নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ২২ এপ্রিল৷৷ ত্রিপুরা পূর্ব আসনে লোকসভা নির্বাচনে ১,৪২৪টি বুথে কেন্দ্রীয় আধা সামরিক বাহিনী ও বিভিন্ন রাজ্যের সশস্ত্র বাহিনী নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকছে৷ ভোটে মোট ১০৬ কোম্পানি কেন্দ্রীয় আধা সামরিক বাহিনী এবং বিভিন্ন রাজ্যের সশস্ত্র পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে৷ তাছাড়া, চার হাজারের অধিক টিএসআর জওয়ান নিরাপত্তায় নিয়োজিত থাকবেন৷ তাই, নির্ভয়ে ভোটাধিকার প্রয়োগ করার জন্য ত্রিপুরা পুলিশের মহানির্দেশক একে শুক্লা ভোটারদের অভয় দিয়েছেন৷
ডিজিপির কথায়, ১,৬৪৫টি বুথের মধ্যে ১,৪২৪টি বুথেই নিয়োগ করা হয়েছে কেন্দ্রীয় বাহিনী৷ টিএসআর এবং পুলিশ কর্মীদেরও পর্যাপ্ত হারে ভোটের নিরাপত্তার দায়িত্বে রাখা হয়েছে৷ ফলে, ভোট প্রক্রিয়া শান্তিপূর্ণভাবেই সম্পন্ন হবে, আশা প্রকাশ করেন তিনি৷ প্রসঙ্গত, গতকাল ত্রিপুরার মুখ্য নির্বাচন আধিকারিকও ভোটারদের নির্ভয়ে ভোটাধিকার প্রয়োগ করার জন্য অভয় দিয়েছিলেন৷

মঙ্গলবার ত্রিপুরা পূর্ব আসনে লোকসভা ভোট অনুষ্ঠিত হবে৷ সে মোতাবেক নিরাপত্তা ব্যবস্থায় কোনও ত্রুটি নেই বলে দাবি করেছে রাজ্য পুলিশ৷ সোমবার সাংবাদিক সম্মেলনে রাজ্য পুলিশের মহানির্দেশক একে শুক্লা আশ্বাস দেন, ত্রিপুরা পূর্ব আসনে সুষ্ঠু, অবাধ এবং শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন হবে৷ তার জন্য পুরো ব্যবস্থা করা হয়েছে৷ ডিজিপি-র কথায়, রাজ্যে আগেই ৬৪ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী এসেছে৷ পূর্ব ত্রিপুরা আসনে ভোটের জন্য আরও ৪২ কোম্পানি কেন্দ্রীয় আধা সামরিক ও বিভিন্ন রাজ্যের সশস্ত্র পুলিশ এসে পৌঁছেছে৷ সাথে তিনি যোগ করেন, চার হাজারের অধিক টিএসআর এবং ২০০ পুলিশ অফিসার নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকবেন৷ তিনি আরও জানান, ২,৬০০-এর অধিক সিভিল পুলিশও ভোটে নিরাপত্তার জন্য মোতায়েন করা হবে৷
ডিজিপি বলেন, ত্রিপুরা পূর্ব আসনে ১,৬৪৫টি বুথ রয়েছে৷ তার মধ্যে ৩১টি বুথ সম্পূর্ণ মহিলা দ্বারা পরিচালিত হবে৷ তাছাড়া, ১৯০টি বুথে শুধু টিএসআর জওয়ানরা নিরাপত্তা সামলাবেন৷ বাকি ১,৪২৪টি বুথে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকবে কেন্দ্রীয় আধা সামরিক বাহিনী ও বিভিন্ন রাজ্যের সশস্ত্র পুলিশ বাহিনী৷ তিনি বলেন, কেন্দ্রীয় বাহিনীর পাশাপাশি চার হাজারের অধিক টিএসআর জওয়ান এবং ২,৬০০-এর অধিক সিভিল পুলিশও ভোটে নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করবেন৷ তাঁদেরকে সাহায্য করার জন্য থাকবেন ২০০ জন পদস্থ পুলিশ আধিকারিক৷ ডিজিপি বলেন, ১০৬ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনীর সাথে একজন করে বাহিনী কমান্ডেন্ট রয়েছেন৷ ত্রিপুরা পুলিশের পক্ষ থেকে তাঁদের পেট্রোলিংয়ে থাকার জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে৷
এদিন ডিজিপি আরও জানান, ত্রিপুরা পূর্ব সংসদীয় ক্ষেত্রে ১৯৭ থানা এলাকায় সংশ্লিষ্ট থানার পুলিশ মোবাইল ভ্যান নিয়ে ইতিমধ্যেই নজরদারি জারি রেখেছে৷ তাছাড়া ১১৩টি নাকা গড়ে তোলা হয়েছে৷ সেখানে বিভিন্ন যানবাহনের গতিবিধির ওপর পুরো নজর রাখা হচ্ছে৷ শুধু তা-ই নয়, ৯০টি স্ট্যাটিক সারভেইল্যান্স টিম এবং ৯০টি ফ্লাইং স্কোয়াড প্রতিয়িনত নজরদারি জারি রেখেছে৷ তাঁর কথায়, ১৫৪টি অতি স্পর্শকাতর এলাকায় কেন্দ্রীয় আধা সামরিক বাহিনী এবং টিএসআর যৌথ নজরদারি রেখেছে৷ তিনি বলেন, নিরাপত্তা ব্যবস্থায় সমস্ত দিক পর্যবেক্ষণের জন্য ১৯৬ জন সিভিল সেক্টর অফিসার এবং ১৯৬ জন পুলিশ সেক্টর অফিসার রয়েছেন৷ তাছাড়াও, প্রত্যেকটি থানা এবং জেলা সদরে পর্যান্ত পুলিশ রিজার্ভে রাখা হয়েছে৷ ফলে, ভোট প্রক্রিয়ায় আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে চিন্তার কোনও কারণ নেই, অভয় দিয়ে বলেন ত্রিপুরার ডিজিপি৷
তিনি ভোটারদের উদ্দেশ্যে বলেন, নির্ভয়ে ভোট দিতে যান৷ সাথে সতর্ক করে দেন, কেউ আইন হাতে তুলে নেবেন না৷ কাউকে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতেও বাধা দেবেন না৷ এমন কোনও অপরাধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে৷ তাঁর সাফ কথা, ত্রিপুরা পূর্ব আসনে কঠোর নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে৷ কোনও গণ্ডগোল হলে তা শক্ত হাতে দমন করা হবে৷ পাশাপাশি তিনি ভোটারদের উদ্দেশ্যে আরও বলেন, গুজবে কেউ কান দেবেন না ৷ অস্বাভাবিক কোনও ঘটনা নজরে আসলে তা পুলিশকে জানাবেন ৷ এদিন প্রত্যয়ের সাথে তিনি বলেন, নির্বিঘ্নে ভোট প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে ত্রিপুরা পুলিশ ও নির্বাচন কমিশন দৃঢ় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ৷