ফের ব্রাউন সুগার ও গাঁজা উদ্ধার, ধৃত ৫

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ২ মে৷৷ নেশায় ছেয়ে গেছে গোটা ত্রিপুরা৷ পৃথক স্থানে পুলিশ ও বিএসএফ-এর অভিযানে ব্রাউন সুগার ও গাঁজা উদ্ধার হয়েছে৷ পুলিশ ৫ জনকে আটকও করেছে৷

অমরপুর এসডিপিও উত্তম বনিক জানিয়েছেন, গোপন সূত্রের খবরের ভিত্তিতে করবুক মহকুমার যতনবাড়ীর গর্জনটিলা এলাকায় হারাধন দাসের বাড়ি থেকে ব্রাউন সুগার সহ ৫ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ৷ নতুনবাজার থানার ওসি বাপি দেববর্মার নেতৃত্বে পুলিশ হারাধন দাসের ছেলে টুটন দাসকে ব্রাউন সুগার সহ আটক করেছে৷ সাথে একটি লেপটপ, ২টি মোবাইল, ১৫ বোতল বিলেতি মদ উদ্ধার করেছে পুলিশ৷ এসডিপিও বলেন, বাড়িতে একটি গাড়ি ছিল৷ পুলিশ টিআর০৩জে০৭১৬ নম্বরের গাড়িটিও বাজেয়াপ্ত করেছে৷ তিনি আরও জানান, মোট ৯ গ্রাম ৮২ ইক্ষনিট ব্রাউন সুগার উদ্ধার হয়েছে৷ যার বাজার মূল্য আনুমানিক ৭৬ হাজার ৯৪০ টাকা হবে৷ এদিকে, পুলিশ বাড়ির পাশে জঙ্গলে তল্লাশি চালিয়ে গাঁজা ও সিরিঞ্জ উদ্ধার করেছে৷ এসডিপিও উত্তম বনিকের কথায়, টুটন দাস সহ ধৃত বাকি তিনজনকে আগামীকাল উদয়পুর স্পেশাল কোর্টে তোলা হবে৷

এদিকে, কলসীমুড়া ও খান সীমান্তে বিএসএফ প্রচুর গাঁজা উদ্ধার করেছে৷ বিএসএফ ত্রিপুরা ফ্রন্টিয়ারের আধিকারীক সঞ্জিব কুমার জানিয়েছেন, কলমছড়া থানাধীন কলসীমুড়া সীমান্তে বিএসএফ জওয়ানরা ৬টি প্লাস্টিকের ব্যাগে ৬৮ কেজি গাঁজা উদ্ধার করেছে৷ ওই গাঁজা বাংলাদেশে পাচারের উদ্দেশ্যে নিয়ে যাচ্ছিল পাচারকারীরা৷ বিএসএফ জওয়ানদের দেখে তারা গাঁজা ফেলে পালিয়ে গেছে৷

অন্যদিকে, একই থানাধীন খান সীমান্তে বিএসএফ ৯ কেজি গাঁজা উদ্ধার করেছে৷ সীমান্ত দিয়ে পাচারের সময় পাচারকারীরা বিএসএফ-কে লক্ষ্য করে আক্রমণ চালিয়েছিল৷ কিন্তু, নন-ল্যাথেল বন্দুক দিয়ে বিএসএফ পাচারকারীদের মোকাবিলা করেছে৷ সঞ্জিব কুমার জানান, মোকাবেলা করতে ব্যর্থ হয়ে অবস্থা বেগতিক বুঝে পাচারকারীরা গাঁজা ফেলে পালিয়ে যায়৷ উভয় স্থানে উদ্ধার গাঁজা কলমছড়া থানার পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছে বিএসএফ৷

এদিকে, আন্তর্জাতিক সীমান্ত দিয়ে পাচার বন্ধ করতে পারছে না বিএসএফ৷ তবে, দফাওয়ারী অভিযানে পাচার সামগ্রী উদ্ধার জারি রেখেছে সীমান্ত রক্ষী বাহিনী৷ ত্রিপুরায় পি আর বাড়ি থানাধীন রাধানগর বিওপি’র জওয়ানরা ইয়াবা টেবল্যাট, গাজা উদ্ধার করেছে৷ এছাড়া, পানীসাগর ও উদয়পুরে চারটি স্থানে পাচারের সময় গবাদী পশু উদ্ধার করেছে বিএসএফ৷

রাজ্যের তিন দিক থেকে বাংলাদেশ সীমান্তে ঘেরা৷ সীমান্তে কাঁটা তারের বেড়া নির্মাণ করা হলেও এখনো কিছু অংশ উন্মুক্ত রয়েছে৷ তাছাড়া, অনেক ক্ষেত্রে সীমান্তে টহলদারীতে গাফিলতির কারণে কাঁটা তারের বেড়া কেঁটে পাচার বাণিজ্য চালাচ্ছে পাচারকারীরা৷ অবশ্য বিভিন্ন সময়ে বিএসএফের অভিযানে পাচার সামগ্রী উদ্ধার হচ্ছে৷ তবে, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই পাচারকারীরা পালিয়ে যেতে সক্ষম হচ্ছে৷

পিআর বাড়ি থানাধীন রাধানগর বিওপি’র জওয়ানরা মঙ্গলবার রাতে ৩৮০টি ইয়াবা টেবল্যাট এবং ২২ কেজি গাঁজা উদ্ধার করেছে৷ বিএসএফ ত্রিপুরা ফ্রন্টিয়ারের আধিকারীক সঞ্জিব কুমার জানিয়েছেন, গোপন সূত্রে খবর আসে সীমান্ত দিয়ে পাচার বাণিজ্য হচ্ছে৷ এমনিতেই জওয়ানরা সীমান্ত এলাকায় টহল দিচ্ছিলেন৷ খবর পেয়ে সতর্ক হয়ে যান৷ রাধানগর বিওপি’র জওয়ানরা সীমান্ত এলাকায় তল্লাশী শুরু করলে বিএসএফ জওয়ানদের দেখে পাচারকারী রাতের অন্ধকারের সুযোগ নিয়ে পাচার সামগ্রী ফেলে পালিয়ে যায়৷ সঞ্জিব কুমার জানিয়েছেন, উদ্ধার পাচার সামগ্রীর আনুমানিক মূল্য প্রায় ৩ লক্ষ টাকা৷ তিনি আরও জানান, সমস্ত পাচার সামগ্রী পি আর বাড়ি থানার হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে৷

এদিকে, বাংলাদেশে পাচারের সময় পানিসাগর এবং উদয়পুরে চারটি স্থানে ২৪টি গবাদি পশু উদ্ধার হয়েছে৷ বিএসএফ আধিকারীক জানিয়েছেন, রাজ্যের বিভিন্ন স্থান থেকে গবাদি পশু সংগ্রহ করে বাংলাদেশে পাচারের জন্য নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল৷ পানিসাগর এবং উদয়পুরে বিএসএফ-র নজরে আসে বিষয়টি৷ মোট চারটি স্থানে ২৪টি গবাদি পশু উদ্ধার করা হয়েছে৷ তিনি জানান, ২৪টি গবাদি পশুর আনুমানিক মূল্য ১ লক্ষ ৬৫ হাজার টাকা হবে৷ তিনি আরও জানান, গবাদি পশু উদ্ধার সম্ভব হলেও পাচারকারীদের আটক করা সক্ষম হয়নি বিএসএফ৷

তাঁর কথায়, পাচার বাণিজ্য বন্ধে বিএসএফ সর্বদাই সজাগ৷ তবুও, পাচার বাণিজ্য বন্ধ করা সম্ভব হচ্ছে না৷ তবে, নজরদারী জারী রাখার পাশাপাশি সীমান্ত সুরক্ষিত করার ক্ষেত্রেই বিশেষ পদক্ষেপ নিয়েছে বিএসএফ, জানান তিনি৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *