নিজস্ব প্রতিনিধি, নয়াদিল্লি, ২৩ মে৷৷ শক্তি বাড়িয়ে আছড়ে পড়ল মোদি ঝড়৷ ঝড়ের প্রভাব এতটাই ছিল যে, একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা ছাড়িয়ে তিনশ’র গন্ডি পার করতে চলেছে বিজেপি৷ স্বাভাবিকভাবেই, আবার প্রধানমন্ত্রী হচ্ছেন নরেন্দ্র মোদি৷ তাঁর কাঁধে ভর করেই লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির বিরাট সাফল্য, তা অস্বীকার করার কোন উপায় নেই৷ গণনা সমাপ্ত হয়নি৷ কিন্তু, বিজেপি একা ২৭৪টি আসনে জয়ী হয়েছে৷ আরো ২৯টি আসনে বিজেপি এগিয়ে রয়েছে৷ ফলে, চূড়ান্ত ফলাফল ঘোষণার পর বিজেপির একা আসন সংখ্যা হবে ৩০৩৷ অবশ্য, ২০১৪ লোকসভা নির্বাচনের তুলনায় এবার আসন বাড়িয়েই থেমে থাকেনি বিজেপি৷ এবার ভোটের হারও গত লোকসভা নির্বাচনের তুলনায় বেড়েছে বিজেপির৷ ২০১৪ লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি ২৮২টি আসনে জয়ী হয়েছিল এবং ৩১.৩৪ শতাংশ ভোট পেয়েছিল৷ এবার ভোটের হার বেড়ে হতে চলেছে ৪৫ শতাংশ৷
লোকসভা নির্বাচনের ফলাফল স্পষ্ট হতেই, বিজেপি মুখ্য কার্যালয়ে সমর্থকদের কাছে নরেন্দ্র মোদি নতুনভাবে স্বপ্ণ ফেরি করলেন৷ দেশবাসীর ঢালাও সমর্থন তাঁকে আরো বেশী দায়বদ্ধ করে তুলেছে সে-কথাও স্বীকার করলেন৷ সাথে তিনি ফকিরের ঝোলা ভর্তি করে দেওয়ার জন্য দেশবাসীর সমস্ত আশা-আকাঙ্খা পূরণের প্রতিশ্রুতি দিলেন৷ আজ নরেন্দ্র মোদির পরাক্রমে কংগ্রেস সহ বিরোধীরা আরো বেশী ছন্নছাড়া এবং দূর্বল হয়ে পড়েছেন৷ মোদি ঝড়ের গতি এতটাই ছিল যে বিরোধীরা খড়কুটোর মতো উড়ে গেলেন৷ তাই, এযাত্রায় মোদি বিদায়ের স্বপ্ণ বিরোধীদের অধরাই রয়ে গিয়েছে৷ অবশ্য, ছন্নছাড়া বিরোধীরা সেই যোগ্যতা আদৌ অর্জন করতে পারবে বলে বিশ্বাস করতে পারছে না রাজনৈতিক মহল৷
জওহর লাল নেহরু এবং ইন্দিরা গান্ধীর সঙ্গে এক সারিতে ঢুকে পড়লেন নরেন্দ্র দামোদর দাস মোদী৷ দ্বিতীয়বারের জন্য প্রধানমন্ত্রীর তখতে বসতে চলেছেন মোদী৷ একই সঙ্গে ইতিহাস তৈরি করে ফেললেন তিনি৷
এদিনের ফলাফলের পর মোদী দু’টি ইতিহাস তৈরি করেছেন৷ মোদীই প্রথম অকংগ্রেসী প্রধানমন্ত্রী যিনি পরপর দু’বার এই পদে আসীন হতে চলেছেন৷ দ্বিতীয় রেকর্ডটি আরও চিত্তাকর্ষক৷ নরেন্দ্র মোদীই হতে চলেছেন তৃতীয় প্রধানমন্ত্রী যিনি পরপর দু’বার একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে ক্ষমতায় এসে প্রধানমন্ত্রী হলেন৷ এর আগে এই রেকর্ড ছিল কংগ্রেসের দখলে৷ স্বাধীন ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু পরপর তিনবার প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন৷
নেহরুর রেকর্ড বজায় রাখেন কন্যা ইন্দিরা৷ তিনিও পরপর দু’বার প্রধানমন্ত্রী হন৷ এঁরা দু’জনেই শরিক দলের সাহায্য ছাড়াই ম্যাজিক ফিগার ছুঁয়ে সরকার গঠন করেন৷ ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি হল ২০১৯ সালে৷ তবে বিজেপির নরেন্দ্র মোদীর হাত ধরে৷ গতবারের থেকে আসনও বেড়েছে বিজেপির৷ ২০১৪ সালে ২৮২টি আসন পায় মোদীর দল৷ এবার তিনশো পার হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে৷
এদিকে, রাজধানী দিল্লিতে দলীয় কর্মীদের উদ্দেশ্য দেওয়া ভাষণে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী দাবি করলেন, লোকসভা নির্বাচনে কেউ যদি প্রকৃত ভাবে জয়যুক্ত হয় তবে তা ভারত৷ দেশের গণতন্ত্র জয়ী হয়েছে৷ এদিন নরেন্দ্র মোদী বলেন, দেশের কোটি কোটি মানুষ এই ফকিরকে ঝুলি ভর্তি করে দিয়েছে৷ দেশের ১৩০ কোটি মানুষের প্রতি আমার শ্রদ্ধা জানাই৷ এই জয়কে দেশবাসীর প্রতি উৎসর্গ করছি৷ দলমত নির্বিশেষে সমস্ত জয়ী প্রার্থীকে অভিনন্দন জানাই৷ চলতি নির্বাচনে সেকুর্লারিসমের মুখোশ পরে জনগণকে বোঝাতে ব্যর্থ হয়েছে কয়েকটি দল৷ ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াসে দাঁড়িয়ে সাধারণ মানুষ ভোট দিয়ে ভারতীয় গণতন্ত্রকে অন্য উচ্চতাই নিয়ে গিয়েছে৷
গীতা শ্লোক তুলে ধরে নরেন্দ্র মোদী বলেন, মহাভারতের যুদ্ধের পর কৃষ্ণ বলেছিলেন যে তিনি কারও পক্ষে নন৷ তিনি হস্তিনাপুরের পক্ষে৷ একই ভাবে চলতি নির্বাচনে কৃষ্ণের ভূমিকা পালন করেছে দেশের নাগরিকেরা৷ দেশবাসী জাতীয় স্বার্থকে সব চেয়ে বেশি অগ্রাধিকার দিয়েছে৷ নতুন ভারত গড়ার জনাদেশ দেশবাসী দিয়েছে৷ এদিন দলীয় কার্যালয়ে নরেন্দ্র মোদীকে স্বাগত জানান বিজেপি সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ৷ উপস্থিত ছিলেন রাজনাথ সিং, শিবরাজ সিং চৌহান, রামলাল, সুষমা স্বরাজ৷এর আগে ট্যুইট করে প্রধানমন্ত্রী লেখেন, ভারতবাসীদের ধন্যবাদ জানাই৷ যে ভাবে দেশবাসী আস্থা দেখিয়েছেন তাতে আরও বেশি কাজ করে যাবে সরকার৷ একাগ্রতা, কঠোর পরিশ্রমের জন্য বিজেপি কর্মীদের কুর্নিশ জানাই৷
প্রসঙ্গত, দেশজুড়ে গেরুয়া ঝড়ে উড়ে গেল কংগ্রেস৷ শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ জোট ইতিমধ্যেই ৩৩৮টি আসনে জয়লাভ করে ফেলেছে৷ পাশাপাশি এগিয়ে রয়েছে আরও ১৬টি আসনে৷ কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইউপিএ জোট জয়ী হয়েছে ৮৬তে৷ এগিয়ে ৪টিতে৷ নক্ষত্রপতন কংগ্রেসের৷ জয়ের জন্য দেশবাসীকে শুভেচ্ছা নরেন্দ্র মোদীর৷ স্বাগত জানিয়েছে আরএসএস৷ লোকসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের নক্ষত্র পতন৷ পরাজিত শতাব্দী প্রচীন দলের হেভিওয়েট নেতা৷
কর্ণাটকে চিক্কাবল্লাপুর লোকসভা কেন্দ্রে প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা বর্ষীয়ান কংগ্রেস নেতা এম বীরাপ্পা মইলি পরাজিত৷ প্রায় ১,৮২,১১০ ভোটে বি এন বাচে গৌডার কাছে পরাজিত হতে হয় মইলিকে৷ গৌডা পান ৭,৪৫,৯১২ ভোট৷ বীরাপ্পা মইলি পান ৫,৬৩,৮০২ ভোট৷ ২০১৪ সালে এই গৌডাকে হারিয়েছিল মইলি৷ কিন্তু এবার সেই ফলাফলের আর পুনরাবৃত্তি হল না৷
কর্ণাটকের গুলবর্গা লোকসভা আসন থেকে পরাজিত হন আরও এক হেভিওয়েট কংগ্রেস নেতা মল্লিকার্জুন খারগে৷ পরাজয়ের পর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে মল্লিকার্জুন খারগে বলেন, জনগণের এই রায় মেনে নিলাম৷ গণতন্ত্রে বিশ্বাসী আমরা৷ যে ভুলগুলি হয়েছে তা খতিয়ে দেখা হবে৷
মধ্যপ্রদেশের ভোপাল লোকসভা কেন্দ্রে সাধবী প্রজ্ঞা কাছে হারলেন মধ্যপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী দিগ্বিজয় সিং৷ পরাজয়ের পর দিগ্বিজয় সিং বলেন জনাদেশ মেনে নিলাম৷ রাজ্যের গুনা লোকসভা কেন্দ্রে পরাজিত হয়েছেন জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া৷ অন্যদিকে উত্তরপূর্ব দিল্লিতে ভোজপুরী তারকা তথা বিজেপি নেতা মনোজ তিওয়ারি কাছে হারতে হয় শীলা দীক্ষিতের৷ নয়াদিল্লি লোকসভা কেন্দ্রে মীনাক্ষী লেখির কাছে হারতে হয়েছে অজয় মাকেনকে৷
কেরলের ওয়ানাড লোকসভা কেন্দ্র নিজের দখলে রাখতে পারলেও আমেঠিতে স্মৃতি ইরানির কাছে হারতে হয় রাহুল গান্ধীকে৷ লোকসভা নির্বাচনে বিপুল ভাবে জয়যুক্ত হওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে অভিনন্দন জানালেন বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতিশ কুমার৷ পাশাপাশি বিহারের ৪০টি লোকসভা আসনে আরজেডি-কংগ্রেস জোটকে চূর্ণ করে দিয়েছে বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ জোট৷ এখনও পর্যন্ত ৩৯টি আসনে এগিয়ে রয়েছে বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ জোট৷ বক্সরে বিজেপি প্রার্থী অশ্বিনীকুমার, বেগুসরাইয়ে কেন্দ্রীয়মন্ত্রী গিরিরাজ সিং চৌহান, পাটনাসাহিবে রবিশঙ্কর প্রসাদ, পূর্ব চম্পারণ থেকে বিজেপির রাঁধা মোহন সিং, সারন থেকে রাজীব প্রতাপ রুডি জয়যুক্ত হয়েছে৷
জোটের এই সাফল্যের পর জেডি(ইউ) নেতা তথা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী নীতিশ কুমার বলেন, দেশজুড়ে যে বিপুল সমর্থন প্রধানমন্ত্রী পেয়েছেন তার জন্য তাঁকে অভিনন্দন জানাই৷ জনগণ স্পষ্ট জনাদেশ দিয়েছে৷ ফলে আমাদের উপর অনেক দায়িত্ব এসে পড়েছে৷ নির্বাচনের সময় পরিস্থিতি হিংসাত্মক করে দেওয়ার চক্রান্ত হয়েছিল৷ কিন্তু জনগণ তা ব্যর্থ করে দিয়েছে৷ অনগ্রসর শ্রেণীর উন্নয়নের উপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হবে৷
লোকসভা নির্বাচনে কেউ যদি প্রকৃত ভাবে জয়যুক্ত হয় তবে তা ভারত৷ দেশের গণতন্ত্র জয়ী হয়েছে৷ বৃহস্পতিবার রাজধানী দিল্লিতে দলীয় কর্মীদের উদ্দেশ্য করে দেওয়া ভাষণে এমনই দাবি করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী৷
এদিন নরেন্দ্র মোদী বলেন, দেশের কোটি কোটি মানুষ এই ফকিরকে ঝুলি ভর্তি করে দিয়েছে৷ দেশের ১৩০ কোটি মানুষের প্রতি আমার শ্রদ্ধা জানাই৷ এই জয়কে দেশবাসীর প্রতি উৎসর্গ করছি৷ দলমত নির্বিশেষে সমস্ত জয়ী প্রার্থীকে অভিনন্দন জানাই৷ চলতি নির্বাচনে সেকুর্লারিসমের মুখোশ পরে জনগণকে বোঝাতে ব্যর্থ হয়েছে কয়েকটি দল৷ ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াসে দাঁড়িয়ে সাধারণ মানুষ ভোট দিয়ে ভারতীয় গণতন্ত্রকে অন্য উচ্চতাই নিয়ে গিয়েছে৷
গীতা শ্লোক তুলে ধরে নরেন্দ্র মোদী বলেন, মহাভারতের যুদ্ধের পর কৃষ্ণ বলেছিলেন যে তিনি কারও পক্ষে নন৷ তিনি হস্তিনাপুরের পক্ষে৷ একই ভাবে চলতি নির্বাচনে কৃষ্ণের ভূমিকা পালন করেছে দেশের নাগরিকেরা৷ দেশবাসী জাতীয় স্বার্থকে সব চেয়ে বেশি অগ্রাধিকার দিয়েছে৷ নতুন ভারত গড়ার জনাদেশ দেশবাসী দিয়েছে৷
এদিন দলীয় কার্যালয়ে নরেন্দ্র মোদীকে স্বাগত জানান বিজেপি সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ৷ উপস্থিত ছিলেন রাজনাথ সিং, শিবরাজ সিং চৌহান, রামলাল, সুষমা স্বরাজ৷
এর আগে ট্যুইট করে প্রধানমন্ত্রী লেখেন, ভারতবাসীদের ধন্যবাদ জানাই৷ যে ভাবে দেশবাসী আস্থা দেখিয়েছেন তাতে আরও বেশি কাজ করে যাবে সরকার৷ একাগ্রতা, কঠোর পরিশ্রমের জন্য বিজেপি কর্মীদের কুর্নিশ জানাই৷
আরএসএস তরফ থেকে বিজেপির এই বিপুল জয়কে স্বাগত জানানো হয়েছে৷ জাতীয়তাবাদী শক্তির জয় হয়েছে বলে আরএসএসের তরফে দাবি করা হয়েছে৷
বৃহস্পতিবার আরএসএসের সরকার্যবাহ সুরেশ (ভাইয়াজি) জোশী বলেন, ভারতীয়রা ভাগ্যবান যে তারা ফের স্থায়ী সরকার পেতে চলেছে৷ এতে জাতীয়তাবাদী শক্তির জয় হয়েছে৷ গণতন্ত্রের এই বিপুল জয়ে যারা যোগদান করেছে তাদের অভিনন্দন জানাই৷ ভারতীয় গণতন্ত্রের আদর্শ এবং স্বতস্ফূর্ততা গোটা বিশ্বে প্রমাণিত হয়েছে৷ নতুন সরকার দেশবাসীর আশা-আকাঙ্খাকে পূরণ করবে৷ নির্বাচনের আগে যে তিক্ততা তৈরি হয়েছিল, তার অবসাণ হবে৷
১১ কোটি বিজেপি কর্মী এবং ১২৫ কোটি দেশবাসীর জন্য এই জয় সম্ভব হয়েছে৷ বৃহস্পতিবার বিকেলে বিজেপির দলীয় কার্যালয়ে সামনে কর্মী এবং সমর্থকদের উদ্দেশ্য করে এমনই দাবি করলেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ৷ এই জনাদেশ থেকে স্পষ্ট দেশবাসী পরিবারতন্ত্র, জাতপাত এবং তোষণের রাজনীতিকে খারিজ করে দিয়েছে৷ বিজেপি কর্মীরা সফল ভাবে সবকা সাথ সবকা বিকাশের দর্শনকে সাধারণ মানুষের কাছে নিয়ে যেতে সফল হয়েছে৷
কংগ্রেসের বিরুদ্ধে আক্রমণ শানিয়ে অমিত শাহ বলেন, দেশের ২১ রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে খাতাই খুলতে পারেনি কংগ্রেস৷ এদিন নিজের ভাষণে যেমন কর্মীদের অভিনন্দন জানিয়েছেন৷ পাশাপাশি গত পাঁচ বছরে মোদী সরকারের উন্নয়নমূলক কাজের জন্যই এই সাফল্য বলেও ব্যাখ্যা করেছেন তিনি৷ তাঁর কথায়, স্বাধীনতার পর এটাই সবচেয়ে বড় জয়৷ তাই এটা সকলের জন্য গৌরবময় বলেই তিনি দাবি করেছেন৷ প্রসঙ্গত, ২০১৪ সালে মোদী ঝড়ে উড়ে গিয়েছিল বিরোধীরা৷ এনডিএ পেয়েছিল ৩০০-র বেশি আসন৷ বিজেপি পেয়েছিল ২৮২টি আসন৷ যদিও এর পর একাধিক উপ-নির্বাচনে হারতে হয়েছে বিজেপিকে৷ সব মিলিয়ে বিজেপির আসন সংখ্যা নেমে দাঁড়ায় ২৭২-এ৷
ফলে এবার জল্পনা ছিল বিজেপি কেমন ফল করে তার উপর৷ রাজনৈতিক মহলের একটা অংশের দাবি ছিল, শক্তি কমিয়ে ক্ষমতায় ফিরবে বিজেপি৷ মোদীর দলের একক সংখ্যাগরিষ্ঠ হওয়া অসম্ভব ছিল বলেই ওই মহলের দাবি ছিল৷
বাঙ্গাল কী অন্দর, বাঙ্গাল কী অন্দর, বাঙ্গাল কী অন্দর৷ এক বার নয়, বারবার একই কথা উচ্চারণ করলেন অমিত শাহ৷ আর কর্মী সমর্থকদের মধ্য থেকে উঠে এল উল্লাশ ধবনী৷ আর সেই উল্লাস ধবনীকে উস্কে দিতে বাক্য শেষ করার আগে ‘ভারত মাতা কী জয়’ ধবনী তুললেন অমিত শাহ৷ তৈরি করলেন এক নাটকীয় পরিবেশ৷ আর তার পরেই তাঁর গলা থেকে শোনা গেল বাংলার বিধানসভা দখলের হুঙ্কার৷
পশ্চিমবঙ্গের ফল নিয়ে উল্লসিত বিজেপি৷ ২ থেকে ১৮ আসনে পৌঁছে যাওয়ার উল্লাস খোদ দিল্লিতে৷ খোদ বিজেপি সভাপতি অমিত শাহর গলায়৷ এদিন গোটা দেশের ফল প্রকাশের পরে সদর দফতর থেকে কর্মী, সমর্থকদের উদ্দেশে বক্তব্য রাখেন অমিত৷ আর তাতে বাংলার জন্য আলাদা করে সময় দিলেন বিজেপি সভাপতি৷
এদিন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ছাড়াও ওই বিজয় সমাবেশে হাজির ছিলেন বিজেপি সংসদীয় কমিটির সদস্যরা৷ আর হাজির ছিল হাজারে হাজারে বিজেপির কর্মী সমর্থক৷ আর তাদের সামনেই অমিত শাহ অন্ধ্র প্রদেশে সরকার গঠনের জন্য জগন রেড্ডি, ওড়িশায় নবীন পট্টনায়ক, সিকিমের পবন চামলিং এবং তাদের দলকে অভিনন্দন জানালেন৷ কিন্তু তার জন্য সব মিলিয়ে যে সময় তিনি খরচ করেছেন তার থেকে বেশ সময় দিলেন বাংলাকে৷ বুঝিয়ে দিলেন বাংলা বিজেপির কাছে অন্য কিছু হয়ে উঠেছে নির্বাচনের এই ফলে৷
এদিন অমিত শাহ বলেন, লোকসভায় ১৮টি আসন আর বিধানসভা উপনির্বাচনে পাঁচটি আসন জয় বুঝিয়ে দিয়েছে এবার বাংলার ক্ষমতা দখল করতে চলেছে বিজেপি৷ সেই সঙ্গে এই রাজ্যে ৮০ জন বিজেপি কর্মীর কথাও স্মরণ করেন অমিত শাহ
পশ্চিমবঙ্গে রাজনৈতিক হিংসায় যে ৮০ জন বিজেপি কর্মীদের খুন করা হয়েছে, তাও উল্লেখ করেন বিজেপি সভাপতি৷