলাই সকলেই রাজ্যে ফিরব৷ এর মধ্যে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সাথেও দেখা করার চেষ্টা হবে৷