কলকাতা, ৭ এপ্রিল (হি.স):মঞ্চে বসে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী । তাঁর সামনেই কোচবিহারের পুলিশ সুপারকে ‘হুমকি’ দিলেন বিজেপি নেতা মুকুল রায় । রবিবার কোচবিহারের রাসমেলা ময়দানে সভা করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী । সোমবার ওই একই ময়দানে সভা করার কথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের । পাশাপাশি মঞ্চ বাঁধা থেকে শুরু করে সভামঞ্চে পতাকা লাগানো, সব নিয়েই প্রশাসনের সঙ্গে সংঘাত হয়েছে রাজ্য বিজেপির । আর এই বিষয় নিয়ে এদিনের সভা থেকে সরাসরি কোচবিহার জেলার পুলিশ সুপারকে কার্যত হুঁশিয়ারি দেন বিজেপি নেতা মুকুল রায় । সেইসঙ্গে এই ঘটনার জন্য তোপ দাগেন জেলার রিটার্নিং অফিসারের উদ্দেশেও । প্রধানমন্ত্রীর সামনেই মুকুল রায়ের ‘দেখে নেওয়ার’ হুমকি ঘিরে ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গেছে বিতর্ক ।

এর আগেও বারবার বিজেপির সভার অনুমতি নিয়ে রাজ্যের প্রশাসনের সঙ্গে বিরোধ হয়েছে রাজ্য বিজেপির । কখনও মালদায় অমিত শাহের সভার জন্য মাঠ না পাওয়া নিয়ে, তো কখনও কাঁথিতে সভার অনুমতি না দেওয়া নিয়ে । বারবার যুদ্ধকালীন তৎপরতায় সব সমস্যার সমাধান করেছেন মুকুল রায় । এ ব্যাপারে তাঁর উপরেই ভরসা রেখেছে বিজেপি শীর্ষনেতৃত্বও । নিজের সাংগঠনিক ক্ষমতার পরিচয়ও দিয়েছেন মুকুল রায় ।
১১ এপ্রিল প্রথম দফার ভোটের আগে নির্বাচনী প্রচারে এদিন দ্বিতীয়বারের জন্য রাজ্যে আসেন প্রধানমন্ত্রী । এদিকে আজকের প্রধানমন্ত্রীর সভার আগে সভাস্থল ঘিরে মাথাচাড়া দেয় বিতর্ক । মঞ্চ বেঁধে মাঠ দখলের অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধে । এরপরই নির্বাচনের কমিশনের দ্বারস্থ হয় বিজেপি । তারপরই তৃণমূলের বাঁধা মাচার একাংশ খুলে ফেলে প্রধানমন্ত্রীর সভার জন্য মঞ্চ প্রস্তুত করে বিজেপি ।
এদিন সেই প্রসঙ্গেই কোচবিহারের পুলিশ সুপার অভিষেক গুপ্তার বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন মুকুল রায় । প্রধানমন্ত্রী যখন মঞ্চে উঠছেন, তখন বক্তব্য রাখছিলেন একদা তৃণমূলের সেকেন্ড ইন কম্যান্ড মুকুল রায় । প্রধানমন্ত্রীর সামনে বেশি কিছু বলার ধৃষ্টতা তাঁর নেই, এ কথা বলার পরেই এই প্রসঙ্গ তুলে আনেন তিনি । বলেন, ‘এই সভার অনুমতি দেওয়াকে কেন্দ্র করে কোচবিহার জেলার রিটার্নিং অফিসার কৌশিক সাহা ও পুলিশসুপার অভিষেক গুপ্ত যে নোংরামি করলেন তা মনে রাখুন’।
নরেন্দ্র মোদীর সামনেই মুকুল রায়কে বলতে শোনা যায়, ‘প্রধানমন্ত্রীকে সামনে রেখে বলতে চাই, এই জেলার রিটার্নিং অফিসার কৌশিক বাবু এবং এই জেলার পুলিশ সুপার অভিষেক গুপ্তা । আপনারা পারলে আপনাদের গায়ের উর্দিটাকে খুলে ফেলে দিন । এই সভা করার জন্য যে নোংরামি করলেন, সেই নোংরামি কিন্তু মনে রাখব’। এরপরই একেবারে ‘হুমকি’র সুরে মুকুল রায় বলেন, ‘অভিষেক গুপ্তা, আমিও ১০ বছর রাজনীতিতে থাকব । তুমি কত বড় এসপি আমরা দেখব’ । মুকুল রায়ের এই মন্তব্য ঘিরে ইতিমধ্যেই বিতর্ক দানা বেঁধেছে ।
এর পাশাপাশি এদিন ফের মুকুল রায় অভিযোগ করেন, ‘পঞ্চায়েত ভোটে ৭০ হাজার মানুষ ভোট দিতে পারেনি’। আবারও সব বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনীর দাবিতে সরব হন তিনি।