নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ২৪ জানুয়ারি ৷৷ আজ শিক্ষা দপ্তরের উদ্যোগে পশ্চিম ত্রিপুরা জেলার মোহনপুর মহকুমার আন্তর্গত ৪টি ব্লকের ৭০ টি সরকারি বিদ্যালয়ে আকস্মিক পরিদর্শন করা হয়৷ বিদ্যালয় শিক্ষা দপ্তরের সচিব সৌম্যা গুপ্তা এই পরিদর্শনে নেতৃত্ব দেন৷ পরিদর্শনকালে বিভিন্ন বিদ্যালয়ে বিনা অনুমতিতে অনুপস্থিতির কারণে ২৯ জন শিক্ষক শিক্ষিকা, মধ্যাহ্ণ আহার প্রকল্পে গরমিলের দায়ে ৬ জন, টিচার ডায়েরী ব্যবহার এবং লেসন তৈরি না করার জন্য ৮ জন, অন্যান্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে অনিয়ম এবং ত্রুটি ধরা পড়ার কারণে ৯ জন সহ মোট ৫২ জন শিক্ষক শিক্ষিকাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়৷

পরিদর্শনকালে বুনিয়াদী ও মধ্য শিক্ষা অধিকর্তা উত্তর কুমার চাকমা, এস সি ই আর টির অধিকর্তা বিশ্বজিৎ গুপ্ত, পশ্চিম ত্রিপুরা জেলার শিক্ষা আধিকারিক কুহেলী দেববর্মা, দপ্তরের অন্যান্য শিক্ষা আধিকারিকরগণ এবং সমগ্র শিক্ষা প্রকল্পের রাজ্যস্তরের কো অর্ডিনেটরগণ সহ মোট ৩২ জন পরিদর্শনকারী এতে অংশগ্রহণ করেন৷ এই ধরনের আকস্মিক পরিদর্শন ভবিষ্যতেও জারী থাকবে বলে শিক্ষা দপ্তরের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে৷ বিদ্যালয় শিক্ষা দপ্তরের পক্ষ থেকে এক বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে৷
এদিকে, আজ প্রাথমিক শিক্ষা দপ্তরের উদ্যোগে এন সি ই আর টি পাঠ্যক্রম চালু করার উপর দ্বিতীয় পর্যায়ে এক দিনের কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়৷ রবীন্দ্র শতবার্ষিকী ভবনের ১নং হলে আয়োজিত এই কর্মশালায় ঊনকোটি, সিপাহীজলা ও দক্ষিণ ত্রিপুরা জেলার ১৫০২টি বিভিন্ন স্তরের বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শিক্ষিকা, ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক শিক্ষিকা সহ বিদ্যালয় পরিদর্শকগণ অংশগ্রহণ করেন৷ কর্মশালায় প্রধান অতিথির ভাষণে শিক্ষামন্ত্রী রতনলাল নাথ বলেন, বর্তমানে সর্বভারতীয়স্তরে রাজ্যের শিক্ষার মান অনেকটা পিছিয়ে রয়েছে৷ এর থেকে উত্তরণের জন্যই চলতিবছর থেকে এনসিআরটি পাঠ্যক্রম চালু করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে৷ এক্ষেত্রে এই দপ্তরের সাথে যুক্ত প্রত্যেক ব্যক্তিকে নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করতে হবে৷ ছাত্র ছাত্রীদের প্রকৃত শিক্ষায় শিক্ষিত করতে হবে৷ তিনি আরও বলেন, প্রতি দু বছর পর পর ন্যাশনাল অ্যাচিভমেন্ট সার্ভের মাধ্যমে দেশের শিক্ষার অগ্রগতি সম্পর্কিত সাম্যক ধারনা নেওয়া হয়৷ সূচী অনুসারে ২০১৯ সালে পুনরায় এই সার্ভে করা হবে৷ এই সমীক্ষায় শিক্ষাক্ষেত্রে রাজ্যের অগ্রগতির চিত্র যাতে উঠে আসে তার জন্য সর্বাত্মক উদ্যোগ নিতে তিনি শিক্ষক শিক্ষিকাদের প্রতি আহ্বান জানান৷ ভারতরত্ন ড এ পি জে আব্দুল কালামের উক্তিকে উদ্ধৃত করে তিনি বলেন, প্রাচুর্যে শিক্ষা হয় না, প্রয়োজন আন্তরিকতার৷ তিনি উপস্থিত শিক্ষকদের উদ্দেশ্যে বলেন, পরিকাঠামোগত সমস্যা যতই থাকুক না কেন রাজ্যের শিক্ষার মানোন্নয়নে কাজ করে যেতে হবে৷
কর্মশালায় স্বাগত ভাষণে বিদ্যালয় শিক্ষা দপ্তরের অধিকর্তা ইউ কে চামকা বলেন, এনসিইআরটি পাঠ্যক্রমের জন্য প্রয়োজনীয় বইয়ের ৪০ শতাংশ বই ইতিমধ্যেই বিভিন্ন বিদ্যালয়ে বিতরণ করা হয়ে গেছে৷ এনসিআরটি পাঠ্যক্রমে ছাত্র ছাত্রীদের কিভাবে শিক্ষাদান করতে হবে তারজন্য বিভিন্ন স্থানে ৫ দিনের কর্মশালা শুরু হয়েছে৷ ৫টি পর্যায়ে এই কর্মশালা করানো হবে৷ প্রথম পর্যায়ের সাত হাজারের বেশী শিক্ষককে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে৷ তিনি আরও বলেন, এনসিইআরটি থেকেই রাজ্যের ২৮৪ জন শিক্ষক শিক্ষিকাকে কি রিসোর্স পার্সন হিসাবে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে৷ তারাই ব্লকস্তরে গিয়ে অন্যান্যদের প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন৷ এছাড়াও এই কর্মশালায় বক্তব্য রাখেন ত্রিপুরা মধ্যশিক্ষা পর্ষদের ডেপুটি সি ি ও মোসলেমুদ্দিন আহমেদ, এস সি ই আর টি অধিকর্তা বিশ্বজিৎ গুপ্ত৷

