নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ১৭ মে৷৷ এক নাবালিকা উদ্ধারের জন্য সারারাত জেগে তল্লাশি চালালেন রাজ্য মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন বর্ণালী গোস্বামী৷ তার এই উদ্যম প্রশংসনীয়৷ কেননা বিগত ২৫ বছরের বাম আমলে মহিলা কমিশনের এমন তৎপরতা রাজ্যবাসীর নজরে পরেনি৷

উন্নত শিক্ষা লাভের উদ্দেশ্যে ইতিমধ্যে বহু ছাত্রছাত্রী উত্তরজেলার বহু মফস্বল এলাকা থেকে এসে ধর্মনগরে ঘরভাড়া করে থেকে পড়াশোনা করছে৷ ধর্মনগরের প্রায় প্রতিটি বিদ্যালয়েয় এমন ছাত্রছাত্রী রয়েছে৷ ঠিক এমনি একটি ছাত্রী কাঞ্চনপুর দসদা থেকে এসে নয়াপাড়া কলেজ রোড এলাকায় থেকে পড়াশোনা করতো৷গত বুধবার সকালে তার বাড়ি যাওয়ার কথাছিল৷ কিন্তু সন্ধ্যা গাড়িয়ে রাত হতে থাকলেও সে বাড়ি না পৌছায় শুরু হয় খোঁজাখুঁজি৷ পরিবারের লোকজন বার বার তার মোবাইলে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন৷ যোগাযোগ হয় তার এক সহপাঠীর সঙ্গে৷ সেও জানায় মেয়েটি বাড়ির উদ্দেশ্যে দুপুরেই বেড়িয়ে গেছে৷
চারিদিকে খোজাখোজির মধ্যে আচমকা রাত ১২ টায় নিখোঁজ মেয়েটি তার ভাইয়ের মোবাইলে এস এম এস করে জানায়৷ সে খুব সমস্যায় আছে৷ এতে পরিবারের লোকজন আরোও ভেঙ্গে পরেন৷ বৃহস্পতিবার সকাল হতেই নাবালিকার ভাই বাবা সহ বেশ কয়েকজন আত্মীয়পরিজন ধর্মনগর ছুটে আসেন৷এদিকে তার ভাই অনবরত তার সাথে মোবাইল যোগে কথা বলার চেষ্টা করতে থাকলে বৃহস্পতিবার সকালে একটি ছেলে মোবাইল ফোনটি রিসিভ করে বলেন সে তাদের বাড়ি আছে৷কিন্তু নাবালিকার ভাই মেয়েটির সাথে কথা বলতে চাইলেও নিখোঁজ নাবালিকাকর সাথে কথা বলতে দেওয়া হয়নি৷ এতে তাদির আতঙ্ক আরোবাড়ে৷তারা বিষয়টি জানাতে ধর্মনগর মহিলা থানায় যান৷ কথা বলেন ধর্মনগর মহিলা থানার ওসি স্বর্ণা দেববর্মার সাথে৷থানাথেকে মেয়েটির সাথে মোবাইলে কথা বলার চেষ্টা করলেও মেয়েটি সাথে কথা হয়নি৷ কিন্তু একটি ছেলে বারবার মোবাইল যোগে জানায় মেয়েটি তাদের বাড়ি আছে৷ আশ্চর্যজনক বিষয় হলো একটি নাবালিকা প্রায় একদিন যাবত নিখোঁজ৷ কিন্তু পুলিশের ভূমিকা ছিল খুব গাফিলতি পূর্ণ৷
কেননা পুলিশ মেয়েটিকে খুঁজে বেরকরার উদ্যোগতো দুরে থাক৷ তারা পরিবারের অভিযোগটি পর্যন্ত গ্রহন করেন নি৷দুপুরের পর বিকেল তারপর সন্ধ্যা ঘনিয়ে রাত হলেও নাবালিকার কোন সন্ধান না পেয়ে তার পরিবার আবারো বৃহস্পতিবার রাত আটটা নাগাদ ধর্মনগর থানায় যোগাযোগ করেও ব্যর্থ হন৷ পরবর্তীতে নাবালিকার পরিবার বাধ্য হয়ে রাত প্রায় ১০৩০মিনিট নাগাদ রাজ্য মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন বর্ণালী গোস্বামীর দ্বারস্থ হন৷ ঘটনা বিস্তারিত জানান৷ বর্ণালী গোস্বামী রাতেই বেড়িয়ে পড়েন নিখোঁজ মেয়েটিকে খুঁজে বের করতে৷তিনি প্রথমেই এলাকার কিছু লোকদের সাহায্য নিয়ে ধর্মনগর কলেজ রোড এলাকায় যে বাড়িতে মেয়েটি ভাড়া থাকতো সে বাড়িতে যান৷ কথা বলেন সে বাড়িতে ভাড়া থাকা নিখোঁজ মেয়েটির এক সহপাঠীর সাথে৷ দির্ঘ্য সময় তার সাথে কথা বলার পর বেশ কিছু তথ্য বেড়িয়ে আসে৷ তা থেকে সন্দেহ করা হচ্ছে মেয়েটি হয়তো অপহরণের শিকার হয়েছে৷ সংগ্রহিত তথ্য সহ রাত প্রায় ২ টায় মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন ধর্মনগর মহিলা থানায় ছুটেযান৷ সেখানে গিয়েও অবাক করার মত আরেক দৃশ্য৷
মহিলা থানার কর্তব্যরত ডিউটি অফিসার৷ ডিউটি ছেড়ে লাপাতা৷ রাত দুটায় মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সনকে মহিলা থানায় দেখে হতচকিত হয়ে ঘভির নিদ্রাথেকে উঠেন দুই মহিলা কনস্টেবল৷তারপর শুরু হয় তড়িঘড়ি৷ছুটে আসেন ডিউটি ইনচার্জ ও ওসি স্বর্ণা দেববর্মা৷ওসির সাথে নাবালিকার পরিবারের লোকজন সহ কথা বলেন মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন৷সংগ্রহিত তথ্য গুলো তুলে দেওয়া হয় মহিলা পুলিশের হাতে৷নাবালিকা উদ্ধারের বিষয়ে প্রায় দেড় থেকে দু ঘন্টা পুলিশের সাথে আলোচনা করেন বর্ণালী গোস্বামী৷ পরবর্তীতে ভোর চারটা নাগাদ বর্ণালী গোস্বামী মহিলা থানাথেকে বেরিয়ে এই নাবালিকা উদ্ধারে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে ক্ষোব ব্যাক্ত করেন৷ তিনি জানান পুলিশ যদি আরো দ্রুত গতিতে কাজ করতো তবে হয়তো এত সময়ে মেয়েটিকে খুঁজে বের করা যেতো৷ তবে গোটা ঘটনা দেখে সকলেই পুলিশের ভূমিকায় নিন্দা প্রকাশ করেছে৷

