বেঙ্গালুরু, ১০ নভেম্বর (হি.স.) : টিপু সুলতান জয়ন্তীকে ঘিরে প্রবল উত্তেজনা ছড়াল কর্ণাটকে। শনিবার সাড়ম্বরে রাজ্য সরকারের তরফ থেকে টিপু সুলতানের জন্ম জয়ন্তী পালন করা হয়। এর প্রতিবাদে রাজপথে নেমে বিক্ষোভ দেখাতে থাকে বিজেপি কর্মীরা। পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার জন্য মোতায়েন করা হয় বিশাল পুলিশবাহিনী। রবিবার বর্ষীয়ান বিজেপি নেতা তথা কর্ণাটকের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বি এস ইয়েদুরাপ্পা আগেই জানিয়ে দিয়েছিল টিপু সুলতান জয়ন্তীর বিরোধিতা করবে। পাশাপাশি তিনি প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি এপিজে আব্দুল কালামের জন্ম জয়ন্তী পালনের পক্ষে সওয়াল করেছিলেন। এদিন কোডাগু জেলায় তিন বিজপি বিধায়কসহ একশোর বেশি বিজেপিকর্মীদের আটক করা হয়।
পরিস্থিতির আগাম আঁচ করতে পেরে কোডাগু সহ রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় ১৪৪ ধারা জারি করেছিল প্রশাসন। কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে এদিন টিপু সুলতান জয়ন্তী পালিত করে রাজ্য সরকার। রাজধানী বেঙ্গালুরুর বিধানসভা (বিধানসৌধ)-র ব্যাঙ্কুয়েট হলে কংগ্রেস-জেডি(এস) জোট সরকার সাড়ম্বরে টিপু সুলতান জয়ন্তী পালন করেছে। আমন্ত্রণ ছাড়া বিধানসভা ঢোকা নিষেধ ছিল। এমনকি সংবাদ সংগ্রহ করতে যাওয়া সাংবাদিকদের উপরও কড়াকড়ি করা হয়। কিন্তু এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন না মুখ্যমন্ত্রী এইচ ডি কুমারস্বামী। ফলে জল্পনা সূত্রপাত হয়েছে। যদিও প্রশাসনের তরফ থেকে জানানো হয়েছ চিকিৎসকের পরামর্শে তিনদিনের বিশ্রাম নিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। মাইসোরের কাছে পরিবারকে নিয়ে রয়েছেন তিনি। বিধানসভায় টিপু জয়ন্তী উদযাপনের দায়িত্বে ছিলেন উপ-মুখ্যমন্ত্রী জি পরমেশ্বর।
এদিন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা কংগ্রেস নেতা সিদ্দারামাইয়াকে রুপোর তলোয়ার উপহার দিয়ে সম্মানিত করেন রাজ্যের মন্ত্রী জামির আহমেদ খান এবং অন্যান্য মুসলিম নেতারা। টিপু জয়ন্তী উদযাপনে পক্ষে সওয়াল করার পাশাপাশি উদযাপনেরও উদ্যোগ নিয়েছিলেন সিদ্দারামাইমা। তাই তাঁকে সম্মানিত করা হল।
বেঙ্গালুরু ছাড়াও রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় কঠোর পুলিশি নিরাপত্তার মধ্যে টিপু জয়ন্তী পালন করা হয় সরকারী উদ্যোগে। কোডাগু জেলার বিরাজপেটে বিজেপি বিধায়ক কে জি বোপাইয়া দলীয় কর্মীদের নিয়ে বিক্ষোভ দেখাতে গেয়ে তাকে আটক করা হয়। মাদেকেরিতে বিধানপরিষদের বিধায়ক তথা বিজেপি নেতা সুনীল সুব্রাহ্মনিয়ামকে বিক্ষোভ দেখানোর দায়ে আটক করা হয়। একই কারণে আপুচা রঞ্জনকে আটক করে পুলিশ। এদিন কোডাগুতে কালো পতাকা দেখিয়ে বিক্ষোভ দেখায় বিজেপিকর্মীরা। রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধেও স্লোগান দিতে থাকে বিজেপিকর্মীরা।
উল্লেখনীয়, ২০১৫ সালে কোডাগু জেলায় টিপু জয়ন্তী নিয়ে ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। বিজেপির তরফ থেকে দাবি করা হয় টিপু সুলতান একজন ধর্মান্ধ ছিলেন। কেরল এবং কর্ণাটকে নির্মম ভাবে বহু হিন্দুদের তিনি হত্যা করেছিলেন।