নয়াদিল্লি, ২৬ ফেব্রুয়ারী৷৷ একলা চলো নীতি অবলম্বন করতে চাইছিল বামেরা৷ কিন্তু, লোকসভা নির্বাচনে কংগ্রেসেররই হাত ধরতে চলেছেন তাঁরা৷ মঙ্গলবার কলকাতায় সৌমেন মিত্র-সূর্যকান্ত মিশ্ররা একপ্রস্থ বৈঠকে জোট নিয়ে সবিস্তারে আলোচনা হয়েছে৷ জোট বেঁধেই করবে লড়াই, তা প্রায় চূড়ান্ত হয়ে গেছে৷ তবে, শর্ত রেখেই উভয় জোটের দিকে এগিয়ে চলেছে৷ এদিনের বৈঠকে নির্যাস কংগ্রেসের কার্যকরী কমিটির কাছে রাখবেন পশ্চিমবঙ্গের দলের সভাপতি৷ তাছাড়া, সিপিএম সাধারণ সম্পাদক ইয়েচুরির সাথেও কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধি এবিষয়ে শীঘ্রই চূড়ান্ত কথা বলবেন৷ সূত্রের দাবি, সারা দেশেই কংগ্রেসের জোট বেঁধেই বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নামবে বামেরা৷ স্বাভাবিকভাবেই ত্রিপুরাতেও একই পথে হাটবেন দুই দল, এমনটাই মনে করছে রাজনৈতিক মহল৷

অবশ্য, দূরত্ব বজায় রাখার কৌশল ছাড়েনি সিপিএম৷ তলে তলে কংগ্রেসের সাথে জোটের জন্য ছটপট করলেও, পশ্চিমবঙ্গে সিপিএমের প্রাক্তন রাজ্য সম্পাদক বিমান বসুর দাবি, আসন সমঝোতা আর জোট এক নয়৷ ফলে, কংগ্রেসের সাথে জোট হওয়ার কোন সম্ভাবনা নেই৷ বিমানবাবু দুই নৌকায় পা দিয়ে চলতে চাইছেন তা তাঁর কথায় স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে৷ মঙ্গলবার পশ্চিমবঙ্গের ঝাড়গ্রামের জেলা কমিটির মিটিংয়ে যোগ দিতে গিয়ে বিমান বসু সাফ জানিয়ে দিলেন, আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের সঙ্গে জোট হওয়ার, আগেও কোনো সম্ভাবনা ছিল না এখনও নয়৷ এদিন তিনি বলেন, কংগ্রেসের সাথে জোট হওয়ার আগেও কোনও সম্ভাবনা ছিল না এখনও নয়৷ আসন সমঝোতা আর জোট এক কথা নয়৷ তাঁর বক্তব্য, আসন সমঝোতা তাদের উপর নির্ভর করে আমাদের উপর নির্ভর করে না৷ রাজ্যে ৩৪ টা আসনে প্রার্থী দেব আমরা৷ যে সমস্ত আসনগুলোতে আমাদের শক্তি বেশি সেখানে আমরা প্রার্থী দেব৷ বাকি ওরা ঠিক করবে৷’
সূত্রের দাবি, পশ্চিমবঙ্গে কংগ্রেস-সিপিএম জোট বেঁধে লড়াইয়ে ঐক্যমত্যে পৌঁছেছে৷ এদিন, সৌমেন মিত্র এবং সূর্য্যকান্ত মিশ্ররা এবিষয়ে দীর্ঘ আলোচনা করেছেন৷ সূত্রের বক্তব্য, রায়গঞ্জ আসনটি কংগ্রেস চেয়েছে৷ ওই আসনে মহম্মদ সেলিম সাংসদ হয়েছে৷ মূলত, ওই আসনটি বরাবরই কংগ্রেসের ঘাঁটি ছিল৷ দীর্ঘ সময় প্রিয়রঞ্জন দাসমুন্সি ওই আসন থেকে কংগ্রেসের টিকিটে প্রার্থী হয়ে জিতেছেন৷ তিনি অসুস্থতার কারণে রাজনীতি থেকে সরে যাওয়ার পর সিপিএম ওই আসনটি দখল করতে সক্ষম হয়৷ প্রদেশ কংগ্রেসের দাবি, ওই আসনটি এখন কংগ্রেসকে ছাড়তে হবে৷
এদিকে, পশ্চিমবঙ্গে যা ঘটে তার প্রভাব ত্রিপুরাতেও দেখা যায়৷ স্বাভাবিকভাবে, কংগ্রেস-সিপিএমের এই জোট ত্রিপুরাতেও হওয়ার যথেষ্ট সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে৷ কারণ, ইতিমধ্যে সিদ্ধান্ত হয়েছে ওড়িশা, ঝারখন্ড, বিহার, তামিলনাড়ু এবং তেলেঙ্গানাতেও কংগ্রেস-সিপিএম জোট বেঁধে নির্বাচনে লড়াই করবে৷ ফলে, ত্রিপুরাতে জোট না হওয়ার কোন কারণ খঁুজে পাচ্ছে না রাজনৈতিক মহল৷
সূত্রের খবর, পূর্ব ত্রিপুরা আসনটি কংগ্রেসের জন্য ছেড়ে দেবে সিপিএম৷ তেমনি পশ্চিম আসনে কংগ্রেস কোন প্রার্থী দেবে৷ সেখানে সিপিএম প্রার্থী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন৷ সূত্রের আরো দাবি, নির্বাচনের প্রাক্ মুহুর্তে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অনেকটাই সেই উদ্দেশ্যে হয়েছে৷