সরকারি নথির গ্যাঁড়াকলে রিয়াং শরণার্থীদের মিজোরামে প্রত্যাবর্তনে অনিশ্চিয়তার ছাপ

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ১১ জুলাই ৷৷ সরকারি নথির গ্যাঁড়াকলে ত্রিপুরায় আশ্রিত রিয়াং শরণার্থীদের মিজোরামে প্রত্যাবর্তনে অনিশ্চিয়তার ছাপ পড়েছে৷ কারণ, মিজোরাম ছেড়ে ত্রিপুরায় আসার সময় অনেকেই সরকারি নথিপত্র সাথে আনেননি৷ তাছাড়া, কয়েক বছর আগে ভয়াবহ অগ্ণিকাণ্ডে রিয়াং শরণার্থীদের অনেকের বাড়িঘর ভস্মীভূত হয়ে গিয়েছিল৷ তাতে অন্তত ৩০০ পরিবারের মিজোরামে প্রত্যাবর্তন অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে৷ তাই, রিয়াং শরণার্থী চিহ্ণিতকরণ প্রক্রিয়াকে ঘিরে জটিল সমস্যার মুখোমুখি তাঁরা৷

প্রসঙ্গত, উত্তর জেলার পানিসাগর মহকুমার হামসা পাড়া, কাকসাংপাড়া, কাসখাও পাড়ার শিবিরগুলিতে রিয়াং শরণার্থীদের শনাক্তকরণ প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হওয়ার পর আজ থেকে আশাপাড়া শিবিরগুলিতে শনাক্তকরণের কাজ শুরু হয়েছে৷ মিজোরাম সরকারের প্রতিনিধিদের প্রক্রিয়াকে ঘিরে তীব্র ক্ষোভ ব্যক্ত করেছেন ’মিজোরাম ব্রু ডিসপ্লেস পিপলস ফোরাম (এমবিডিপিএফ)৷ এই সংগঠনের আশাপাড়া শাখা সভাপতি জাকোপা রিয়াং বলেন, যে সকল ব্রু’’রা জাতিগত দাঙ্গার কারণে দ্বিতীয় দফায় ২০০৯ সালে মিজোরাম থেকে ত্রিপুরায় এসেছেন, তাঁরা তাঁদের ভোটার আইকার্ড ও রেশনকার্ড এবং যাঁরা বিবাহিত তাঁদের ম্যারেজ কার্ড দেখাতে পারছেন না৷ কারণ তাঁরা মিজোরাম থেকে আসার সময় এই সকল নথি নিয়ে আসতে পারেননি৷ তাঁর অভিযোগ, তাঁরা কোন নথি দেখাতে পারেননি, তাই তাঁদের মিজোরামের নাগরিক হিসেবে গণ্য করা হচ্ছে না৷ তাঁর আরও অভিযোগ, ত্রিপুরা সরকারও তাঁদের জন্মের প্রমাণপত্র, রেশন কার্ড এবং ম্যারেজ সার্টিফিকেট দেয়নি৷

তিনি জানান, ত্রিপুরায় আশ্রয় দেওয়ার আগে একটি রেশন রেজিস্টারে তাঁদের নাম নথিভুক্ত করা হয়েছিল৷ মিজোরাম সরকারের আধিকারিকরা ত্রিপুরা সরকারের ওই রেজিস্টারটিও দেখতে চাইছেন না৷ মিজোরামের আধিকারিকদের সাফ কথা, প্রত্যেকের হাতে রেশন কার্ড, ভোটার পরিচয় পত্র অথবা মেরেজ কার্ড থাকতে হবে৷ না হলে তাদের মিজোরামের নাগরিক হিসেবে গণ্য করা হবে না৷

জাকোপা রিয়াং আরও অভিযোগ করেন, ১৯৯৭ সালে প্রথম যাঁরা দাঙ্গার কারণে ত্রিপুরায় এসে আশ্রয় নিয়েছিলেন, তাঁদের মধ্যে অনেকের ঘরবাড়ি পুড়ে গিয়েছিল৷ সাথে নথিপত্রও পুড়ে গিয়েছিল, তাঁদের থানায় জিডি এন্িন্ট করা কাগজগুলিও মিজোরামের আধিকারিকরা মানতে রাজি নন৷ তাতে, বহু পরিবারের নাম বাতিল হচ্ছে৷ তিনি বিদ্রুপ করে বলেন, মিজোরাম সরকার মুখে বললেও বাস্তবে তারা ব্রু-দের ফিরিয়ে নিতে রাজি নয়, তাই নানা ধরনের বাহানা তৈরি করছে৷ শুধুমাত্র আশাপাড়াতেই ৮৮৫ পরিবার লোক রয়েছে৷ যদি মিজোরাম সরকার এই নিয়ম মানে, তা-হলে প্রত্যাবর্তনে প্রায় ৩০০ পরিবারের মতো বাদ পড়তে পারে৷ তবে, এই বিষয়ে মিজোরাম সরকারের প্রতিনিধিদের কোনও বক্তব্য জানা যায়নি৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *