নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ৯ নভেম্বর৷৷ এখন থেকে বাজার খোলা থাকবে প্রতিদিন৷ শর্তাধীন মঞ্জুরি দিল রাজ্য মন্ত্রিসভা৷ তাতে, শনিবার অর্ধদিবস এবং রবিবার পূর্ণদিবস দোকান বন্ধ রাখার বহু পুরনো নিয়ম প্রত্যাহার করেছে রাজ্য সরকার৷ কিন্তু, কাজের বিনিময়ে কর্মীদের বাড়তি বেতন দেওয়ার বিধান রয়েছে আইনে৷ মূলত, স্থানীয় জনগণ এবং পর্যটকদের সুবিধার জন্যই রাজ্য সরকার এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে যুক্তি শিক্ষামন্ত্রী রতন লাল নাথের৷
শুক্রবার সচিবালয়ে সাংবাদিক সম্মেলনে শিক্ষামন্ত্রী রতন লাল নাথের বক্তব্য, গত ৫ নভেম্বর মন্ত্রিসভার বৈঠকে ত্রিপুরা শপস্ এন্ড এস্টাব্লিসমেন্ট অ্যাক্ট-১৯৭০’র সংশোধনীর অনুমোদন দেওয়া হয়েছে৷ ফলে, এখন থেকে প্রতি শনিবার অর্ধ দিবস এবং রবিবার পূর্ণ দিবস দোকান বন্ধ রাখা বাধ্যতামূলক নয়৷ দোকানদার ইচ্ছে করলে তাঁর দোকান খোলা রাখতে পারেন৷ কিন্তু, এক্ষেত্রে কর্মচারীদের স্বার্থেরও খেয়াল রাখা হয়েছে, দাবি করেন তিনি৷ তাঁর কথায়, দোকান খোলা রাখলে বাড়তি কাজের জন্য অতিরিক্ত বেতন কিংবা সমপরিমান ছুটি দিতে হবে কর্মচারীকে৷
শিক্ষামন্ত্রীর দাবি, পুরনো নিয়মে সাধারণ জনগণের প্রচন্ড অসুবিধা হচ্ছিল৷ বিশেষ করে পর্যটকদের বেশি অসুধিবার সম্মুখীন হতে হতো৷ তাই, রাজ্য সরকার পর্যটক এবং সাধারণ জনগণের স্বার্থে এই আইন সংশোধন করে আইনের ৫ নং ধারাতে দোকান বন্ধ রাখার যে আইন ছিল তা তুলে দেওয়া হয়েছে৷ ফলে, এখন থেকে ওই দেড়দিন কোন দোকানদার যদি দোকান খোলা কিংবা বন্ধ রাখেন তাহলে সেটা সম্পূর্ণ তার নিজস্ব সিদ্ধান্ত৷ তাতে সরকারের কিছু করার থাকবে না৷ তবে, ওই দেড়দিন দোকান খোলা থাকলে শ্রমিকদের জন্য ছুটির সংস্থান বাধ্যতামূলক করার ব্যবস্থা রয়েছে এই সংশোধীত আইনে৷
শিক্ষামন্ত্রীর কথায়, ১৯৭০ সালের এই আইনে ইতিপূর্বে তিনটি সংশোধনী আনা হয়েছে৷ এখন চতুর্থ সংশোধনীতে মন্ত্রিসভা অনুুমোদন দিয়েছে৷ কেন্দ্রীয় সরকার এ সংক্রান্ত কেন্দ্রীয় আইন সমস্ত রাজ্যকে পাঠিয়েছে৷ সে মোতাবেক কেন্দ্রের আইন হুবহু বাস্তবায়নের বদলে ওই আইনের ১০ নং ধারা গ্রহণ করেছে রাজ্য সরকার৷ সে মোতাবেক এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে৷ এদিন তিনি বলেন, সংশোধীত আইনে কোনও দোকানদার কোনও শ্রমিককে দিয়ে দৈনিক আট ঘন্টার বেশি কাজ করাতে পারবেন না৷ কোনও একটি নির্দিষ্ট দিনে কোনও শ্রমিককে ১০ ঘন্টা কাজ করানো হলে অতিরিক্ত দুই ঘন্টার জন্য ওই শ্রমিককে দ্বিগুণ মজুরি প্রদান করতে হবে৷ সাথে তিনি যোগ করেন, যদি কোনও দোকানদার শ্রমিকদের প্রতি সপ্তাহে দেড়দিনের ছুটি না দিয়ে থাকেন তাহলে আগামী দুই মাসের মধ্যে ওই ছুটি এডজাস্ট করে নিতে হবে৷ তাছাড়া কোনও দোকান দুই শিফটে খোলা রাখলে কোন শিফটে কোন শ্রমিক কাজ করবে তা শ্রম দপ্তরকে জানাতে হবে৷
এদিন শিক্ষামন্ত্রী আরও জানান, রাজ্যের বিভিন্ন স্থানে বেকার যুবকরা কমন সার্ভিস সেন্টারের মাধ্যমে জনগনকে যে অনলাইন দরখাস্ত পূরণের মাধ্যমে ২৩টি বিভিন্ন পরিষেবা প্রদান করছে সেই পরিষেবার মূল্য বৃদ্ধি করার অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা৷ এই ২৩ ধরনের সার্ভিসের মধ্যে ৪টি পরিষেবার মূল্য ১০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১২ টাকা করা হয়েছে৷ এছাড়া ফুল লাইসেন্স, ল্যান্ড ভ্যালুয়েশন সার্টিফিকেট, গান লাইসেন্স রিনুয়্যাল ইত্যাদি চার ধরণের পরিষেবার মূল্য ২০ টাকা করা হয়েছে এবং এসটি, এসসি ও বিসি, স্পম সেভিংস এজেন্সির লাইসেন্স ইত্যাদি সহ বাকি ১৫টি পরিষেবার মূল্য ৩০ টাকা করার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে৷