কলকাতা, ২৪ নভেম্বর (হি. স.) : কাশ্মীরিরা কখনও পাকিস্তানে যাবে না। কারণ, পাকিস্থানীরা যে মুসিলম ভাবধারায় বিশ্বাসী, কাশ্মীরিরা তা বিশ্বাস
করেন না। শনিবার কলকাতায় এক আলোচনাসভায় এই মন্তব্য করেন সাহিত্যিক আবুল বাশার। এতে ভারতবর্ষের সাম্প্রতিক সম্প্রীতি ও ঐক্যের ওপর জোর দিতে আবেদন করেন ডঃ আলমগীর সর্দার, শেখ জিন্নার আলি, রেভারেন্ড শ্রীকান্ত দাস ও সুকুমার রেজ।
![](https://jagarantripura.com/wp-content/uploads/2013/09/Govt-of-India-300x225.jpg)
মাসিক পত্রিকা ’শুভাবরী’ আয়োজিত এই আলোচনায় বাশার বলেন, কাশ্মীরিরা আসলে শৈব। যদিও ভাবধারায় ইরানি। মুসলিমদের মধ্যে নানা রকম ভাগ রয়েছে। বাংলার মুসলিমদের মধ্যে রয়েছে কৃষ্ণের ভাবধারা। তাই কাশ্মীরিরা কিছুতেই ভারত ছেড়ে পাকিস্তানে যাবে না।
বাশার বলেন, আমার সাহিত্যে যদি কোনও জোর থেকে থাকে, তা হল মানুষ। এখন ৭০ বছর বয়স। ১৪ বছর থেকে লিখি। নানা জায়গায় বিভিন্ন ধরণের জনগোষ্ঠীর সঙ্গে মিশেছি। একটাই কথা বলতে পারি— সবার ওপরে মানুষ সত্য, তাহার ওপরে নাই। প্রচীন বাংলায় জাতিভাগ ছিল না। আরণ্যক উপনিষদে আছে, ভারতের পূর্বাঞ্চলে জলাভূমিতে যেখানে কৃষ্ণ হরিণ ঘুরে বেড়ায়, পাখির মত কিচিরমিচির করে কথা বলে নানুষ। তারাই আমাদের পূর্বপুরুষ। নমশূদ্রের সঙ্গে তখন ব্রাহ্মণের পার্থক্য ছিল না। হিন্দু-মুসলিম বিভেদ আসার আগে আমরা ছিলাম ডোম-কিরাত গোষ্ঠীর। বর্ণবৈষম্যের জন্ম সেনযুগে এসে। নীহাররঞ্জন রায়ও লিখেছেন, এই বিভাজন হয়েছে বল্লাল সেনের যুগে।
মুসলিমদের বিভিন্ন ধারা ও সুফিবাদ নিয়ে বিশদ আলোচনা করে বাশার বলেন, শ্রীচৈতন্যকে প্রভাবিত করেছিল এই সুফিবাদ। মুসলিমরা তরবারি দিয়ে যদি সত্যি জিততে চাইত, তা হলে প্রায় ৬৫০ বছর ইসলামী প্রভাবের সময় ইরান হয়ে যেতে পারত ভারত। ১৯৪৭ সালে দেশ ভাগের সময় অবিভক্ত ভারতের মানুষের ৩২ শতাংশ মুসলিম ছিলেন।
বক্তারা এদিন বলেন, মিলন আর বিচ্ছেদ— এই দুই ধারার মধ্যে বার বার সংঘাত হয়েছে। জিতেছে মিলন বা সম্প্রীতি। এই মিলনের প্রবণতা কেউ ঠেকিয়ে রাখতে পারবে না। ভারতের অখন্ডতার স্বার্থে হিন্দু—মুস্লিম সংহতির ওপর গুরুত্বের আর্জি জানান তাঁরা। সুকুমার রেজ বলেন, কাশ্মীরে যে সমস্যা তা রাষ্ট্রনৈতিক। ধর্মের সঙ্গে বিভেদ তৈরির চেষ্টা হচ্ছে। জাতীয়তাবাদের নামে হিন্দু-মুসলিম বিভাজনের চেষ্টা হচ্ছে।