সেনা নামানোর দাবী জানাল কংগ্রেস

নিজস্ব প্রতিনিধি৷৷ নয়াদিল্লি, ২৮ মে৷৷ ত্রিপুরায় সন্ত্রাসের ভয়াবহ চিত্র গোটা দেশের সামনে তুলে ধরার জন্য দিল্লিতে সাংবাদিক সম্মেলন করলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি প্রদ্যুৎ কিশোর দেববর্মণ৷ ত্রিপুরাবাসীর নিরাপত্তায় তিনি আইন-শৃঙ্খলার দায়িত্ব সেনাবাহিনীর হাতে তুলে দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন৷ তাঁর কথায়, ত্রিপুরা পুলিশ রাজ্যবাসীকে নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ, তা প্রমাণিত হয়েছে৷ তাই, ত্রিপুরা পুলিশের উপর ভরসা করার বদলে আসাম রাইফেলসের হাতে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্ব দেওয়া উচিৎ বলে মনে করেন তিনি৷


আজ প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি প্রদ্যুৎ কিশোর দেববর্মণ নির্বাচন কমিশনকেও নিশানা করেছেন৷ তাঁর সাফ কথা, ১১ এপ্রিল ত্রিপুরা পশ্চিম আসনে লোকসভা নির্বাচনে ৪৩৩টি বুথে ভোট কারচুপি হয়েছে, তা নির্বাচন কমিশনই রিপোর্টে স্বীকার করেছিল৷ অথচ, পুনর্ভোট হয়েছে মাত্র ১৬৮টি বুথে৷ তবুও, গোটা দেশের তুলনায় সবচেয়ে বেশি বুথে পুনর্ভোট হয়েছে ত্রিপুরায়, ব্যঙ্গ করে বলেন প্রদ্যুৎ৷


প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি আজ অভিযোগ করেন, জাতীয় সংবাদ মাধ্যমের কাছে পূর্বোত্তর বরাবরই অবহেলিত৷ কারণ, পশ্চিমবঙ্গে সন্ত্রাসের ঘটনা সমস্ত জাতীয় সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত এবং প্রচারিত হচ্ছে৷ কিন্তু, ত্রিপুরায় সন্ত্রাস নিয়ে কোন খবর প্রকাশিত হতে দেখা যায় না৷ তাঁর কথায়, নির্বাচনে অংশগ্রহণ গোটা দেশের মধ্যে সবচেয়ে বেশি হয় ত্রিপুরাতে৷ তবুও গত ১১ এপ্রিল ত্রিপুরা পশ্চিম আসনে লোকসভা নির্বাচনে ব্যাপক সন্ত্রাস এবং ভোট কারচুপির ঘটনা ঘটেছে৷ তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশন স্বীকার করেছে ভোটে কারচুপি হয়েছে৷ রিটার্নিং অফিসারের রিপোর্টে ৪৩৩টি বুথে কারচুপির উল্লেখ থাকলেও, মাত্র ১৬৮টি বুথে পুনর্ভোট হয়েছে৷


প্রদ্যুৎ লোকসভা নির্বাচনকে হাতিয়ার করে আইন-শৃঙ্খলার প্রশ্ণে নির্বাচন কমিশন এবং ত্রিপুরা সরকারকে নিশানা করেছেন৷ তাঁর সাফ কথা, ত্রিপুরায় আইন-শৃঙ্খলার অবনতির কারণেই পূর্ব আসনে ভোট পিছিয়ে দেওয়া হয়েছিল৷ শুধু তাই নয়, নির্বাচনোত্তর সন্ত্রাসে মানুষ বাড়িতে থাকতে পারছেন না৷ বহু মানুষ সন্ত্রাসের শিকার হয়েছেন৷ তাঁদের হাসপাতালে চিকিৎসা চলছে৷ তাঁর বক্তব্য, নির্বাচনোত্তর সন্ত্রাসে আক্রান্তদের ক্ষতিপূরণের দাবিতে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন জানাবে কংগ্রেস৷


আজ প্রদ্যুৎ বলেন, ত্রিপুরায় সন্ত্রাস এমন পর্যায়ে গিয়ে পৌছেছে মানুষ জঙ্গলে আশ্রয় নিয়েছে৷ তিনি জানতে চেয়েছেন, কংগ্রেসকে ভোট দিলে ভোটারদের মার খেতে হবে কেন? গণতন্ত্রে সকলের সমান অধিকার৷ কিন্তু, শুধু বিজেপিই কেন ভোট পাওয়ার অধিকারী হতে পারে৷ তাঁর দাবি, ত্রিপুরায় আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি পুরো ভেঙ্গে পড়েছে৷ সেজন্যই লোকসভা নির্বাচনে নির্বাচন কমিশন এডিজি আইন-শৃঙ্খলাকে সরিয়ে দিয়েছিল৷ তিনি বলেন, ত্রিপুরায় আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার জন্য আসাম রাইফেলসের হাতে দায়িত্ব তুলে দেওয়া খুবই জরুরি৷ তাঁর মতে, আসাম রাইফেলস কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের অধিন৷ ত্রিপুরায় দীর্ঘদিন ধরে তাঁরা জন নিরাপত্তায় নিয়োজিত রয়েছে৷ তাই, আসাম রাইফেলসের হাতে ত্রিপুরায় আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্ব তুলে দেওয়া হলে রাজ্যবাসী উপকৃত হবেন৷