নিজস্ব প্রতিনিধি, সোনামুড়া, ১৬ নভেম্বর৷৷ আমাদের নিজ নিজ পরিবার হচ্ছে সবচাইতে বড় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান৷ আর প্রতিটি পরিবারে মা হচ্ছেন প্রকৃত শিক্ষক৷ সোনামুড়া টাউন হলে আয়োজিত শিক্ষায় মুসলিম মহিলাদের অংশগ্রহণ বিষয়ক সচেতনতামূলক আলোচনাচক্রের উদ্বোধন করে শিক্ষা, আইন ও সংখ্যালঘু কল্যাণ দপ্তরের মন্ত্রী রতনলাল নাথ একথা বলেন৷ এসপিকিউইএম প্রকল্পের অধীনে শিক্ষা দপ্তর ও ত্রিপুরা মধ্যশিক্ষা পর্ষদের উদ্যোগে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়৷ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বিধায়ক সুভাষ চন্দ্র দাস৷ সভাপতিত্ব করেন রাজ্য ওয়াকফ বোর্ডের চেয়ারম্যান বাহারুল ইসলাম মজুমদার৷ বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ত্রিপুরা মধ্যশিক্ষা পর্ষদের সভাপতি ভবতোষ সাহা৷ অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সোনামুড়া মহকুমা ম্যাজিস্ট্রেট সাজু ওয়াহিদ আহমেদ, বিশিষ্ট সমাজসেবী রতন দাস, সমাজসেবী বিশ্বজিৎ দাস প্রমুখ৷
আলোচনাচক্রের উদ্বোধন করে সংখ্যালঘু কল্যাণমন্ত্রী রতনলাল নাথ বলেন, শিক্ষার ক্ষেত্রে মুসলিম মেয়েরা এখনও অনেকটা পিছিয়ে রয়েছে৷ মুসলিম মেয়েদের মধ্যে শিক্ষার প্রসার ঘটাতে রাজ্য সরকার ব্যাপক উদ্যোগ গ্রহণ করেছে৷
সবকা সাথ সবকা বিকাশ এই ভাবনাকে বাস্তবায়ন করতে রাজ্য সরকার কাজ করছে৷ তিনি বলেন, ধর্ম যার যার, উন্নয়ন সবার৷ শিক্ষা-দীক্ষায় সকল সম্প্রদায়কে সমানভাবে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে৷ তিনি বলেন, সাক্ষরতার হিসেবে রাজ্য এগিয়ে গেলেও মাত্র ৮২ শতাংশ মুসলিম সাক্ষর জ্ঞান সম্পন্ন৷ মাদ্রাসাগুলিতে ধর্মীয় শিক্ষার পাশাপাশি বাংলা, অংক, ইংরেজি, বিজ্ঞান, ইতিহাস, ভূগোল প্রভৃতি বিষয়ে শিক্ষাদানের উপরও তিনি গুরুত্ব আরোপ করেন৷ পাশাপাশি গুণগতমান সম্পন্নপ্রকৃত শিক্ষার উপর তিনি জোর দেন৷ বর্তমানে রাজ্যে ১৪ হাজার ১৪২টি শিক্ষকের পদ খালি থাকলেও যোগ্যতা সম্পন্ন প্রার্থী পাওয়া যাচ্ছে না৷ ২১০ জন মুসলিম ছাত্র-ছাত্রীকে সম্প্রতি সরকারি ব্যবস্থাপনায় বিএড, ডিএল এড কোর্সে পড়াশোনাির সুযোগ তৈরি করে দিয়েছে রাজ্য সরকার৷ ১১৯টি বিদ্যালয়ে অতিরিক্ত শ্রেণী কক্ষ নির্মাণ সহ বেশ কিছু সুকলবাড়ি নির্মাণ করা হচ্ছে৷ মুসলিম ছাত্র-ছাত্রীদের উৎসাহিত করতে বৃত্তি সহ বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা প্রদান করা হচ্ছে৷ আগামী তিন বছরের মধ্যে রাজ্যকে দেসেড মধ্যে বিশেষ স্থানে নিয়ে যাওয়ার উদ্যোগ রয়েছে রাজ্য সরকারের৷ আজকের অনুষ্ঠান থেকে মুসলিম মায়েরা অনুপ্রাণিত হবেন এবং ছেলে মেয়েদের শিক্ষার প্রসারে উদ্যোগী হবেন বলে শিক্ষামন্ত্রী আশা প্রকাশ করেন৷ ছেলে মেয়েদের প্রকৃত শিক্ষায় শিক্ষিত করে তোলার প্রতিজ্ঞা নিতে তিনি মা-বোনদের প্রতি আবেদন জানান৷
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি বিধায়ক সুভাষচন্দ্র দাস বলেন, শিক্ষা ছাড়া উন্নয়ন সম্ভব নয়৷ মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষ শিক্ষাক্ষেত্রে এখনও অনেক পিছিয়ে রয়েছে৷ তাদের সামগ্রিক উন্নয়নে রাজ্য সরকার বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে৷ অনুষ্ঠানের সভাপতি মুসলিম ছেলে মেয়েদের শিক্ষার প্রসারে রাজ্য সরকারের বিভিন্ন পরিকল্পনার উল্লেখ করে তা বাস্তবায়নে সকলের সহযোগিতা কামনা করেন৷ অনুষ্ঠানে স্বাগত ভাষণ রাখেন জেলা শিক্ষা আধিকারিক বাবুল লোধ৷ আজকের এই সচেতনতামূলক আলোচনাসভায় মুসলিম মা-বোনদের উপস্থিতি ছিলো উল্লেখ করার মতো৷