চরম আর্থিক সংকট, রাজ্যে সিপিএমের সর্বক্ষণের কর্মীদের ভাতা বন্ধ

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ১৩ জুলাই ৷৷ রাজ্যে চরম আর্থিক সংকটে পড়েছে সিপিএম৷ এমনই তাঁদের অবস্থা, সর্বক্ষণের পার্টি কর্মীদের ভাতাও বন্ধ করে দিয়েছে৷ শুধু তাই নয়, পার্টির তহবিল সংগ্রহেও ভাটা পড়েছে৷ এমনই চলতে থাকলে, আগামীদিনে দল পরিচালনায় রাজ্যে সম্পদ বিক্রি করতে হবে সিপিএমের৷

সদ্য ক্ষমতাচ্যুত হয়েছে সিপিএম৷ এরই মধ্যে বিপ্লবীদের চরিত্র বেরিয়ে আসছে৷ ক্ষমতা থাকাকালীন অনেক পার্টি দরদী দরাজ হস্তে দান করেছেন৷ অথচ ক্ষমতাচ্যুত হতেই, তাঁরা মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন৷ সূত্রের খবর, রাজ্যে ক্ষমতার পরিবর্তনের পর সিপিএমের সহমর্মিরা পার্টির দানপাত্রে কিছুই ঢালছেন না৷ আগে তাঁরাই সাধ্যমত দান করতেন৷ তাতে পার্টি তহবিলে প্রচুর অর্থ জমা পড়ত৷

চলমান পরিস্থিতিতে সম্প্রতি বিরাট সিদ্ধান্ত নিয়ে সিপিএম রাজ্য কমিটি৷ সূত্রের খবর, পার্টির সর্বক্ষণের কর্মীদের ভাতা বন্ধ করে দিয়েছে সিপিএম৷ আগে ৩-৫ হাজার টাকা ভাতা দেওয়া হতো তাঁদের৷ কিন্তু, তহবিল ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে, এই চিন্তায় সিপিএমের সর্বক্ষণের কর্মীদের ভাতা বন্ধ করে দিয়ে দূর্যোগ কাটাতে চাইছে দল৷ অবশ্য, পশ্চিমবঙ্গেও ক্ষমতা পরিবর্তনের পর সিপিএম সর্বক্ষণের কর্মীদের ভাতা বন্ধ করে দিয়েছিল৷ সেই পথে এবার ত্রিপুরাও হাটল৷

আপাতত, রাজ্যে সিপিএমের রোজগারের অন্যতম মাধ্যম নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের বেতন৷ বরাবরই সিপিএমের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা তাঁদের বেতন পার্টির তহবিল জমা দেন৷ এরপর পার্টি যোগ্যতা অনুযায়ী ভাতা নির্ধারণ করে দেয়৷ সেই টাকা দলের তহবিল থেকে তাঁদের দেওয়া হয়৷ এই রীতি দীর্ঘকাল ধরে চলে আসছে৷

এখন চাদা সংগ্রহও ঠিকমতো হচ্ছে না সিপিএমের৷ অভিযোগ, চাঁদা সংগ্রহে অতীতে বহু জুলুম হয়েছে৷ বাধ্য হয়ে সরকারী কর্মচারী, শ্রমিক, গাড়ির চালকরা সিপিএমকে চাঁদা দিতেন৷ কিন্তু, ক্ষমতা পরিবর্তন হওয়ায় এখন সেই কেটে গিয়েছে৷ ফলে, চাঁদা সংগ্রহেও ভাটা পড়েছে৷

সূত্রের দাবি, এমনই অবস্থা থাকলে দল পরিচালনায় খুব শীঘ্রই রাজ্যে সম্পদ বিক্রি করতে হবে সিপিএমের৷ নইলে দল পরিচালনা সম্ভব হবে না৷ সূত্রের আরো দাবি, রাজ্যে দলের যে অবস্থা তাতে সম্পদ রক্ষনাবেক্ষণও মুশকিল তাঁদের৷ ফলে, আগামীদিনে রাজ্যে দল টিকিয়ে বিরাট চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা করতে হবে সিপিএম-কে৷ কারণ, ভাত বন্ধ করে দেওয়ায় পার্টির সর্বক্ষণের কর্মীরা এখন সিপিএম সাথে থাকতে চাইবেন না বলে মনে করা অস্বাভাবিক হবে না৷ তাতে, দল পরিচালনায় আরো সংকট দেখা দিতে সেই আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না৷ এই সংকট থেকে উত্তোরণ আদৌ সম্ভব বলেও মনে করছে রাজনৈতিক মহল৷ কারণ, ক্ষমতার পরিবর্তনের সাথেই বিপ্লবীদের আসল চরিত্র ফুটে উঠেছে৷